সন্দীপ দাস। নিজস্ব চিত্র
অভাবী পরিবারে বড় হওয়া। দু’বেলা খাবার জোগাড় করাই দায়। কিন্তু অনুশীলন ছাড়েননি। গাঁয়ের এবড়ো খেবড়ো মাঠেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দৌড়েছেন। শুধুমাত্র জেদ আর আত্মবিশ্বাসকে সম্বল করেই ঝালদা ২ (কোটশিলা) ব্লকের বেগুনকোদরের সেই সন্দীপ দাস জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় ম্যারাথন দৌড়ে রুপোর পদক জিতলেন ।
ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে বেঙ্গালুরুর শান্তিরাভা স্টেডিয়ামে ৩৯তম জাতীয় মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্স মিটে ১০ কিলোমিটার ম্যারাথনে রূপো জিতেছেন সন্দীপ।
তাঁর কথায়, ‘‘বাবা অনেক দিনই মারা গিয়েছেন। দাদা গ্রামেই একটা ছোট ব্যবসা করে। আমি সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করি। তারপর সংসারের নানা কাজকর্ম করার পরে অনুশীলনের সময় পাই। দু’বেলা কঠিন অনুশীলনের পরে যে রকম ‘ডায়েট’ করা দরকার, আমাদের মতো গরিব পরিবারের ছেলের কাছে তা স্বপ্নই। তবুও আমার লক্ষ্য ছিল জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা থেকে পদক জিততেই হবে। তা পেরেছি।’’
যেখানেই ম্যারাথন দৌড়ের আসর, সেখানেই ছুটে যান সন্দীপ। তা সে বাংলার উত্তরবঙ্গ বা দক্ষিণবঙ্গের যে কোনও প্রান্তেই দৌড়ের আসর হোক না কেন। সন্দীপের কথায়, ‘‘যেখানে দৌড়ের প্রতিযোগিতা হয় আমি যাই। শুধু এ রাজ্যই নয়, এমনকী ঝাড়খণ্ডের রাঁচী, বোকারো, জামশেদপুরেও যাই। নগদ অর্থ পুরস্কারের টাকা আমার কাজে লাগে।’’ তিনি জানান, সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজে থাকলেও, থানার ওসি তাঁকে ভীষণ ভাবেই সহযোগিতা করেন। দোলের আগের দিন বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফেরার পরে গ্রামের ক্লাব ও বাসিন্দারা মিলে সন্দীপকে গোটা গ্রাম ঘুরিয়ে সংবর্ধনা দেয়। বেগুনকোদরের বাসিন্দা তপনকুমার বিদ, অঞ্জন দৈবজ্ঞ, বীরেশ্বর চট্টরাজ প্রমুখেরা বলেন, ‘‘সন্দীপ শুধু আমাদের গ্রামের মুখই নয়, পুরুলিয়া তথা বাংলার জন্য সম্মান এনেছেন।’’ অঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘সন্দীপকে পুরুলিয়া স্টেশন থেকে গাড়িতে গ্রাম পর্যন্ত নিয়ে এসে আবির উড়িয়ে শাঁখ বাজিয়ে মিষ্টিমুখ করিয়ে তাকে সারা গ্রাম ও আশপাশের এলাকা সম্মান জানিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy