অপ্রতিরোধ্য: আক্রমণাত্মক মেজাজে জয় রাফার। ছবি: এএফপি।
রড লেভার এরিনা অন্য দাবানল দেখল শনিবার। আগুনের নাম রাফায়েল নাদাল। স্বদেশীয় পাবলো কারেনো বুস্তাকে যে মেজাজে ছারখার করলেন ‘মায়োরকার আগুন’, তাতে অস্ট্রেলীয় ওপেনে এখন একটাই চর্চা। অবশেষে অপেক্ষা কি শেষ হবে? অপেক্ষা, মরসুমের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফি স্পেনীয় মহাতারকার হাতে দেখার।
রড লেভারের দেশে শেষ বার রাফা ট্রফি ধরেন ২০০৯-এ। ১১ বছর আগে। পরে প্রতিবার ফিরেছেন খালি হাতে। আরও চার বার ফাইনালে উঠেও। কিন্তু ইতিহাস যা-ই বলুক, শনিবার অস্ট্রেলীয় ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে নাদাল-উত্তাপ দেখে নড়চড়ে বসেছে টেনিস মহল। এখনই অনেকে বলে দিচ্ছেন, ১১ বছর পরে রাফার হাতে আবার তাঁরা ট্রফি দেখছেন। যে মেজাজে ১৯ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিককে দেখা গেল পাবলোর বিরুদ্ধে, তাতে এ রকম মনে হওয়ায় অস্বাভাবিকত্ব নেই। গোটা ম্যাচে মাত্র সাত গেম হারানো। ১০টি ব্রেক পয়েন্টের পাঁচটিতেই জয়। ৪২ উইনার। প্রত্যাশিত ভাবেই এ হেন আগুনের সামনে পাবলো দর্শকের ভূমিকা নিলেন। এবং নাদালের নিখুঁত সার্ভিস ও আগ্রাসনে প্রথম সেটে উড়ে গেলেন ২৯ মিনিটে। শুধু প্রথম সেট নয়, পুরো ম্যাচেই এটাই ছবি। স্কোর লাইনেও তা স্পষ্ট। ৬-১, ৬-২, ৬-৪।
নাদাল নিজেই বললেন, ‘‘নিঃসন্দেহে টুর্নামেন্টে এটাই আমার সেরা ম্যাচ।’’ যোগ করলেন, ‘‘দেখছি, এখানে গরম বাড়লে বল অনেক বেশি লাফায়, শূন্যে ভেসে থাকে বেশিক্ষণ। আমার খেলার যা ধাঁচ, তাতে এটা বিরাট সুবিধে করে দেয়।’’ নাদালের অবশ্য বন্ধুর জন্য খারাপও লেগেছে। হ্যাঁ, বন্ধুর নাম পরাজিত পাবলো কারেনো বুস্তা। এই সে দিন এটিপি কাপে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে স্পেনের হয়ে লড়েছেন যে! ম্যাচ শেষে ম্লান হেসে রাফাকে তাই বলতে শোনা গেল, ‘‘বন্ধুর জন্য খারাপ লাগছে। আজকের দিনটা ওর ছিল না।’’
বন্ধুর সঙ্গে যুদ্ধ শেষ। চতুর্থ রাউন্ডে রাফার লড়াই তাঁর ঘোষিত শত্রু নিক কিরিয়সের সঙ্গে। কে না জানে, অস্ট্রেলীয় টেনিসের ‘দুষ্টু ছেলে’ বারবার নাদালকে নিয়ে বিদ্রুপ করেছেন। ‘আমরা দুই মেরুতে অবস্থান করি’, ‘ওর মতো নোনতা মানুষ হয় না’— এমন কত কী বলেছেন। এমনকি রাফার সার্ভিস নিয়ে ভাঁড়ামো করতে ছাড়েননি।
শনিবার মেলবোর্নের উষ্ণতা ছিল ৩০ ছুঁই-ছুঁই। মজা করে বলা হচ্ছে, এ বার রাফা-কিরিয়স যুদ্ধের আবহে সেটা পাঁচ ডিগ্রি বেড়ে যাবে। নাদাল যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন, তখনও কিরিয়স-কারেন খাচানভ লড়াই চলছে (অস্ট্রেলীয় তারকা শেষ পর্যন্ত জেতেন রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পরে, পাঁচ সেটে)। কিরিয়সের নাম শুনেই রাফা গম্ভীর হয়ে গেলেন। পরিষ্কার বলে দিলেন, তাঁর সার্ভিস নিয়ে কিরিয়সের ভাঁড়ামো একেবারেই ভাল লাগেনি। এ-ও বললেন, ব্যক্তিগত ভাবে তিনি যুযুধান অস্ট্রেলীয়কে জানেন না। তাই তাঁর সম্পর্কে মন্তব্যে আগ্রহী নন। আশ্চর্যের ব্যাপার খাচানভকে হারিয়ে উঠে ‘দুষ্টু ছেলে’র মুখে উল্টো কথা, ‘‘আমাদের মধ্যে যাই হোক, রাফা টেনিসের বিস্ময়। তর্কাতীত ভাবে সর্বকালের সেরা। চেষ্টা করব এ বারের লড়াইয়ের আগে অনেক বেশি তৈরি হয়ে নামতে।’’
শোনা যাচ্ছে, টেনিস তারকাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সব চেয়ে বেশি দান-ধ্যান করেছেন কিরিয়স। কিন্তু হলেই বা হার্ডকোর্ট, মায়ারকোরা আগুনের উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে সোমবার, ২৭ জানুয়ারি রড লেভার এরিনায় দাক্ষিণ্য দেখানোর কোনও সুযোগই যে পাবেন না ক্যানবেরার বছর চব্বিশের অস্ট্রেলীয় যুবা, তা পরিষ্কার।
প্লিসকোভার বিদায়: মেয়েদের মঞ্চে শনিবার সেরিনা উইলিয়ামসদের মতো পরিণতি হল দ্বিতীয় বাছাই ক্যারোলিনা প্লিসকোভার। তাঁকে রাশিয়ার আনাস্তাসিয়া পাভলুচেঙ্কোভা হারালেন ৭-৬ (৭/৪), ৭-৬ (৭/৩)। এ দিকে, নাদিয়া কিচেনককে নিয়ে মিক্সড ডাবলসের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলেন রোহন বোপান্না। তাঁরা হারালেন লুদমিলা কিচেনক-অস্টিন ক্রাইসেক জুটিকে ৭-৫, ৪-৬, ১০-৬ সেটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy