(বাঁ দিকে) এই ফ্রিজ থেকেই পিঙ্কি প্রজাপতির (ডান দিকে) দেহ উদ্ধার হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
কয়েক দিন ধরে পচা গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছিল এলাকায়। কোনও প্রাণী মরেছে ভেবে অনেকেই খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু কোনও হদিস মেলেনি। তবে গন্ধটা আরও তীব্র হওয়ায় এলাকাবাসীদের কয়েক জন সেই গন্ধের উৎস খোঁজার কাজে নেমে পড়েছিলেন। সেই উৎস খুঁজতে গিয়েই তাঁরা পৌঁছে যান পাড়ারই একটি বাড়ির ভাড়াটের ঘরে। যত সেই বাড়ির দিকে এগোচ্ছিলেন, গন্ধটা ততই তীব্রতর হচ্ছিল। অথচ সেই বাড়িতে পৌঁছে দেখেন বাইরে থেকে তালা মারা রয়েছে ঘরের দরজায়। ফলে সন্দেহ জাগে এলাকাবাসীদের মনে। তাঁরা পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে দরজা ভাঙে। ঘরের ভিতরে ঢুকতেই চমকে ওঠে তারা। অগোছালো ঘর। কোণে রাখা একটা ফ্রিজ। আর গন্ধটা আসছিল সেখান থেকেই। ফ্রিজ খুলতেই দেখা যায়, মহিলার পচাগলা দেহ। দলা পাকিয়ে রাখা সেই দেহ। গলার সঙ্গে দড়ি দিয়ে হাত-পা বাঁধা। এই দৃশ্য দেখে শিউরে ওঠেন স্থানীয়েরা। শাড়ি, গয়না পরানো অবস্থায় সেই দেহ উদ্ধার হয়। মধ্যপ্রদেশের দেওয়াসের ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, এই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সঞ্জয় পতিদার নামে এক ব্যক্তি। বাড়ির মালিক থাকতেন না। পুরো বাড়িটাই ভাড়া নিয়েছিলেন সঞ্জয়। তাঁর সঙ্গে এক মহিলা থাকতেন। পড়শিদের কাছে সঞ্জয় সেই মহিলাকে নিজের স্ত্রী বলে পরিচয় দিতেন। নাম পিঙ্কি প্রজাপতি। উজ্জয়িনীর বাসিন্দা সঞ্জয়। তিনি বিবাহিত। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে দেওয়াসে পিঙ্কির সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে থাকা শুরু করেন। স্থানীয়দের দাবি, মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতেন। তার পর গত বছরের জুন থেকে সঞ্জয়ের আসা বন্ধ হয়ে যায়। পিঙ্কিকেও পড়শিরা আর দেখতে পাচ্ছিলেন না। কিন্তু তা নিয়ে তাঁরা আর বেশি মাথা ঘামাননি।
পুলিশ জানতে পেরেছে, ২০২৩ সালে সঞ্জয়কে বাড়িটি ভাড়া দিয়েছিলেন ধীরেন্দ্র শ্রীবাস্তব। তিনি হনদওরে থাকতেন। গত বছরেই নতুন একটি ভাড়া আসার কথা ছিল ওই বাড়িতে। ধীরেন্দ্র সঞ্জয়ের পাশের ঘরটি দেখান। কিন্তু যে ঘরটি বন্ধ ছিল সেটি দেখাননি। ধীরেন্দ্রর দাবি, সঞ্জয়ের কিছু জিনিসপত্র থাকায় তিনি ওই ঘরে হাত দিতে চাননি। ফলে ঘরটি বন্ধ অবস্থাতেই পড়ে ছিল। অনেক দিন হয়ে যাওয়ায় সঞ্জয় না আসায় সম্প্রতি বাড়ির বিদ্যুৎও বন্ধ করে দিয়ে গিয়েছিলেন ধীরেন্দ্র। ফলে ফ্রিজের ভিতরে রাখা পিঙ্কির দেহে পচন ধরা শুরু করে। ধীরে ধীরে সেই গন্ধ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিয়ের জন্য সঞ্জয়কে চাপ দিচ্ছিলেন পিঙ্কি। তার জেরেই কি খুন? না কি নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে অভিযুক্ত সঞ্জয়কে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মহিলার দেহ দেখে অনুমান করা হচ্ছে গত বছরের জুন নাগাদ খুন করা হয়েছে তাঁকে। তার পর ফ্রিজের মধ্যে দেহ ঢুকিয়ে রাখায় দেহে পচন ধরেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy