আলজেরিয়ার বক্সার ইমান খেলিফ। ছবি: রয়টার্স।
বিতর্ক ক্রমেই বেড়ে চলেছে ইমান খেলিফকে নিয়ে। প্যারিস অলিম্পিক্সে মহিলাদের ৬৬ কেজি বিভাগে সোনা জিতেছেন আলজেরিয়ার বক্সার। কিন্তু তাঁর নারীত্ব নিয়ে তখনই প্রশ্ন তুলেছিলেন কয়েক জন প্রতিযোগী। অলিম্পিক্স শেষ হওয়ার পর সেই বিতর্ক কিছুটা কমলেও সম্প্রতি একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট ফাঁস হতেই তা বেড়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, খেলিফ পুরুষ। এই মেডিক্যাল রিপোর্টের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছেন খেলিফ।
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটি এই খবর জানিয়েছে। একটি বিবৃতিতে তারা বলেছে, “প্যারিসে অলিম্পিক্স চলাকালীন যে বা যাঁরা তাঁর লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন খেলিফ। যে সংবাদপত্রে তাঁর মেডিক্যাল রিপোর্ট ফাঁস হয়েছে সেই সংবাদপত্রের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটি বিবৃতিতে আরও বলেছে,“যে হেতু বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে তাই এখন এই বিষয়ে কমিটি কোনও মন্তব্য করবে না। যে মেডিক্যাল রিপোর্ট ফাঁস হয়েছে তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাই সেই বিষয়েও কোনও মন্তব্য কমিটি করবে না।”
আন্তর্জাতিক বক্সিং সংস্থা গত বছর দিল্লিতে আয়োজিত বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে খেলিফকে নিষিদ্ধ করে। কারণ তাঁর শরীরে অনুমোদিত মাত্রার বেশি পুরুষ হরমোন ছিল। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স সংস্থা (আইওসি) আবার বক্সিং সংস্থার নিয়ম মানে না। তাই প্যারিস অলিম্পিক্সে খেলার সুযোগ পান আলজেরিয়ান বক্সার। সোনাও জেতেন। কিন্তু যে বিতর্ক অলিম্পিক্সে তাঁর সঙ্গী হয়েছিল, সেটাই আবার বড় হয়ে ওঠে সেখানে। প্যারিসে প্রথম রাউন্ডে ইটালির অ্যাঞ্জেলা কারিনিকে মাত্র ৪৬ সেকেন্ডে হারিয়ে দেন খেলিফ। নাক ফেটে যায় কারিনির। কাঁদতে কাঁদতে রিং ছাড়েন তিনি। তার পরেই খেলিফের নারীত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। অলিম্পিক্স সংস্থা অবশ্য তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছিল।
ফ্রান্সের সাংবাদিক জাফ্ফর আওদিয়ার দাবি অনুযায়ী, খেলিফ মহিলা নন। তিনি পুরুষ। খেলিফের সর্বশেষ মেডিক্যাল রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাঁর দু’টি ক্রোমোজোম এবং অভ্যন্তরীণ অণ্ডকোষ রয়েছে। এই অবস্থাকে ফাইভ-আলফা রিডাক্টেস বলা হয়। খেলিফের শরীরে জরায়ুর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এমআরআই রিপোর্টে ‘মাইক্রোপেনিস’ বা ক্ষুদ্র পুরুষাঙ্গের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনে প্যারিসের ক্রেমলিন-বিকেত্রে হাসপাতাল এবং আলজিয়ার্সের মহম্মদ লামিন ডেবাঘিন হাসপাতালের বিশেষজ্ঞেরা মিলে এই রিপোর্ট তৈরি করেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, জৈবিক বৈশিষ্ট অনুযায়ী খেলিফ মহিলা নন, তিনি পুরুষ। যদিও খেলিফ সব সময়ই দাবি করেছেন, তিনি মহিলা হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং মহিলা হিসাবেই জীবনযাপন করেন। নিজেকে পুরুষ বলে মানতে নারাজ।
খেলিফের মেডিক্যাল রিপোর্ট ফাঁস হওয়ার পর নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাঁর অলিম্পিক্স সোনা কেড়ে নেওয়ার দাবি তুলছেন অনেকে। তাঁদের অন্যতম ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার হরভজন সিংহ সমাজমাধ্যমে আইওসিকে ট্যাগ করে খেলিফের প্যারিসের পদক ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি তুলেছেন। তার মাঝেই এ বার আদালতে গিয়েছেন খেলিফ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy