নায়ক: ওপেনার হিসেবে প্রথম টেস্টেই বাজিমাত রোহিতের। দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি। অভিনন্দন জাডেজার। এএফপি
টেস্টে ওপেনার হিসেবে অভিষেক ম্যাচ থেকেই দুরন্ত গতিতে ছুটতে শুরু করেছেন রোহিত শর্মা। ২০১৯ বিশ্বকাপের ছন্দ বজায় রেখেছেন টেস্ট বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপেও। প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রান করে থেমে যায়নি রোহিতের ব্যাট। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৯ বলে ১২৭ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে গেলেন বিশাখাপত্তনমের সমর্থকদের। তাঁর স্ট্রাইক রেট ৮৫.২৩। খারাপ হতে থাকা পিচে এমন ধ্বংসাত্মক ব্যাটিং আবারও মনে করিয়ে দিতে পারে সহবাগকে।
এই প্রথম কোনও ব্যাটসম্যান ওপেনার হিসেবে অভিষেক ম্যাচের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করলেন। ভারতীয় হিসেবে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির তালিকায় তিনি ষষ্ঠ স্থানে। এখানেই থেমে যাননি রোহিত। এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ছয়ের মালিকও হয়ে গেলেন তিনি। কেশব মহারাজ, সেনুরান মুতুস্বামীদের বিরুদ্ধে ১৩টি ছয় এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে।
শনিবার চতুর্থ দিনের পিচে শুরু থেকেই অনেকটা করে ঘুরতে শুরু করেছিল বল। যার ফায়দা তুলে সাত উইকেট নিয়ে প্রথম ইনিংস শেষ করেন অশ্বিন। ৪৩১ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হওয়ার পরে অনেকেরই মনে হয়েছিল, ভারতকেও কঠিন পরীক্ষায় ফেলবে কেশব-মুতুস্বামী জুটি। কিন্তু তাঁদের স্পিন নির্বিষ করার জন্য সুইপকেই অস্ত্র করে নিলেন রোহিত। পিচে বল পড়ে ঘোরার আগেই হাঁটু গেড়ে বসে স্কোয়ার লেগ, মিড উইকেট অঞ্চলে পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন রোহিত। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করতে থাকেন চেতেশ্বর পুজারা (৮১)। দ্রুত রান তুলতে করতে হবে, এমন পরিস্থিতিতে পূজারা শুরুতে থিতু হতে সময় নেন। সেই সময় রোহিত আগ্রাসী ব্যাটিং করছিলেন বলে চাপ বাড়েনি। না হলে বিরাট কোহালির ডিক্লেয়ার করতে আরও সময় লাগতে পারত। এর পর অবশ্য পূজারাও হাত খুলতে থাকেন এবং দু’টি ছক্কাও মারেন। রোহিত এবং পূজারা জুটিই ফ্যাফ ডুপ্লেসিদের নাগালের বাইরে নিয়ে চলে যায় ম্যাচ।
অফস্পিনার ডেন পিয়েডকে রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে বল করার নির্দেশ দেন ডুপ্লেসি। যাতে সুইপ মারতে গিয়ে ভুল করানো যায় রোহিত এবং পুজারাকে। কিন্তু সেই রণনীতিও কাজ দেয়নি। অফস্পিনারকে স্টেপ আউট করে একের পর এক বল বাউন্ডারির দিকে পাঠাতে শুরু করলেন হিটম্যান। ডুপ্লেসি বাধ্য হলেন, অফস্পিনার সরিয়ে ফিল্যান্ডারকে ফিরিয়ে আনতে।
পুজারার নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিং ও রোহিতের বিধ্বংসী ইনিংসের সৌজন্যেই ৩২৩-৪ তুলে ডিক্লেয়ার করে ভারত। বিপক্ষের সামনে ৩৯৫ রানের লক্ষ্য দেয় তারা। চতুর্থ দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ১১-১। প্রথম ইনিংসে ভারতীয় স্পিনারদের বিরুদ্ধে যিনি ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, সেই ডিন এলগার দ্বিতীয় ইনিংসে ফিরে গেলেন মাত্র দুই রানে। ক্রমশ খারাপ হতে থাকা পিচে জাডেজার বল নীচু হয়ে এলবিডব্লিউ হলেন তিনি। এলগারের আউট দক্ষিণ আফ্রিকার রাস্তা আরও কঠিন করে দিয়েছে এবং একই সঙ্গে ভারতীয়দের উৎসাহিত করেছে। বোঝাই যাচ্ছে, পিচে অসমান বাউন্স এসে গিয়েছে এবং ঘুরছেও। উইকেটে একাধিক ফাটল তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি রক্ষা না করলে গোটা একটা দিন ধরে এমন বাইশ গজে অশ্বিন-জাডেজা স্পিন জুটির বিরুদ্ধে রক্ষা পাওয়া কঠিনতম পরীক্ষা। যদিও অতিথিদের হাতে এডেন মার্করাম, ফ্যাফ ডুপ্লেসি এবং প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা কুইন্টন ডি’ককের মতো ব্যাটসম্যানেরা রয়েছে এবং ভুলে গেলে চলবে না, ক্রিকেট এক মহান অনিশ্চয়তার খেলা।
বিশাখাপত্তনমে চতুর্থ দিনে অবশ্য নজর কেড়ে নিয়েছে আরও একটি ঘটনা। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের ২৬তম ওভারে খুচরো রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয় রোহিত ও পুজারার মধ্যে। কভার-পয়েন্ট অঞ্চলে বল ঠেলে রান নিতে চেয়েছিলেন রোহিত। ক্রিজ থেকে অনেকটা বেরিয়ে আসার পরে তাঁকে ফিরিয়ে দেন পুজারা। স্টাম্প মাইক্রোফোনে ধরা পড়ে পুজারাকে ভর্ৎসনা করছেন রোহিত। সঙ্গে ছাপার অযোগ্য শব্দ। যদিও উত্তপ্ত কিছু ঘটেনি মাঠে। টুইটারে সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ায় আলোড়ন তৈরি হয়। বেন স্টোকস টুইট করেন, ‘‘এ বার বিরাট নয় রোহিত। যারা বোঝার তারা নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছে।’’
আসলে, যে আপত্তিকর শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন রোহিত (আগে করেছেন বিরাট), তার উচ্চারণ বেন স্টোকস নামটির সঙ্গে দারুণ মেলে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy