ভারতীয় হকি দলের সমালোচনা সর্দারের গলায়। ছবি: পিটিআই।
দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ। তাই ভারতীয় হকি অনুরাগীদের প্রত্যাশা একটু বেশিই ছিল জাতীয় দলের তারকাদের কাছে। কিন্তু, শেষমেষ মনপ্রীত সিংহ, সিমরনজিত সিংহরা গোটা দেশকে হতাশ করেছেন।
সেই কবে ১৯৭৫ সালে একবারই মালয়েশিয়ার মাটিতে ভারত হকির বিশ্বকাপে সেরার খেতাব জিতে নিয়েছিল। ৪৩ বছর পর ঘরের মাটিতে আরও একবার কাপ জয়ের স্বপ্নটা দানা বাঁধছিল সব মহলেই। কিন্তু, কোথায় কী? কাপ জেতা দূরে থাক, হরেন্দ্র সিংহের ছেলেরা দুর্দান্তভাবে অভিযান শুরু করেও শেষ আটের লড়াইয়ে ছিটকে গিয়েছেন।
নেদারল্যান্ডসের কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতীয় দলের সেই লজ্জার হার দেখে হকি বিশেষ়জ্ঞরা দলের রণনীতি এবং আড়ালে পড়ে যাওয়া দূর্বলতাগুলোয় আলো ফেলতে শুরু করেছেন। জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকা সর্দার সিংহ যেমন স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন, ঘন-ঘন খেলোয়াড় পরিবর্তন এবং আরও কিছু দূর্বলতা দলের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া ৩২৬, ভারতকে লড়াইয়ে রাখলেন কোহালি, রাহানে
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় ইনিংসে হ্যাটট্রিকের হাতছানি ইশান্তের সামনে
সর্দারের মতে, এ বার ভারত যে ভাবে বিশ্বকাপে তাদের অভিযান শুরু করেছিল তাতে সত্যিই মনে হচ্ছিল দলটা দারুণ কিছু করে দেখাবে। কিন্তু, তার পরও কোয়ার্টার ফাইনালে ছিটকে যাওয়াটা রীতিমতো হতাশ করার মতোই। সর্দারের কথায়, ''গ্রুপ পর্যায়ে আমরা যথেষ্ট ভাল খেলেছি। যদিও, কানাডা বা দক্ষিণ আফ্রিকা দল হিসেবে বেশ দূর্বল ছিল, কিন্তু মাঠে নেমে ভারতকে জিততে তো হয়েছে। তবে নিঃসন্দেহে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটাই ছিল আসল। আমি বিশ্বাস করি যে, ওই ম্যাচে ভারতের জেতা উচিত ছিল। ম্যাচটায় আমাদের দল যদি খারাপ খেলেও জিতত তা হলেও লোকে তা মনে রেখে দিত। কিন্তু, ঘটনা হল হেরোদের কেউ মনে রাখে না। সেই জন্যই এইসব ম্যাচে দল কতটা ভাল খেলল কেউ তা নিয়ে আলোচনা করবে ন। শুধু স্কোরলাইনটাই মনে রেখে দেবে।''
সর্দার এরপর আরও খোলসা করেই আলো ফেলেছেন দূর্বলতাগুলোর উপর। ভারতীয় দলের ত্রুটিপূর্ণ গেম সেন্স-ই হারের প্রধান কারণ বলে মনে করেন তিনি।। তাঁর মতে, "স্কিলের দিক দিয়ে এ বার আমাদের কোনও ঘাটতি ছিল না। ফিটনেসের ক্ষেত্রেও খেলোয়াড়দের কোনও সমস্যা ছিল না। এমনকী, দলের স্ট্র্যাজেতিতেও কোনও খুঁত ছিল বলে মনে করি না। সমস্যা যেটা হল, সচেতনতার অভাবেই দলটা ডুবল। গোলমুখে জায়গা নেওয়ার ক্ষেত্রে গলদ চোখে পড়েছে। কিছু কিছু বল বিপজ্জনক ভাবে দ্বিতীয় পোস্টের পাশ ঘেঁষে বেরিয়ে গেছে যেগুলো থেকে বিপক্ষ যে কোনও সময় গোল পেতেই পারত। এটাও তো রক্ষণেরই ত্রুটি। এছাড়াও হঠকারী পাস দেওয়ার প্রবণতাও নজর এড়ায়নি। এই পাসগুলো একেবারে নিশ্চিত হয়ে তবেই কিন্তু খেলা উচিত।"
সাম্প্রতিককালে ভারতীয় দলের স্কোয়াডে ঘন-ঘন বদলও দলকে জমাট বাঁধতে দেয়নি বলেই মনে করেন সর্দার। বললেন, "কমনওয়েলথ গেমস দিয়ে বছরটা শুরু হয়েছিল। তার পর একটানা বড় টুর্নামেন্ট। যে ব্যাপারটা আমাকে বেশ অবাক করেছে তা হল, ঘন ঘন স্কোয়াডে বদল ঘটানো। এটাও দলকে থিতু হতে দেয়নি। এ বার বিশ্বকাপের অন্য দলগুলোয় যেখানে নতুন মুখ বলতে পাঁচ কি ছয়জন। সেখানে আমাদের দলে প্রচুর নতুন মুখ। এমনকী, কমনওয়েলথ গেমসের পর দলের অনেক সিনিয়র খেলোয়াড়ও দলে থাকবে কি থাকবে-না, তা নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে। যেটা হওয়া একেবারেই উচিত ছিল না।"
(ক্রিকেটের খবর,ফুটবলের খবর, টেনিসের খবর, হকির খবর - খেলার খবরের সেরা ঠিকানা আমাদের খেলা বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy