বাংলার ছেলেদের প্রশংসা করলেন সম্বরণ।
তাঁর নেতৃত্বে শেষ বার রঞ্জি ট্রফি ঘরে এসেছিল বাংলার। এ বার রাজকোটে রঞ্জি জেতার সুযোগ এসেছিল মনোজ তিওয়ারি, অনুষ্টুপ মজুমদারদের সামনে। ঠোঁট ও পেয়ালার মধ্যে ঠিক যে দূরত্ব থেকে যায়, রঞ্জি ট্রফি ও বাংলার মধ্যে ঠিক ততটাই দুরত্ব থেকে গেল এ বারও।
বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বাংলার অনুজ ক্রিকেটারদের লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়ে বললেন, ‘‘হেরে গেলেও মনে থাকবে এই লড়াই। ক্রিকেটাররা যে ভাবে রান তাড়া করল, তা এক কথায় অসাধারণ। মনে রাখতে হবে যে ওরা আড়াই দিন ফিল্ডিং করেছে। তারপর এই চাপ নিয়ে রান তাড়া করেছে। ভাবা যায় না!’’
রঞ্জি ফাইনালের চতুর্থ দিনের শেষে মনে হচ্ছিল এ বার হয়তো তিরিশ বছরের খরা কাটতে চলেছে। সুদীপ, ঋদ্ধিদের লড়াইয়ের পর অনুষ্টুপ মজুমদার ও অর্ণব নন্দী বাংলা শিবিরে এনে দিয়েছিলেন স্বস্তি। কিন্তু পঞ্চম দিনের সকালে সব এলোমেলো হয়ে গেল। পর পর উইকেট হারিয়ে স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল বাংলার। সম্বরণ বলছিলেন, ‘‘কাল রাতে মনে হচ্ছিল ৬০-৪০। বাংলা এগিয়েছিল বলে বিশ্বাস করছিলাম। কারণ, খুব বেশি রান বাকি ছিল না। হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। তবু, ক্রিকেট তো। এক বলের খেলা। আগাম বলা যায় না। সৌরাষ্ট্রের চার উইকেট দরকার ছিল। আর সেটাই হল। কাছে এসেও শেষ রক্ষা হল না।’’
আরও পড়ুন: স্বপ্নভঙ্গ! রঞ্জিতে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল বাংলাকে
রঞ্জি ট্রফি ফাইনালের প্রথম দিন থেকেই রাজকোটের পিচ নিয়ে চর্চা হচ্ছিল। বাংলার কোচ অরুণ লাল বাইশ গজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। পিচ কি বাংলার ব্যাটসম্যানদের কাজটা কঠিন করে দিয়েছে? সম্বরণ অবশ্য পিচকে দুষছেন না। তিনি বললেন, ‘‘পিচ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছিল। আমার সঙ্গে কারসনের কথাও হল। খারাপ পিচ কিসের? আটশোর কাছাকাছি রান উঠেছে। চতুর্থ দিনের পিচে ক’টা বল গড়িয়ে গিয়েছে? একটা বলও নয়। কিসের কঠিন পিচ? উইকেট ক্রমশ মন্থর হয়েছে। অসাধারণ ব্যাট করেছে বাংলার ব্যাটসম্যানরা। সংকল্প, জেদ ফুটে উঠেছিল বাংলার ছেলেদের খেলায়।’’
এ বারের বাংলা দলটাকে দারুণ ভাবে পরিচালনা করেছেন অরুণ লাল। প্রথম দিন থেকেই ছেলেদের কঠিন অনুশীলন করিয়ে ফিটনেসের তুঙ্গে পৌঁছে দিয়েছিলেন দলটাকে। সম্বরণ বলছেন, ‘‘এই দলের প্রত্যেককে কৃতিত্ব দিতে হবে। সবাই কোনও না কোনও ভাবে অবদান রেখেছে। এটাই সব চেয়ে বড় গুণ। সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, ঋদ্ধিমান সাহা, অনুষ্টুপ মজুমদার, অর্ণব নন্দীরা সবাই লড়াকু ব্যাটিং করল। আলাদা করে আমি সুদীপ ঘরামির কথা বলব। ও ২৬ রান করেছে। ওকে দেখে আমার আগামী দিনের তারকা বলেই মনে হয়েছে। ৩০ বছর আগের এক রঞ্জি ফাইনালে আর এক জন অভিষেক ঘটিয়েছিল। সেই ম্যাচে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় করেছিল ২২ রান। সুদীপ ঘরামির মধ্যে পরের ১০-১২ বছর শাসন করার লক্ষণ দেখেছি।’’
আরও পড়ুন: যত চর্চা এখন বিদেশিদের ভিসা নিয়েই
ইদানীং নিন্দুকরা বলে থাকেন, লাল বলের ক্রিকেট জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলেছে। সাদা বলের ক্রিকেটের দিকেই ঝোঁক সবার। রঞ্জি ট্রফি ফাইনাল কিন্তু অন্য ইঙ্গিত দিয়ে গেল। টানটান উত্তেজনা দেখা গিয়েছে ফাইনালে। দু’দলের সমর্থকরাও তাকিয়ে ছিলেন ম্যাচের দিকে। সম্বরণ বলছেন, ‘‘লাল বলের ক্রিকেট কখনও হারিয়ে যাবে না। এটা শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। সাদা বলের ক্রিকেট হল জীবনমুখী গানের মতো। পাঁচ দিন ধরে রঞ্জি ফাইনালের দিকে চোখ ছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের। এটা খুব পজিটিভ দিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy