শোকার্ত: কিরিয়সের টি-শার্টে লেখা ব্রায়ান্ট। (ডান দিকে) চোখে জল নাদালের। সোমবার। এএফপি
মার্কিন বাস্কেটবল কিংবদন্তি কোবি ব্রায়ান্টের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ অস্ট্রেলীয় ওপেনের খেলোয়াড়, দর্শকেরাও। অস্ট্রেলিয়ার নিক কিরিয়স বাস্কেটবলের খুবই বড় ভক্ত। তিনি রাফায়েল নাদালের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে নামেন কোবির বিখ্যাত লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্সের জার্সি পরে। কোর্টে ঢোকার সময় প্রায় কেঁদে ফেলার মতো অবস্থা তাঁর।
অস্ট্রেলীয় ওপেনে নাদাল বনাম কিরিয়স দ্বৈরথ নিয়ে প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত নাদাল নাটকীয় ম্যাচ জেতেন ৬-৩, ৩-৬, ৭-৬, ৭-৬ ফলে। হারলেও দারুণ লড়াই করেন টেনিসের বিতর্কিত তারকা কিরিয়স। কিন্তু তাঁদের দ্বৈরথকে ছাপিয়ে যায় কোবিকে নিয়ে শোকের ছায়া। কিরিয়স যেমন কোবির জার্সি পরে নেমেছিলেন, তেমনই নাদালকে দেখা যায় লেকার্সের টুপি পরতে। দর্শকদের রাফা অনুরোধ করেন, সদ্যপ্রয়াত বাস্কেটবল তারকার জন্য হাততালি দিতে। তেরো বছরের কন্যা এবং আরও সাত জনকে নিয়ে কোবি ব্রায়ান্টের হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে। ‘‘আমার কিছু বলার ভাষা নেই। সকালে ঘুম থেকে উঠলাম এ রকম একটা ভয়ঙ্কর খবর শুনে,’’ জন ম্যাকেনরোকে কোর্টে দাঁড়িয়ে ইন্টারভিউ দিতে এসে বললেন নাদাল। এর পরেই দর্শকদের দিকে ফিরে যোগ করেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রীড়াবিদকে হারালাম আমরা। সকলকে বলছি, কোবির একটা বড় হাততালি প্রাপ্য।’’ এক বার হাত দিয়ে চোখ মুছতেও দেখা যায় নাদালকে। জেতার পরেও বলেন, ‘‘এটা এমন একটা দিন, যা কেউ মনে রাখতে চায় না। কিন্তু কোবি ব্রায়ান্ট বাকি জীবনের জন্য আমাদের হৃদয়ে থেকেই যাবে।’’
গত বারের মেয়েদের বিভাগের চ্যাম্পিয়ন নেয়োমি ওসাকা, যিনি কোকো গফের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছেন, তিনিও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। কোবির সঙ্গে ছবি দিয়ে ওসাকা লেখেন, ‘‘তোমাকে সব সময় ভালবাসব।’’ নাদালের কাছে হেরে যাওয়া নিক কিরিয়স আবেগরুদ্ধ গলায় বলেন, ‘‘কখনও কোবির সঙ্গে দেখা হয়নি আমার। তবে বাস্কেটবল আমার জীবন। প্রত্যেক দিন আমি এই খেলাটা দেখি। এই খবর সত্যিই সহ্য করা যাচ্ছে না।’’ সাম্প্রতিককালে নাদাল বনাম কিরিয়স বেশ কঠিন লড়াই হয়েছে। টেনিসের নতুন দ্বৈরথ আখ্যা দেওয়া হচ্ছে তাঁদের দু’জনের ম্যাচকে। অস্ট্রেলীয় ওপেনেও তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্ত কিরিয়স বলছেন, কোবি ব্রায়ান্ট তাঁকে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছিলেন। ‘‘সত্যের জন্য মেরুদণ্ড দেখিয়ে দাঁড়িয়েছিল কোবি। ম্যাচের মধ্যেও ওর জীবনকাহিনি আমাকে উদ্বুদ্ধ করছিল,’’ হেরে যাওয়ার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলেন কিরিয়স। যোগ করেন, ‘‘চতুর্থ সেটে একটা সময় পিছিয়ে ছিলাম। তখন আমি কোবির কথা ভাবি এবং ফিরে আসার প্রেরণা পাই।’’ নাদালের সঙ্গে কিরিয়সের খটাখটিরও একটা ইতিহাস রয়েছে। নাদালের সার্ভিস করার ধরন নিয়ে রসিকতা করে সেই বিতর্ক আরও উস্কে দিয়েছিলেন কিরিয়স। তা নিয়ে জিজ্ঞেস করলে নাদাল অবশ্য ম্যাচ জেতার পরে বলে যান, ‘‘আমার ও সবে কিছু এসে-যায় না। আমি এখানে টেনিস খেলতে এসেছি।’’ ঘরের মাঠে পিছিয়ে পড়েও কিরিয়স দারুণ ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছিলেন। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে ডমিনিক থিমের সঙ্গে খেলবেন নাদাল। তবে প্রতিপক্ষের প্রশংসাও করেন তিনি, ‘‘কিরিয়স যখন এ ভাবে খেলে, টেনিসকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায় ও।’’
মেয়েদের বিভাগে সিমোনা হালেপ কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছেন। বেলজিয়ামের এলিস মার্তেন্সকে হারান ৬-৪, ৬-৪ ফলে। ২০১৮-তে মেলবোর্নে ফাইনালে উঠেছিলেন হালেপ। এ বারে সেরিনা, শারাপোভার বিদায়ের পরে তিনি অন্যতম ফেভারিট। হালেপ বলেন, ‘‘আবার কোয়ার্টার ফাইনাল খেলব ভেবে খুব খুশি। নিজের খেলা নিয়েও সন্তুষ্ট।’’ এই নিয়ে চতুর্থ বার অস্ট্রেলীয় ওপেনের শেষ আটে উঠলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy