প্রত্যয়ী: কোহালির দলে জায়গা পেতে চান রাহুল। ফাইল চিত্র
তুতো দাদার নেট প্র্যাক্টিসের সময় বারবার বল করার বায়না করতেন। জেঠুর ধমকেও কাজ হত না। দাদা বল করার সময় কখনও সামনে দাঁড়িয়ে পড়তেন। কখনও ব্যাট করতে চলে যেতেন প্যাড, গ্লাভস ছাড়াই। একদিন তাঁকে নেটে বল করার অনুমতি দিলেন জেঠু লোকেন্দ্র চাহার। সেই যাত্রা শুরু। দাদা দীপক চাহারকে নকল না করে নিজের মতো লেগস্পিন করে বসলেন ছোটভাই রাহুল। সে দিন থেকেই দুই ভাইকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু লোকেন্দ্রর।
দু’জনকে নিয়ে নিয়মিত প্রস্তুতির ফল তিনি পেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। একই পরিবারের দুই ছেলে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী-ই হতে পারে!
রাহুলও সেই দিনের কথা কখনও ভুলবেন না। আনন্দবাজারকে ফোনে বললেন, ‘‘প্রস্তুতির ব্যাঘাত ঘটাতাম বলে ছোটবেলায় দীপকের কাছে বকুনি খেয়েছি। কিন্তু আমারও ক্রিকেটের প্রতি টান ছিল। জেঠুকে বার বার বলতাম আমাকে অনুশীলন করার অনুমতি দিতে। বাড়িতেই টার্ফ ও কংক্রিট উইকেট বানিয়েছিলেন জেঠু। তাই প্রস্তুতির অসুবিধাই ছিল না। তার উপরে পড়াশোনায়ও খুব খারাপ ছিলাম। সেটা এক দিক থেকে সুবিধাই হয়েছে।’’ যোগ করেন, ‘‘যে দিন দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পেলাম, সে দিন দীপকের সঙ্গে প্রথম অনুশীলন করার কথা মনে পড়ছিল। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।’’
দেশের জার্সিতে একসঙ্গে খেলার আগে চাহার ভাইয়েরা রাজস্থানের হয়ে একসঙ্গে রঞ্জি ট্রফিতে খেলেছেন। আইপিএলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির পুণে সুপারজায়ান্টসের হয়েও একসঙ্গে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০১৭ আইপিএলে রাহুল মাত্র তিন ম্যাচ খেললেও পেয়েছিলেন এক নতুন গুরুকে। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার লেগস্পিনার ইমরান তাহির। রাহুল বলছেন, ‘‘আগে শুধু লেগস্পিন ও গুগলি ছিল অস্ত্র। তাহির ভাই আমাকে প্রথম ফ্লিপার শেখায়। তার পর থেকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সাফল্য পেতে শুরু করি। গত বার আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে যে ১৩ উইকেট পেয়েছি, তার অধিকাংশই ফ্লিপারে।’’
তাহিরের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ আছে? রাহুলের উত্তর, ‘‘অবশ্যই। কোনও বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে অথবা টেকনিক পরিবর্তন করতে হলে তাহির ভাইকে টেক্সট করি। একসঙ্গে খেলার জন্য ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল।’’
ভারতের সীমিত ওভারের দলে রাহুল আদৌ স্থায়ী জায়গা করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সতীর্থ যুজবেন্দ্র চহালও লেগস্পিনার। রাহুল যদিও প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়েও সতীর্থ হিসেবেই চহালকে দেখতে বেশি পছন্দ করেন। বলছিলেন, ‘‘দু’জনে লেগস্পিন করাই বলে যে প্রতিদ্বন্দ্বী হতে হবে তার কোনও অর্থ নেই। চহাল ভাইকে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সতীর্থ হিসেবেই দেখতে পছন্দ করি।’’ যোগ করেন, ‘‘ভারতীয় দলে স্থায়ী জায়গা করতে হলে পারফরম্যান্সই আসল। প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধুই দূরত্ব বাড়াবে।’’
বিরাট কোহালি, শিখর ধওয়ন, রোহিত শর্মাদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ব্যবহার করার সময় রাহুলের এক বারও মনে হয়নি তিনি দলে নতুন। বাকি সদস্যদের মতোই গুরুত্ব দেওয়া হত তাঁকে। ‘‘ড্রেসিংরুমের পরিবেশ কখনও ভাবতেই দেয়নি যে, আমি নতুন। প্রত্যেকের সঙ্গে যে রকম প্রাণ খোলা কথা বলা হয়, আমার সঙ্গেও সে রকম কথা বলা হয়েছে। একসঙ্গে ডিনার করা থেকে ঘুরতে বেরোনো, সবই করেছি। দলের পরিবেশ যদি এ রকম থাকে তা হলে পারফর্ম করার চাপ এমনিতেই চলে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy