স্বস্তি: অনুশীলনে র্যামোস। এল ক্লাসিকোয় বার্সেলোনার বিরুদ্ধে রিয়াল রক্ষণে তিনিই ভরসা জ়িদানের। টুইটার
মরসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোর চব্বিশ ঘণ্টা আগেই নাটকীয় ভাবে বদলে গেল বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ অন্দরমহলের আবহ। লিয়োনেল মেসির ক্লাব ছাড়তে চাওয়া প্রসঙ্গে ক্লাব প্রেসিডেন্ট জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন জেরার পিকে। আর অধিনায়ক সের্খিয়ো র্যামোস সুস্থ হয়ে ওঠায় শাখতার ডনেস্ক ম্যাচে বিপর্যয়ের ধাক্কা কাটিয়ে ফের চনমনে জ়িনেদিন জ়িদানের দল।
গত মরসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ২-৮ লজ্জার হারের পরেই পিকে নিজেই বার্সা ছাড়ার কথা বলেছিলেন। সম্প্রতি আরও তিন বছরের জন্য চুক্তিতে সই করেছেন তিনি। তার পরেই স্পেনের একটি সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্ষুব্ধ পিকে বলেছেন, ‘‘আমি নিজেকেই প্রশ্ন করেছিলাম, আমরা ধন্য বিশ্বের সর্বকালের সেরা ফুটবলার আমাদের সঙ্গে খেলছে। সে এক দিন সকালে উঠে বুরোফ্যাক্স (আইনসিদ্ধ নোটিস) পাঠাল। তার মানে ও মনে করেছে, ওর কথা শোনা হচ্ছে না?’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘কী ঘটছে, তা পুরোটাই অত্যন্ত গোপনীয়? আমি মনে করি সব কিছুই মেসির প্রাপ্য। নতুন স্টেডিয়ামে মেসির নাম আগে থাকা উচিত। তার পরে থাকবে স্পনসরের নাম।’’
স্পেনীয় সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছিল, ফুটবলারদের সমালোচনা করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় সংস্থা ভাড়া করেছিলেন বার্সা প্রেসিডেন্ট। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন বার্তোমেউ। সেই প্রসঙ্গে পিকে বলেছেন, ‘‘ক্লাবের বাইরের লোক আমাদের সমালোচনা করতেই পারেন। কিন্তু বার্সার ফুটবলার হিসেবে দেখেছি, যে ক্লাব আমাদের জন্য অর্থ খরচ করেছে, তারাই এখন বেতন কমানোর কথা বলছে ও সমালোচনা করছে। এই ব্যাপারে আমি বার্তোমেউকে প্রশ্ন করেছিলাম। কিন্তু তিনি আমাকে বলেছিলেন, জেরার আমি কিছুই জানি না।’’ পিকে আরও বলেছেন, ‘‘আমি তখন বার্তোমেউয়ের কথা বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু পরে দেখলাম, সব কিছুর জন্য উনিই দায়ী। অথচ এখনও ক্লাবে রয়েছেন। যা আমাকে আরও কষ্ট দিচ্ছে।’’ অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে বার্সার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বার্তোমেউকে সরানোর প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
ফেরেঙ্কভারোসকে ৫-১ চূর্ণ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুর্দান্ত শুরু করা রোনাল্ড কোমানের পাখির চোখ অবশ্য এই মুহূর্তে ক্যাম্প ন্যু-তে রিয়ালকে হারানো। বার্সার ম্যানেজার হিসেবে প্রথম এল ক্লাসিকোর আগে তিনি বলেছেন, ‘‘আগের ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদ প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি ঠিকই। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ওরা এখানে মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে খেলতে আসবে। রিয়ালের মতো অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দলের ম্যাচ জেতার ক্ষমতা রয়েছে।’’ এর পরেই কোমান যোগ করেছেন, ‘‘এই ম্যাচে জয় আমার ফুটবলারদের প্রাপ্য। ওরা প্রত্যেক দিন পরিশ্রম করছে। যে ভাবে ম্যাচ জিতছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে আমরা ঠিক পথেই এগোচ্ছি।’’ সেই সঙ্গে দাবি করেছেন, আঁতোয়া গ্রিজ়ম্যানের সঙ্গে তাঁর কোনও সংঘাত নেই। এই মরসুমে এখনও গোল পাননি বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি স্ট্রাইকার। ফেরেঙ্কভারোসের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে গ্রিজ়ম্যানকে মাঠেই নামাননি তিনি। রিয়াল ম্যাচের আগে কোমান বলেছেন, ‘‘গ্রিজ়ম্যান গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। কিন্তু আমি আমার সব ফুটবলারদের কাছেই সেরাটা চাই। অন্যান্যদের মতো ওকেও প্রথম দলে জায়গা করে নিতে হবে।’’
কোমানের ধারণাই ঠিক। র্যামোসের প্রত্যাবর্তনে রিয়ালের ছবিটাই বদলে গিয়েছে। দুরন্ত ফর্মে থাকা মেসি, ফিলিপে কুতিনহো, আনসু ফাতি, নতুন তারকা পেদ্রো গনসালেস লোপেসকে (পেদ্রি) আটকাতে অধিনায়কই প্রধান ভরসা জ়িদানের। সাংবাদিক বৈঠকে রিয়াল ম্যানেজার বলেছেন, ‘‘ও আমাদের নেতা। সদ্য চোট সারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে চাই না। র্যামোস আমাদের সঙ্গে রয়েছে।’’ জ়িদান আরও বলেছেন, ‘‘একশো শতাংশ ফিট ফুটবলার চাই দলে। র্যামোস সেই তালিকায় রয়েছে।’’
শাখতার ম্যাচের পরে ফুটবলারেরা সমালোচনার মুখে পড়লেও জ়িদান তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বলেছেন, ‘‘এই ফুটবলারেরাই আমাকে অনেক জয় এনে দিয়েছে। যুদ্ধ জেতা না পর্যন্ত ওদের পাশেই থাকব।’’ স্পেনীয় সংবাদ মাধ্যমের দাবি, এল ক্লাসিকোর ফলের উপরে রিয়ালে জ়িদানের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে। ফরাসি কিংবদন্তি বলছেন, ‘‘অস্বীকার করছি না, অনেকেই বলছেন আমার ভবিষ্যৎ খুব একটা ভাল জায়গায় নেই। তবে গত মরসুমেও পরিস্থিতি এ রকম ছিল। রিয়ালে আমার প্রথম মরসুমেও একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল। এই মুহূর্তে আমি কিছু সব ভুলে নিজের কাজটাই করতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy