n সম্মান: লন্ডনে আইসিসি হল অব ফেমের স্মারক তুলে দেওয়া হচ্ছে সচিনের হাতে। (নীচে) নিজের মূর্তির সামনে পরিবারের সঙ্গে মাস্টার ব্লাস্টার। পিটিআই।
আইসিসি হল অব ফেম তালিকায় ঢুকে পড়লেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকর। তাঁর সঙ্গেই সেই তালিকায় যুক্ত হল দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন পেস বোলার অ্যালান ডোনাল্ড এবং প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় মহিলা ক্রিকেটার ক্যাথরিন ফিৎজপ্যাট্রিক।
বৃহস্পতিবার রাতে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে সচিনের হাতে সেই স্মারক তুলে দেওয়া হয়। ভারতের ষষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে সচিন আইসিসি হল অব ফেম তালিকায় যুক্ত হলেন। তাঁর আগে এই সম্মান পেয়েছেন সুনীল গাওস্কর, বিষাণ সিংহ বেদী, কপিল দেব, অনিল কুম্বলে এবং রাহুল দ্রাবিড়। আইসিসি-র ওয়েবসাইটে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় সচিন বলেছেন, ‘‘এটা নিঃসন্দেহে আমার কাছে এক বিরাট সম্মান। বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এবং তার প্রসার ঘটাতে অনেক ক্রিকেটারের অমূল্য অবদান রয়েছে। সেই তালিকায় এ বার আমার নামও যুক্ত হওয়াতে গর্বিত।’’
২৪ বছরের বর্ণোজ্জ্বল ক্রিকেট জীবনে তিনি অনেক সম্মান পেয়েছেন। পেয়েছেন ‘ভারতরত্ন’-এর মতো স্বীকৃতিও। আইসিসি হল অব ফেম সম্মান তাঁর সাফল্যের মুকুটে কি নতুন পালক যুক্ত করল? সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে সচিন বলেছেন, ‘‘আমার কাছে সমস্ত পুরস্কারেরই বিশেষ মূল্য রয়েছে। এ বিষয়ে কোনও তুলনা চলতে পারে না এবং আমি তা চাইও না।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘এখনও পর্যন্ত যত ধরনের সম্মান এবং পুরস্কার পেয়েছি, প্রত্যেকটির আলাদা প্রেক্ষিত ছিল। সেই জায়গা থেকে দেখলে সেই পুরস্কারগুলি একক ভাবে খুবই মূল্যবান। দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে ক্রিকেট খেলার পরে আইসিসি-র সদস্যরা মনে করেছেন যে, আমি এই সম্মান পাওয়ার যোগ্য। এই তালিকায় অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে নিজের নাম যুক্ত হওয়াতে সম্মানিত।’’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ মঞ্চে এই ধরনের স্বীকৃতি কি তাঁর প্রাপ্তির ভাণ্ডার এ বার পূর্ণ করল? সচিন অবশ্য সে ভাবে এই সম্মানকে দেখতে চাইছেন না। তিনি বলেছেন, ‘‘জীবনের যে কোনও ক্ষেত্রেই স্বীকৃতির বিশেষ একটা মূল্য রয়েছে। ধরুন ক্লাস ফাইভের কোনও পড়ুয়াকে তার পড়াশোনা অথবা খেলাধুলায় ভাল অবদান রাখার জন্য যদি কেউ স্বীকৃতি দিয়ে থাকেন, আমি মনে করি তারও বিশেষ মূল্য রয়েছে। এই স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টা অনেকটা সেই টনিকের মতো যা আপনাকে শক্তি এবং প্রেরণা দেবে নিজেকে আরও উন্নত করে তুলতে। শুধু আমি বলেই নয়, সকলের জীবনেই তর খুবই প্রয়োজন রয়েছে।’’
নিজের কথা বলতে গিয়ে সচিন জানিয়েছেন, জীবনের বিভিন্ন পর্বে তাঁর চোখের সামনেও ছিল এমন কিছু ব্যক্তিত্ব, যাঁদের তিনি আক্ষরিক অর্থে নায়ক বলে মনে করতেন। এবং প্রত্যেক মুহূর্তে তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেকে উন্নত করে তোলার চেষ্টা করে গিয়েছেন। সচিনের কথায়, ‘‘এ ভাবেই এগিয়ে যেতে যেতে কোনও একটা পর্যায়ে গিয়ে আমি যখন ভাল কিছু করেছি এবং বন্ধুরা তার স্বীকৃতি দিয়েছে, সেই মুহূর্তের অনুভূতিটা আমার কাছে এখনও আগের মতোই গুরুত্বপূর্ণ এবং রোমঞ্চকর। এর চেয়ে ভাল প্রাপ্তি আর কিছু হতে পারে না।’’
তাঁর জীবনের সেরা নায়ক কারা? সচিন বলেছেন, ‘‘সে ভাবে দেখতে গেলে আমার জীবনের সেরা নায়ক বাবা। আমি বরাবর তাঁর মতো একজন সুন্দর মানুষ হতে চেয়েছি।’’ আর বাইশ গজে তাঁর সেরা দুই প্রেরণা সুনীল গাওস্কর এবং স্যর ভিভিয়ান রিচার্ডস। সচিন বলেছেন, ‘‘একজন ক্রিকেটার এবং অবশ্যই একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে এই দুই কিংবদন্তি ছাড়া আর কে-ই বা প্রেরণা হতে পারেন। আমি তাঁদের অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি। আমার কাছে এঁরাই ব্যাটিংয়ের শেষ কথা।’’
ক্রিকেট জীবনের সেরা মুহূর্ত বাছতে গিয়ে সচিনের মুখে আবারও ফিরে এসেছে ২০১১ সালে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ঐতিহাসিক বিশ্বকাপ জয়ের প্রসঙ্গ। তিনি বলেছেন, ‘‘কোনও রকম দ্বিধা ছাড়াই বলে দিতে পারি, ২০১১ সালের বিশ্বকাপ জয় সেরা মুহূর্ত।’’ সেখানেই না থেমে সচিন আরও বলেছেন, ‘‘যে মুহূর্তে সেই সুন্দর ট্রফিটা আপনি হাতে নেবেন, ভাষায় সেই মুহূর্তের অনুভূতি প্রকাশ করা অসম্ভব। আপনি ফাইনালে উঠলেন এবং তার পরেই ট্রফিটা চলে এল হাতের মুঠোয়, এই চমকপ্রদ ঘটনার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে অনেকটা সময় লাগে। যা আমার সঙ্গে হয়েছিল। আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম।’’ মজা করেই বলেছেন, ‘‘ওই সময় ট্রফিটা হাতে নিয়ে আমার ক্ষণিকের জন্য মনে হয়েছিল, তা হলে বিশ্বকাপটা শেষ হয় গেল। আর কোনও ম্যাচ আমাদের খেলতে হবে না। আমরা বিশ্বসেরা। এই অনুভূতিটাই অতুলনীয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy