সিন্ধুকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শুভেচ্ছা।
চার বছর আগে সাইনা নেহওয়ালকে পোডিয়ামে উঠতে দেখেছেন তিনি। দেখেছেন সাইনার মাথার উপর তেরঙ্গা উড়তে। মূহুতর্টাকে কিছুতেই ভুলতে পারেননি পি ভি সিন্ধু।
লন্ডন অলিম্পিক্সের সেই স্বপ্নের মুহুতর্টাকে আর এক বার জাগিয়ে তোলার জন্য বদ্ধপরিকর ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের ‘নতুন সাইনা’। চান নিজের র্যাকেটের দাপটে মুহূর্তটা আবার রোশনাই ছড়িয়ে দিক মাস খানেক পরেই রিওতে। ‘‘অলিম্পিক্সে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করাটাই বিরাট ব্যাপার। মাচর্পাস্টে ভারতীয় পতাকার সঙ্গে হাঁটাটা অসাধারণ মুহূর্ত। ওই স্পেশাল ব্যাপারটা উপভোগ করার জন্য উত্তেজনায় আমি এখন থেকেই ফুটছি,’’ মঙ্গলবার হায়দরাবাদ থেকে ফোনে বললেন সিন্ধু।
লন্ডন অলিম্পিক্সের সময় সিন্ধুর বয়েস ছিল মাত্র ১৭। চার বছর পর এখন অভিজ্ঞতার ঝুলি আরও সমৃদ্ধ হয়েছে হায়দরাবাদি তারকার। দু’বার সিন্ধু বিশ্ব ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপের পোডিয়ামে উঠেছেন। দু’বার হারিয়েছেন চিনের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন লি জুয়েরুই ও রুপোজয়ী ওয়াং ইহানকে। তাই অলিম্পিক্সের চ্যালেঞ্জ নিয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী তিনি। বললেন, ‘‘রিও আমার প্রথম অলিম্পিক্স। রিওতে আমি ভাল ফল করার জন্য আশাবাদী। সবাই আমাকে বলছে অলিম্পিক্স সব সময়ই আলাদা।’’ তবে চ্যালেঞ্জ নিতে গিয়ে নিজের উপর অতিরিক্ত চাপ দিতে চান না তিনি। ‘‘সব টুনার্মেন্টে যেমন খেলি সেই ভাবেই অলিম্পিক্সেও খেলতে চাই। কারণ অলিম্পিক্সের কথা ভেবে নিজের উপর আলাদা চাপ নিলে নিজের ছন্দটাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।’’
নীচে রিও যাত্রার আগে সানিয়া মির্জার সঙ্গে সলমন খান এবং এ আর রহমান। নয়াদিল্লিতে। ছবি : পিটিআই
কোর্টে নামার আগে প্রতিপক্ষের জন্য আলাদা স্ট্র্যাটেজি থাকে সিন্ধুর। ২০১২ চায়না মাস্টার্সে প্রথম বার তিনি লি জুয়েরুইকে হারানোর সময়ও ছিল। তার কিছুদিন আগেই জুয়েরুই অলিম্পিক্সে সোনা জিতে উঠেছেন। কিন্তু সিন্ধুর কাছে অলিম্পিক্সজয়ীকেও হার মানতে হয়েছিল। আর এই জয়ের পর থেকেই গোটা বিশ্ব সিন্ধুকে আলাদা চোখে দেখতে শুরু করে। ২০১৩ ও ২০১৪ বিশ্ব ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক জিতে অলিম্পিক্সে পদক জেতারও জোরালো দাবিদার হয়ে উঠেছেন সিন্ধু। গত বছর অক্টোবরে ডেনমার্ক সুপার সিরিজের ফাইনালে ওঠার পথে পরপর তিন নামি খেলোয়াড়— জু উইং, ওয়াং ইহান ও ক্যারোলিনা মারিনকে হারানোর কৃতিত্বও অলিম্পিক্সে সিন্ধুকে আলাদা আত্মবিশ্বাস দিতে পারে।
তবে সাফল্যের পাশাপাশি সামলাতে হয় চোট-আঘাতের কালো ছায়াও। সিন্ধুও ব্যতিক্রম নন। ডেনমার্কের দুরন্ত দৌড়ের পরই গোড়ালির চোটে প্রায় ছয় মাসের জন্য কোটের্র বাইরে চলে যান সিন্ধু। এখন অবশ্য তিনি পুরোপুরি ফিট। নিজের সেরা ফর্মেও আছেন।
সিন্ধুর এখনকার ফর্ম দেখে খুব খুশি তার কোচ গোপীচন্দ। হায়দরাবাদ থেকে এ দিন তিনি ফোনে বললেন, ‘‘রিওতে সাইনার পাশাপাশি পদক জেতার দিক থেকে ‘ডার্ক হর্স’ সিন্ধু। রিওতে ও যদি নিজের সেরাটা দিতে পারে, পদক জিততেই পারে।’’
তবে সিন্ধু জানেন মেয়েদের সিঙ্গলসের লড়াই সব সময়ই কঠিন। অবশ্য চিনা মেয়েরা আর আগের মত অপ্রতিরোধ্য নন। সাইনা নেহওয়াল-ক্যারোলিনা মারিন-রতচানক ইন্তানন-সিন্ধুদের জন্য চিনা খেলোয়াড়দের সেই দাপট আর নেই। অলিম্পিক্সেও তার প্রতিফলন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তার কারণ হিসাবে সিন্ধু বললেন ‘‘প্রত্যেকটি খেলোয়াড়ের খেলার মান আগের থেকে এখন অনেক বেড়ে গেছে। ফলে সকলেই এখন একে অন্যকে হারিয়ে দিচ্ছে। রিওতে তাই লড়াইটা বেশ জমবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy