সাব্বির আলির সঙ্গে কলকাতার হোটেলে ১৯৯০-এর ডিসেম্বরে।
বক্সিং রিংয়ের জাদুকর আদতে রিংয়ের বাইরেও ছিলেন বড় ম্যাজিশিয়ান!
ছাব্বিশ বছর আগে রিংয়ের বাইরের সেই জাদুকরকে দেখে বিস্ময় অবাক হয়ে গিয়েছিলেন সেই সময়কার মহমেডান কোচ। অবাক হয়ে গিয়েছিলেন রিংয়ের ভিতরের মানুষটার মুখোশটা খুলে যেতে।
১৯৯০, ডিসেম্বর মাস। যে সময় কলকাতায় এসেছিলেন ‘দ্য গ্রেটেস্ট’। শনিবার হায়দরাবাদ থেকে ফোনে মহম্মদ আলির সঙ্গে তাঁর সেই সাক্ষাতের কথাই শোনাচ্ছিলেন সাব্বির আলি। বললেন, ‘‘সে সময় আমি মহমেডানের কোচ। আলি এসেছিলেন কলকাতায়, দেখা করতে গিয়েছিলাম। আর সেই দেখার রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি।’’
দক্ষিণ কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে গিয়েছিলেন বক্সিংয়ের ঈশ্বরকে একবার সামনে থেকে দেখতে। ‘‘সে বার কলকাতায় শীতটা বেশ ভালই পড়েছিল। মনে আছে, সেই ঠান্ডাতেও আমি বেশ ঘেমে যাচ্ছিলাম। মহম্মদ আলির মতো বিশ্বসেরা ক্রীড়াবিদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলাম বলেই হয়তো একটু বেশি উত্তেজিত ছিলাম,’’ বলছিলেন সাব্বির।
অনর্গল বলে চলেছিলেন প্রাক্তন জাতীয় দলের কোচ, ‘‘উত্তেজনার সঙ্গে অবশ্য অল্প অল্প ভয়ও হচ্ছিল। ওঁর মতো অত বড় এক ব্যক্তিত্ব, শেষ পর্যন্ত দেখা করবেন তো আমার সঙ্গে! নানা রকম ভাবতে ভাবতে একটা সময়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম হোটেলে মহম্মদ আলির ঘরে।’’ রিংয়ের ভিতর আর বাইরের মানুষটা একেবারে আলাদা ছিলেন বলেই দাবি করেছেন সাব্বির। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁর ঘরে পৌঁছে সামনে যাঁকে পেলাম তিনি একেবারে মাটির মানুষ। ছ’ফুট তিন ইঞ্চির ডাকাবুকো এক বক্সার, যিনি বক্সিং রিং কাঁপাতেন, তিনি এত অমায়িক! আমার যাবতীয় ভয়, দ্বিধা সব উড়িয়ে দিয়ে আলি এসে হাত মেলালেন আমার সঙ্গে!’’ সে সময় আলি অসুস্থ। পার্কিনসন্স রোগে আক্রান্ত। তবে হাত-পা কাঁপলেও, একা একাই চলাফেরা করতে পারতেন। সেই অবস্থাতেও সাব্বির আলিদের ম্যাজিক দেখিয়েছিলেন তিনি। কী সেই ম্যাজিক? ‘‘বক্সিং রিংয়ের ভিতর ওঁর ম্যাজিকের কথা সবাই জানে। কিন্তু রিংয়ের বাইরেও যে তিনি এত ভাল জাদুকর সে দিন প্রথম জানলাম। কখনও রুমাল, কখনও ছোট ছোট বল, বক্সিংয়ের বিভিন্ন কারিকুরি— সব কিছু নিয়ে নানা মজার ম্যাজিক দেখিয়েছিলেন। শিখিয়েও দিয়েছিলেন।’’ এখনও সেই জাদুকরের সম্মোহন কাটিয়ে উঠতে পারেননি সাব্বির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy