সংঘাত ভুলে ফের একসঙ্গে সুভাষ ভৌমিক ও খালিদ জামিল। শনিবার সকালে অনুশীলনে। নিজস্ব চিত্র
সুখী পরিবার!
খালিদ জামিলের কাঁধে হাত রেখে কখনও কথা বলছেন সুভাষ ভৌমিক। কখনও আবার খালিদ নিজেই এগিয়ে গেলেন আসিয়ানজয়ী কোচের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে।
কলকাতার আবহাওয়ার মতো হঠাৎ করেই যেন শনিবার সকালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে বদলে গিয়েছিল লাল-হলুদ অন্দরমহলের দৃশ্য। কে বলবে ২৪ ঘণ্টা আগেও সুভাষ ও খালিদ ছিলেন সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (টিডি) ও কোচের সংঘাতে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি।
সুপার কাপের প্রস্তুতি হিসেবে এ দিন নিজেদের অ্যাকাডেমির দলের বিরুদ্ধে ৭০ মিনিটের ম্যাচ খেলল ইস্টবেঙ্গল। প্রথমার্ধে কোচ ছিলেন সুভাষ। আর দ্বিতীয়ার্ধে খালিদ! অ্যাকাডেমির খুদে ফুটবলাররা দুরন্ত খেলে প্রথমার্ধে আটকে দিয়েছিল ডুডু ওমাগবেমি, কাতসুমি ইউসা-কে নিয়ে গড়া টিডি-র দলকে। আর রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলারদের নিয়ে খালিদ মাঠ ছাড়লেন ম্যাচ জিতে। একমাত্র গোলটি করেন গ্যাব্রিয়েল ফার্নান্দেজ। খালিদ ১ সুভাষ ০!
যে স্কোরলাইন দেখে লাল-হলুদ শিবিরের কেউ কেউ তো রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে যে ভাবে টিডি-কে হারালেন কোচ, তাতে না ফের দু’জনের মধ্যে সংঘাত বেধে যায়। তা অবশ্য হয়নি। উল্টে খালিদকে সন্তানসম বলে সুভাষের ব্যাখ্যা, ‘‘আমার বড় ছেলে বেঁচে থাকলে খালিদের চেয়ে এক বছরের বড় হতো। ওর সঙ্গে আমি কী ঝগড়া করব? খালিদকে নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই। ওর তরফে হয়তো একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এখন সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।’’ তা হলে কেন খালিদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন? ইস্টবেঙ্গল টিডি-র কথায়, ‘‘টানা পাঁচ দিন খালিদ আমাকে অপেক্ষা করিয়েছিল। ফোনও ধরেনি। সেই কারণেই মাত্র এক দিন আমি হুঙ্কার দিয়েছিলাম।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘খালিদ তো কখনও প্রকাশ্যে আমাকে অপমান করেনি। তাই ওর উপরে আমার রাগও নেই।’’
সুভাষ মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরে খালিদ এ দিন ফের বললেন, ‘‘সুভাষদা ও আমি দু’জনেই ইস্টবেঙ্গলের ভাল চাই। ওঁর মতো অভিজ্ঞ কোচের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। তাই আমরা একসঙ্গেই কাজ করতে চাই।’’ সেই সঙ্গে আগামী মরসুমের দলগঠনের ভাবনা-চিন্তাও শুরু করে দিয়েছেন খালিদ। শনিবার যুবভারতীতেই অনুশীলনের পরে ক্লাবের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন লাল-হলুদ কোচ। কয়েক দিনের মধ্যেই আগামী মরসুমের জন্য ফুটবলারদের নামের তালিকা ক্লাব কর্তাদের দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে খালিদের।
অনুশীলন ম্যাচে খালিদের কোচিংয়ে ইস্টবেঙ্গলের রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলার জিতলেন। অথচ ডুডু, আমনা-রা থাকা সত্ত্বেও গোলশূন্য ড্র করল সুভাষের দল। লাল-হলুদ টিডি অবশ্য জানিয়ে দিলেন, ম্যাচের ফল নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নন। বললেন, ‘‘আমি দেখতে চেয়েছিলাম, বলের দখল ছেলেরা রাখতে পারছিল কি না। ওদের পারফরম্যান্সে আমি দারুণ খুশি। দুই অর্ধ মিলিয়ে ৯২ শতাংশ বল আমাদের দখলে ছিল।’’ সুভাষ উচ্ছ্বসিত কেভিন লোবো-কে নিয়েও। বললেন, ‘‘লোবো আক্রমণ তৈরি করার পাশাপাশি, বিপক্ষের ফুটবলারদের পা থেকে বল কেড়ে নিচ্ছে। আমার তো এটাই প্রাপ্তি।’’
রবিবারও ইস্টবেঙ্গল অ্যাকাডেমি দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন অর্ণব মণ্ডলরা। সুপার কাপ খেলতে সোমবার ভুবনেশ্বর রওনা হওয়ার কথা ইস্টবেঙ্গলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy