আবেগ: ম্যাচের সেরা হার্দিককেঅভিনন্দন অধিনায়ক কোহালির। ফেসবুক
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির অবসরের পরে ভারতীয় দলের হয়ে রান তাড়া করার দায়িত্ব কে নেবে, তা নিয়েই ছিল উদ্বেগ। কিন্তু ক্রিকেট যে থেমে থাকে না। রবিবার সিডনিতে ভারত পেয়ে গেল পরিণত এক যোদ্ধাকে। তার নাম হার্দিক পাণ্ড্য। ২২ বলে ওর ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংসে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিল ভারত। মঙ্গলবার তৃতীয় ম্যাচে স্টিভ স্মিথদের হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগও তুলে দিল বিরাট কোহালির হাতে।
ভারতের এই জয়ে নায়ক হিসেবে কোনও একজনকে বেছে নেওয়া যাবে না। আমার মতে, হার্দিক জনপ্রিয় নায়ক হলেও জয়ে অবদান রেখেছে ছ’জন। বোলিংয়ে নতুন মুখ, বাঁ হাতি মিডিয়াম পেসার টি নটরাজন। আর ব্যাটিংয়ে দুই ওপেনার-সহ বিরাট, হার্দিক ও শ্রেয়স আয়ার। প্রত্যেকেই নিজেদের সেরাটা দিয়ে দলকে জেতাতে সাহায্য করেছে।
আরও পড়ুন: জিতে শীর্ষে মুম্বই, এখনও জয়ের মুখ দেখল না কিবুর কেরল
রবিবার টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠায় বিরাট। কোমরের চোটে কাবু অ্যারন ফিঞ্চের পরিবর্তে নেতৃত্বের দায়িত্ব নেওয়া ম্যাথু ওয়েড শুরুটাও দারুণ করে। কিন্তু নটরাজনের বৈচিত্রের সামনে অসহায় দেখাল ডার্সি শর্টকে। প্রথম ছয় ওভারের মধ্যে ভারতের প্রয়োজন ছিল একটি উইকেট। যা নটরাজন এনে দিল বাউন্সারে। ইয়র্কার বিশেষজ্ঞের হাতে যে এত ভাল বাউন্সারও আছে, তা কে জানত! চার ওভারে বাকিরা যেখানে গড়ে দশের আশেপাশে রান দিয়েছে, সেখানে নটরাজন চার ওভারে দিয়েছে ২০। উইকেট দু’টি। এই বোলিংয়ের জন্যই ১৯৪ রানে বিপক্ষকে আটকানো গিয়েছে। না হলে ২২০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যেতে পারত অস্ট্রেলিয়া।
আরও পড়ুন: ওয়ানডের বদলা টি-টোয়েন্টিতে, ১ ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ কোহালিদের
জবাবে ভারতীয় ওপেনারেরা প্রথম ১৬টি বলে অস্বস্তিতে ছিল। গতি পরিবর্তন হয় অ্যান্ড্রু টাইয়ের ‘নো-বল’ থেকে। ম্যাচের প্রথম ফ্রি-হিট মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেয় কে এল রাহুল। পরের ওভারে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে আক্রমণ করে ১৯ রান তোলে ভারত। পঞ্চম ওভারে শন অ্যাবট ভারতের রানের গতি বাড়াতে সাহায্য করে। ষষ্ঠ ওভারে রাহুল ফিরে গেলেও শিখর ধওয়নের সঙ্গে ৫৬ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত তৈরি করে দেয় ও। ‘চেজমাস্টার’ বিরাট কোহালির কাছে যা ছিল আদর্শ মঞ্চ।
এই পরিস্থিতি থেকে ম্যাচের হাল ধরার চেষ্টা করে ধওয়ন ও বিরাট। কিন্তু দুই লেগস্পিনার— মিচেল সোয়েপসন ও অ্যাডাম জ়াম্পার নিয়ন্ত্রিত বোলিং অধৈর্য করে তোলে ধওয়নকে। প্রথম ছয় ওভারে ভারত করে ৬৪ রান। পরের পাঁচ ওভারে হয় ৩১। জ়াম্পার বলে স্লগ সুইপে ব্যর্থ হয়ে ধওয়ন ফিরতেই পরিস্থিতি কঠিন হয়ে ওঠে ভারতের পক্ষে। তখন সঞ্জু স্যামসনকে নামিয়ে রানের গতি বাড়িয়ে নিতে চেয়েছিল ভারত। সঞ্জু কিন্তু ব্যর্থ নয়। ওর ১০ বলে ১৫ রানের ইনিংস গিয়ার পাল্টাতে সাহায্য করে বিরাটকে।
১৪তম ওভারে ১২০ রানে তিন উইকেট হারানোর পর থেকেই শুরু হয় আসল পরীক্ষা। এই সময়েই মনে হচ্ছিল, যদি ধোনির মতো কেউ থাকত, এই ম্যাচ অনায়াসে জিতত ভারত। কিন্তু আমরা নতুন ফিনিশারের উত্থান দেখলাম। বিরাটও নিজের কপিবুক ক্রিকেট থেকে বেরিয়ে এসে স্কুপের সাহায্যে গ্যালারিতে পাঠিয়ে দেয় টাইয়ের বল। কিন্তু ড্যানিয়েল স্যামসের স্লোয়ার বাউন্সার বিরাটের ব্যাট ছুঁয়ে কিপারের কাছে যেতেই ফের থমথমে হয়ে যায় ভারতীয় ড্রেসিংরুম।
হার্দিকের উপরে তখন পাহাড়-সমান চাপ। প্রথমত, সিরিজ জেতার লড়াই। দ্বিতীয়ত, নিজেকে ফিনিশার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পরীক্ষা। শেষ তিন ওভারে ৩৭ রান তো সহজ নয়। জ়াম্পার ওভারে মিডউইকেটের উপর দিয়ে মারা শ্রেয়সের ছয় ভারতকে ম্যাচে ফেরায়। একই ওভারে পয়েন্টের পাশ দিয়ে শ্রেয়সের স্কোয়ার কাট জেতার বিশ্বাস তৈরি করে হার্দিকের মধ্যেও। ১৯তম ওভারের প্রথম তিন বলে কোনও বাউন্ডারি না হওয়ার পরে ব্যাট বদলায় হার্দিক। নতুন ব্যাট দিয়ে পরের তিন বলে তোলে ৯ রান। শেষ ওভারে ১৪ রান যেন ছিল সময়ের অপেক্ষা। হার্দিকের মধ্যে তখন ধোনির উত্তরসূরি হয়ে ওঠার তাগিদ। একটি ছয় আছড়ে পড়ল লংঅন অঞ্চলে। দ্বিতীয় ছয় মিডউইকেট গ্যালারিতে। এ ভাবেই ছয় মেরে ম্যাচ জেতানো অভ্যাসে পরিণত করেছিলেন এক কিংবদন্তি। সেই পথে এক ধাপ এগোল হার্দিকও।
শেষ চারে মোহনবাগান: বেঙ্গল টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জের ফিরতি ডার্বিতেও মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলের। অনুষ্টুপ মজুমদারদের বিরুদ্ধে ৩৬ রানে হেরে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেল ইস্টবেঙ্গল। সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল মোহনবাগান। তাদের সঙ্গেই সেমিফাইনালে চলে গেল তপন মেমোরিয়াল, টাউন ক্লাব ও কালীঘাট। দ্বিতীয় ম্যাচে কাস্টমসকে চার উইকেটে হারায় কালীঘাট। ৪৭ বলে ৭৯ রান করেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy