Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Thomas Cup

Thomas Cup: বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে তেরঙার দাপট, কী ভাবে টমাস কাপ জিতল ভারত

অলিম্পিক্স, এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমস, বিশ্ব ব্যাডমিন্টন — সব জায়গায় পদক থাকলেও এই একটি প্রতিযোগিতায় কিছুতেই দাপট দেখাতে পারছিল না ভারত। সেই অভাব মিটে গেল রবিবার। প্রথম বার ফাইনালে উঠেই চ্যাম্পিয়ন হল তারা। রবিবার ব্যাঙ্ককের নোনথাবুড়ির ইম্প্যাক্ট অ্যারেনাতে ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিল ১৪ বারের বিজয়ী ইন্দোনেশিয়াকে।

বিশ্বসেরা ভারত।

বিশ্বসেরা ভারত। ছবি টুইটার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২২ ১৫:৫০
Share: Save:

টমাস কাপে ইতিহাস গড়ে ফেলল ভারত। প্রথম বার ফাইনালে উঠেই চ্যাম্পিয়ন হল তারা। রবিবার ব্যাঙ্ককের নোনথাবুড়ির ইম্প্যাক্ট অ্যারেনাতে ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিল ১৪ বারের বিজয়ী ইন্দোনেশিয়াকে। কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে কষ্ট করে জিততে হয়েছিল ভারতকে। কিন্তু ফাইনালের ভারতের কোনও খেলোয়াড়কেই আটকানো যায়নি। প্রথম তিনটি ম্যাচে জিতে ট্রফি নিশ্চিত করে ফেলে ভারত। বিশ্বের প্রথমে দশে ইন্দোনেশিয়ার খেলোয়াড়রা রয়েছেন। তাঁদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে নিল ভারত। ভারতের দলগত ব্যাডমিন্টনের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে সবথেকে বড় কীর্তি এটাই।

একটা সময় ছিল যখন ভারতকে টমাস কাপের যোগ্যতা অর্জন করতেই অনেক কষ্ট করতে হত। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই ছবিটা বদলেছিল। কিন্তু সাফল্য কোনও বারই ধরা দিচ্ছিল না। ইন্দোনেশিয়া, জাপান, চিন — ব্যাডমিন্টনের ‘বড়দা’দের কাছে কুলীন হয়েই থাকতে হচ্ছিল ভারতকে। কিন্তু এ বার কিদম্বি শ্রীকান্ত, লক্ষ্য সেনরা দেখিয়ে দিলেন, তাঁরাও কোনও অংশে কম নন। অলিম্পিক্স, এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমস, বিশ্ব ব্যাডমিন্টন — সব জায়গায় পদক থাকলেও এই একটি প্রতিযোগিতায় কিছুতেই দাপট দেখাতে পারছিল না ভারত। সেই অভাব মিটে গেল এ দিন।

কী ভাবে এ বার সোনা জিতল ভারত?

নিয়ম অনুযায়ী টমাস কাপে ১৬টি দেশকে চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। ভারত পড়েছিল গ্রুপ সি-তে, কিছুটা সহজ গ্রুপেই। তাদের প্রতিপক্ষ ছিল জার্মানি, কানাডা এবং চিনা তাইপেই। শেষের প্রতিপক্ষই এদের মধ্যে কঠিন ছিল। জার্মানি এবং কানাডা দুই দেশকেই ৫-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় ভারত। তবে গ্রুপের শেষ ম্যাচে তাইপেইয়ের কাছে হারতে হয় ২-৩ ব্যবধানে। তবে প্রথম দুইয়ে শেষ করার সুবাদে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে অসুবিধা হয়নি ভারতের।

কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম প্রতিপক্ষই ছিল পাঁচ বারের বিজয়ী মালয়েশিয়া। সাধারণত সুপার সিরিজে মালয়েশিয়ার খেলোয়াড়রা ভারতীয়দের উপরে দাপট দেখিয়ে থাকেন। কিন্তু জাতীয় পতাকার জোর এমনই যে শ্রীকান্ত, প্রণয়রা বাড়তি তাগিদ নিয়ে নেমেছিলেন। প্রথম ম্যাচে লক্ষ্য সেন হেরে গেলেও চাপে পড়েনি ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে জয় এনে দেন ডাবলস জুটি সাত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডি এবং চিরাগ শেট্টি জুটি। তৃতীয় ম্যাচে কিদম্বি শ্রীকান্ত এগিয়ে দেন ভারতকে। কিন্তু চতুর্থ ম্যাচে হেরে যান ভারতের আর এক ডাবলস জুটি কৃষ্ণপ্রসাদ গর্গ এবং বিষ্ণুবর্ধন গৌড়। পঞ্চম ম্যাচে ভারতকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দেন এইচ এস প্রণয়। ৪৩ বছর সেমিফাইনালে ওঠে ভারত। পদক নিশ্চিত হয়।

কিন্তু সেখানেই শ্রীকান্তরা থেমে যেতে রাজি ছিলেন না। তাঁদের খিদে, জেদ দুটোই বেড়ে যায়। সেমিফাইনালে সামনে ছিল প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশি অংশ নেওয়া ডেনমার্ক, যে দলে ছিলেন টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী তথা এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় ভিক্টর অ্যাক্সেলসেন। লক্ষ্যকে প্রথম ম্যাচে উড়িয়ে দিয়ে অ্যাক্সেলসেন শুরুটাও করেছিলেন দুর্দান্ত। কিন্তু এ বারও ভারতকে সমতা ফেরান সাত্বিক-চিরাগরা। বিশ্বের তিন নম্বর অ্যান্ডার্স অ্যান্টনসেনকে উড়িয়ে ভারতকে এগিয়ে দেন শ্রীকান্ত। চতুর্থ ম্যাচে ডাবলসে আবার হারে ভারত। পঞ্চম ম্যাচে গোড়ালিতে ব্যথা নিয়েও রাসমাস জেমকেকে হারিয়ে ভারতের প্রথম বার ফাইনালে তুলে ইতিহাস তৈরি করেন প্রণয়।

ফাইনালে আর হতাশ করেননি লক্ষ্য। বিশ্বের ৯ নম্বর খেলোয়াড় প্রথম ম্যাচে হারিয়ে দেন বিশ্বের পাঁচ নম্বর অ্যান্টনি সিনিসুকা জিন্টিংকে। ডাবলসে মহম্মদ এহসান-কেভিন সঞ্জয় সাকামুলিয়োকে একটি ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে তিন সেটের দুর্দান্ত লড়াইয়ে হারিয়ে দেন সাত্বিক-চিরাগ জুটি। তৃতীয় ম্যাচে নেমেছিলেন শ্রীকান্ত। আশা-ভরসা ছিল তাঁর উপরেই। টানা তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জিতলেন শ্রীকান্ত। বিশ্বের আট নম্বর জোনাথন ক্রিস্টিকে হারালেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy