Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ইস্টবেঙ্গলের সভায় আজ ঝড়ের আশঙ্কা

সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সচিবের চিঠির প্রেক্ষিতে সুপার কাপ ও আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল খেলবে কি না, তা নিয়েই এই সভা হওয়ার কথা। কিন্তু এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে শুধু এই দু’টো বিষয়েই যে আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকবে না তা স্পষ্ট। ঝড় উঠবে জবি জাস্টিনের ক্লাব ছাড়া ও আই লিগে চেন্নাই সিটি এফসি বনাম মিনার্ভা এফসি ম্যাচে গড়াপেটার অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও পদক্ষেপ না করা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৪:৩৪
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গলের কার্যকরী সমিতির সভাকে কেন্দ্র করে উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে ময়দানে। এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে, লাল-হলুদ কর্তাদের সঙ্গে বিনিয়োগকারী সংস্থার মতপার্থক্য চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। আজ, সোমবার ক্লাব তাঁবুতে কার্যকরী সমিতির সভায় তা আরও প্রকট হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রবল।

সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সচিবের চিঠির প্রেক্ষিতে সুপার কাপ ও আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল খেলবে কি না, তা নিয়েই এই সভা হওয়ার কথা। কিন্তু এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে শুধু এই দু’টো বিষয়েই যে আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকবে না তা স্পষ্ট। ঝড় উঠবে জবি জাস্টিনের ক্লাব ছাড়া ও আই লিগে চেন্নাই সিটি এফসি বনাম মিনার্ভা এফসি ম্যাচে গড়াপেটার অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও পদক্ষেপ না করা।

আই লিগে ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য নির্ভর করছিল চেন্নাই বনাম মিনার্ভা ম্যাচের উপরেই। কারণ, শেষ ম্যাচে শুধু জিতলেই হত না এনরিকে এসকুয়েদা-দের। পয়েন্ট নষ্ট করতে হত চেন্নাইকে। শুরুতেই পিছিয়ে পড়লেও নাটকীয় ভাবে মিনার্ভাকে ৩-১ হারিয়ে লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় চেন্নাই। কিন্তু ম্যাচ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। পরে রিপোর্টে না লিখলেও ম্যাচ কমিশনার বি বালসুব্রহ্মণ্যম ও রেফারি অ্যাসেসর বিক্রমজিৎ পুরকায়স্থ ফেডারেশনে ই-মেল করে আই লিগের শেষ ম্যাচ নিয়ে সন্দেহের কথা জানান। তার পরেই তদন্ত শুরু করেন ইন্টিগ্রিটি অফিসার জাভেদ সিরাজ।

ইস্টবেঙ্গলের বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারা জানিয়েছিলেন, চেন্নাই-মিনার্ভা ম্যাচে গড়াপেটা হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করতে ভিডিয়ো রেকর্ডিং আইনজীবীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা সবুজ সঙ্কেত দিলে ফেডারেশনে অভিযোগ জানাবেন। চাঞ্চল্যকর তথ্য হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত নাকি আইনজীবীরা কিছু জানাননি! কার্যকরী সমিতির সদস্যদের প্রশ্ন, এক সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কেন আইনজীবীরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি?

জবির ক্লাব ছাড়ার প্রসঙ্গেও প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হতে পারেন তাঁরা। ২৭ ফেব্রুয়ারি আনন্দবাজারে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল, আগামী মরসুমে এটিকে-তে খেলবেন লাল-হলুদ স্ট্রাইকার। বিনিয়োগকারী সংস্থার তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, জবিকে নিয়ে ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এটিকে-তেই যাচ্ছেন তিনি। লাল-হলুদের অধিকাংশ কর্তাই জবিকে রাখতে মরিয়া ছিলেন। কারণ, আই লিগের দুটি ডার্বিতে গোল করে ইস্টবেঙ্গলের মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। তার পরেও কেন জবির মতো তারকাকে ছেড়ে দেওয়া হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলবেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। পাশাপাশি আগামী মরসুমে কারা খেলবেন তা নিয়েও অন্ধকারে রয়েছেন সকলে। সে বিষয়েও কিছুই ইঙ্গিত দেয়নি বিনিয়োগকারী সংস্থা।

সুপার কাপে না খেলা নিয়ে বিনিয়োগকারী সংস্থার সিদ্ধান্তও ক্ষুব্ধ সদস্য, সমর্থক, কর্তা থেকে প্রাক্তন ফুটবলারেরা। প্রত্যেকেই স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন, কোনও প্রতিযোগিতা থেকে নাম তুলে নেওয়া ইস্টবেঙ্গলের ঐতিহ্য বিরোধী। সূত্রের খবর, সভায় লাল-হলুদ কর্তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেবেন, সুপার কাপে তো বটেই, আগামী মরসুমে আইএসএলেও খেলবে ইস্টবেঙ্গল। সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী সংস্থা রাজি না হলে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। রবিবারও ইস্টবেঙ্গল কর্তারা এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছেন।

পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে অনুমান করে আসরে নেমে পড়েছেন বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারাও। রবিবার টুইটারে সমর্থকদের উদ্দেশে সংস্থার প্রধান কর্তা লিখেছেন, ‘‘যে ভাবে আপনারা সমর্থন করেছেন, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। ফেডারেশনের অদ্ভুত ই-মেল নিয়ে কিছু সদস্য রাজনীতি করছেন। আপনাদের সঙ্গে নিয়েই ক্লাবে পরিবর্তন আনতে চাই। ইস্টবেঙ্গলকে বিশ্বমানের ক্লাবে পরিণত করতে চাই।’’ যদিও সোমবারের সভায় তাঁর থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইস্টবেঙ্গল সদস্যদের একটি সংগঠনের তরফে পাল্টা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘লক্ষ লক্ষ সমর্থকদের আবেগ নিয়ে খেললে পরিণাম হবে ভয়ঙ্কর!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Football East Bengal Working Committee Meeting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE