তাঁর যোগ মূলত ফুটবল খেলা আর প্রশিক্ষণের সঙ্গেই। সেই ফুটবল কোচ সুভাষ ভৌমিককে ঘুষের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করল আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। সেখানকার বিচারক সিদ্ধার্থনাথ রায়চৌধুরী সোমবার সুভাষবাবুকে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৭ ও ১৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। এ দিনই অবশ্য জামিন পান ওই ফুটবল কোচ।
এ দিন বিচারকের এজলাসে হাজির ছিলেন সুভাষবাবু। দণ্ড ঘোষণার পরেই জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। দোষীকে এক লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি রাখার শর্ত দেন বিচারক। ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির নথিতে সই করেন সুভাষবাবু। তার পরেই জামিন মঞ্জুর হয়। আদালত-চত্বরে সুভাষবাবু বলেন, ‘‘আদালত আমার জামিন মঞ্জুর করছে।’’ তিনি এখন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কোচ। রাতে সুভাষবাবু বলেন, ‘‘জামিন পেয়েছি। ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলনে নামতে বা কোচিংয়ে কোনও বাধা নেই। উচ্চতর আদালতে কবে আবেদন করা হবে, আমার আইনজীবীই সেটা জানেন।’’
সুভাষবাবুর আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত জানান, ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উচ্চ আদালতে আবেদনের নথি বিশেষ আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই নথি জমা না-দিলে তাঁর মক্কেলের জামিন খারিজ হয়ে যাবে। ‘‘আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উচ্চ আদালতে আবেদন করছি,’’ বলেন সঞ্জয়বাবু।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালের ২ ডিসেম্বর দুপুরে কেন্দ্রীয় উৎপাদন শুল্ক বিভাগে সুপারিনটেন্ডেন্টের পদে কর্মরত সুভাষবাবুকে দেড় লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। সিবিআই সূত্রের খবর, সুভাষবাবু টাকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন বলে এক ব্যক্তি সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দক্ষিণ কলকাতার একটি অভিজাত ক্লাবের কাছে হাজির হন সিবিআই অফিসারেরা। সুভাষবাবু ওই এলাকায় গিয়ে অভিযোগকারীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরেই সিবিআই অফিসারেরা অকুস্থলে পৌঁছে যান। সুভাষবাবু দৌড়ে পালাতে থাকেন। তাঁর পিছনে ধাওয়া করেন সিবিআই অফিসার সমীর মজুমদার। কিছু দূর যাওয়ার পরেই তিনি অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন। সুভাষবাবু ওই অফিসারকে মারধর করেন বলেও অভিযোগ। ঘটনার পরে সুভাষবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান।
এ দিন অন্য একটি মামলায় সুভাষবাবুর দুই সহকর্মীকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। ২০০৫ সালের মার্চে দক্ষিণ কলকাতার একটি বহুতল আবাসন থেকে ঘুষ নেওয়ার সময় প্রদ্যোত রায়চৌধুরী ও বাসব সরকার নামে কেন্দ্রীয় উৎপাদন শুল্ক বিভাগের দুই সুপারিনটেন্ডেন্টকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে তথ্যপ্রমাণের অভাবে দুই অফিসারকেই বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে বলে আদালত সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy