উত্তপ্ত: ক্ষিপ্ত গঞ্জালেসকে সামলাচ্ছেন রালতে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মোহনবাগান ০ • ইস্টবেঙ্গল ০
ডার্বির সব চেয়ে আলোচিত বিদেশি খাইমে কোলাদো নেই প্রথম একাদশে!
গোলের মধ্যে থাকা বিদ্যাসাগর সিংহেরও জায়গা হয়নি শুরুতে!
ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলার তালিকায় দলের সেরা দুই স্ট্রাইকারকে রিজার্ভ বেঞ্চে দেখে গ্যালারিতে গুঞ্জন। আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসের দলকে তা হলে গোল করে জেতাবেন কে?
উল্টোদিকে কিবু ভিকুনাও তো নামালেন না তাঁর গোল করার সেরা অস্ত্র সালভা চামোরোকে। উল্টে চার স্টপারের সামনে জোড়া সেন্ট্রাল মিডিয়ো—ফ্রান গঞ্জালেস এবং শেখ সাহিল। সামনে স্ট্রাইকার শুধু ভি পি সুহের। বোঝা যাচ্ছিল, ‘জিততে না পারি, হারব না’ এই মনোভাব নিয়েই নেমেছেন।
রবিবাসরীয় দুপুরে বাইপাস ধরে ঝাঁকে ঝাঁকে গাড়ি ছুটছিল যুবভারতীর দিকে। কোনওটায় লাল-হলুদ পতাকা, কোনওটায় সবুজ-মেরুন। বাঙালির চিরকালীন দু’ভাগ হয়ে যাওয়ার লড়াইতে যা নতুন কিছু নয়। কিন্তু ‘মা’ উড়ালপুলের উপর দিয়ে আসা একটি ম্যাটাডোর চোখে টানছিল সবার। যাতে দু’দলের পতাকাই পাশাপাশি ঝুলছিল। ওই গাড়ির সওয়ারিরা একসঙ্গে হাসছেন, গান গাইছেন, স্লোগান দিচ্ছেন।
কলকাতা লিগের প্রথম ডার্বির পরে আলেসান্দ্রো এবং কিবুকে দেখে মনে হচ্ছিল, ওই ম্যাটাডোরের ছবিটা দুই প্রধানের দুই স্পেনীয় কোচের মনোভাবের সঙ্গে কাকতালীয় ভাবেই যেন মিলে যাচ্ছে। দু’জনেই তৃপ্ত, দুজনেই হাসছেন। নিশ্চিত জয় হাতছাড়া করেও কিবুর যেমন অনুশোচনা নেই, তেমনই এক পয়েন্ট পাওয়ার পরেও আলেসান্দ্রো শান্ত।
ডার্বি হলেও এটা ছিল লিগের একটা ম্যাচ। হারলেও খেতাব হারানোর কোনও সম্ভবনা ছিল না। দু’দলেরই সাতটি করে ম্যাচ বাকি। কোনও কোচই এই অবস্থায় ঝুঁকি নেবেন না। নেনওনি। কিন্তু উপচে পড়া স্টেডিয়ামে যে সাতষট্টি হাজার দর্শক খেলা দেখতে এসেছিলেন, তাঁরা কতটুকু তৃপ্ত হলেন, প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। দু’দলে খেললেন মোট ছয় জন স্পেনীয় ফুটবলার। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত পাসিং ফুটবলের সুবাসই তো সে ভাবে পাওয়া গেল না।
ম্যাচের রাশ বেশিরভাগ সময়ই ছিল মোহনবাগানেরই হাতে। এবং সেটা একজন স্পেনীয় ও একজন বঙ্গসন্তানের সৌজন্যে। জোসেবা বেইতিয়া এবং শেখ সাহিলের জন্যই মাঝমাঠের দখল নিয়েছিল কিবু বাহিনী। ম্যাচের সেরা বেইতিয়া বোঝালেন, তিনিই এ বারের মোহনবাগানের প্রধান ইঞ্জিন অথবা প্রাণভোমরা। আর কল্যাণীর ছেলে স্কুল ছাত্র সাহিল এ দিন দেখালেন তাঁর তারকা হওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। ভ্রাম্যমান মিডিয়ো হয়ে অনেকখানি জায়গা জুড়ে খেললেন সাহিল। তাঁকে ব্যবহার করেই কিবু অকেজো করে দিলেন আলেসান্দ্রোর দুই মিডিয়ো কাসিম এবং লালরিনডিকাকে। সেই সুযোগে ভি পি সুহের, ফ্রান গঞ্জালেস, জেসুরাজরা কয়েকটি গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। সুহের একের বিরুদ্ধে এক অবস্থায় লাল-হলুদ গোলকিপার রালতেকে পেয়েও ব্যর্থ হলেন। ওই গোলটা হলে অভিষেক ডার্বি স্মরণীয় করে রাখতে পারতেন কিবু।
ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠের ব্যর্থতা ঢেকে দিল তাদের রক্ষণ। কিবু বাহিনীর সব আক্রমণ থেমে যাচ্ছিল মার্তি ক্রেসপি, মেহতাব সিংহদের সামনে এসে। বিশেষ করে স্পেনীয় স্টপার মার্তি। দুর্দান্ত অনুমানক্ষমতা তাঁর। ইস্টবেঙ্গলও সুযোগ পেয়েছিল গোলের। মার্কোস এসপারা এবং লালরিনডিকা রালতে সফল হননি। ডিকার শট রুখলেন দেবজিৎ মজুমদার। হারিয়ে যাওয়া মোহনবাগান গোলকিপার ‘সেভজিৎ’ হয়ে ফিরলেন ওই সময়।
মোহনবাগান: দেবজিৎ মজুমদার, আশুতোষ মেহতা, ফ্রান মোরান্তে, গুরজিন্দার কুমার, লালরাম চুলোভা, শেখ সাহিল, সুরাবুদ্দিন মল্লিক (ব্রিটো), ফ্রান গঞ্জালেস, জোসেবা বেইতিয়া, ননগোম্বা নওরেম (জেসুরাজ), সুহের।
ইস্টবেঙ্গল: লালথুমাইয়া রালতে, কমলপ্রীত সিংহ, মার্তি ক্রেসপি, মেহতাব সিংহ, অভিষেক আম্বেকর, কাশিম আইদারা, লালরিনডিকা রালতে, পিন্টু মাহাতো (সামাদ আলি মল্লিক), ব্র্যান্ডন ভানলালরেমডিকা, রোনাল্ডো অলিভিয়েরা (বিদ্যাসাগর সিংহ), মার্কোস এসপারা (খাইমে কোলাদো) ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy