লেখাটা একটা লাইন দিয়ে শুরু করি: আশা করি কার্ডিফেই ভাল প্লেয়ার হিসেবে সুরেশ রায়নার শুরু হল!
রায়নার ইনিংসটা সত্যিই দুর্দান্ত। যার মূল্য রানের সংখ্যার চেয়ে বেশি। প্রথমত, ওয়ান ডে-তে এটা ওর সেরা ইনিংস। এত দিন ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত থেকেও রায়না যে উপমহাদেশের বাইরে সেঞ্চুরি পায়নি, সেটা নিশ্চয়ই ওর মনে খচখচ করত। সিমিং উইকেটে ওর মানসিক কোনও বাধা থেকে থাকলে এই ইনিংস সেটা ভেঙে দিয়েছে। ওর মনে বিশ্বাস তৈরি করে দিয়েছে, এ রকম পরিবেশেও ও সমান স্বচ্ছন্দ। নির্বাচকেরা এখন যুবরাজের উপর আস্থা দেখাচ্ছেন না। তাই পাঁচ নম্বর ব্যাটসম্যানের সব পরিবেশে খেলতে পারাটা জরুরি। বাকি সিরিজের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডেও পরের ছ’মাস এই ফর্ম্যাটের স্লটটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে এ রকম দুর্দান্ত প্রতিভা দরকার ছিল। ক্রিকেটপ্রেমী ও প্রাক্তন ক্রিকেটারদের অবশ্য বিশ্বাস, বিদেশে টেস্টের চেয়ে ওয়ান ডে টিম হিসেবে ভারত বেশি ভাল। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা আর নিউজিল্যান্ডে পরপর সাতটা ওয়ান ডে হারের পর সেই বিশ্বাসটায় চিড় ধরেছে। তাই রায়নার ইনিংসটার গুরুত্ব অপরিসীম। কার্ডিফে দেখলাম ওর ব্যাটিংয়ে চোখে পড়ার মতো উন্নতি হয়েছে। ঢাকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেটা দেখেছিলাম, কিন্তু এটা আরও একটা স্তর উপরে। শর্ট বলের বিরুদ্ধে ওকে নিয়ে একটা প্রশ্নচিহ্ন ছিল। আর ওকে মনে রাখতে হবে, বিশ্বের সেরা ক্রিকেটাররা হুক শট না খেলেই বড় রান করেছে। এই ইনিংসের সবচেয়ে ভাল দিক ছিল, বাউন্সারের পরের বলটা রায়না যে ভাবে খেলছিল। ওর পা এগিয়ে আসছিল, যেটা দেখে বোঝা যায় ও আবার শর্ট ডেলিভারি আশা করছিল না। যার জন্য ওর কভার ড্রাইভে আবার আগের মুগ্ধতা দেখলাম।
হালফিলে ওয়ান ডে-তে নিয়মিত তিনশো দেওয়া ভারতীয় বোলিংও কার্ডিফে অনেক উন্নত ছিল। শামির রান-ইন দেখতে তো দারুণ লাগছিল। জানি না, দশ ওভার বল করতে হবে ভাবলে বোলারদের জীবন সহজ হয়ে যায় কি না, কিন্তু শামি নেমেই ছন্দ পেয়ে গেল। ভাল গতিতে দারুণ লেংথে করা ওর বল ইংরেজ টপ অর্ডারে ধস নামিয়ে স্পিনারদের কাজ সহজ করে দিয়েছিল। আগে এই ব্যাপারটা নিয়ে সমস্যা হত। সেট ব্যাটসম্যানদের বল করতে হত বলে স্পিনাররা ম্যাচগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারত না।
নটিংহামে মনে হয় অনেক বেশি ফ্ল্যাট উইকেট পাবে টিম ইন্ডিয়া। টেস্ট ম্যাচটায় তো সে রকমই ছিল। রোহিত ছাড়া বাকি টিম মনে হয় এক থাকবে। ভারতের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল ধারাবাহিকতা। ওরা নিশ্চয়ই লর্ডস টেস্টের পরের সময়টার পুনরাবৃত্তি চাইবে না। ইংল্যান্ডকে কিন্তু স্টিভ ফিনকে খেলাতে হবে। ফিন ম্যাচ-উইনার। ওর গতি আর বাউন্স দারুণ কাজে লাগবে। ইংল্যান্ডের যে গতির ইঞ্জেকশনটা খুব দরকার, বিশেষ করে ডেথ ওভারে। মইন আলিকেও কিন্তু সুযোগ দেওয়া দরকার। একটা দুর্দান্ত টেস্ট সিরিজের পর ওকে বসিয়ে রাখা যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy