হতাশ: সেমিফাইনালে হারের পরে লক্ষ্য সেন (বাঁ দিকে), শেষ রক্ষা হল না লাভলিনার (ডান দিকে)। প্যারিস।
৪ অগস্ট: হকিতে দারুণ জয়ের দিনে জোড়া ধাক্কা নেমে এল ভারতের জন্য। ব্যাডমিন্টনে লক্ষ্য সেন হেরে গেলেন সেমিফাইনালে। বক্সিংয়ে হেরে গেলেন টোকিয়োয় ব্রোঞ্জজয়ী লাভলিনা বরগোঁহাই। লক্ষ্য তবু আর একটা সুযোগ পাবেন পদক জেতার। সোমবার ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে নামছেন তিনি। কিন্তু লাভলিনার যাত্রা এখানেই শেষ। বক্সিংয়ে ভারতীয় অভিযান শেষ হয়ে গেল কোনও রকম প্রভাব সৃষ্টি করতে না পেরেই।
নিখাত জ়ারিন ও লাভলিনা ছিলেন সব চেয়ে বড় আশা। অনেকেই আশা করেছিলেন, বক্সিং থেকে অন্তত দুটি পদক আসতে পারে। নিখাত আগেই বিদায় নিয়েছেন, এ বার শেষ হয়ে গেল লাভলিনার স্বপ্ন। হেরে গিয়ে তিনি বললেন, ‘‘দেশবাসীর কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। পারলাম না। চেষ্টা করব আরও তৈরি হয়ে ফিরে আসার।’’ যদিও প্রশ্ন থাকছে পরের অলিম্পিক্সে তাঁকে আর দেখা যাবে কি না।
রবিবার চিনের লি কিয়ানের বিরুদ্ধে হারলেন লাভলিনা। এর আগে দু’বার চিনের প্রতিপক্ষের কাছে হারতে হলেও লাভলিনা ২০২৩ বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে লি-কে হারিয়ে সোনা জিতেছিলেন। শুরুটা ভাল করেছিলেন লাভলিনা। কিন্তু ক্রমশ টোকিয়ো অলিম্পিক্সের ব্রোঞ্জজয়ী লড়াই থেকে বেরিয়ে যেতে থাকেন। লাভলিনার কাছে লি-র পাঞ্চের কোও জবাব ছিল না। লাভলিনা ৬৯ কেজি থেকে ৭৫ কেজিতে এসেছিলেন, কারণ ওই ক্যাটেগরি তুলে দিয়ে ড্র হয়েছিল। এই বিভাগেই তিনি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে সোনা এবং এশিয়ান গেমসে রুপো পেয়েছিলেন। কিন্তু এ বার স্বপ্নভঙ্গ হল।
অলিম্পিক্সে ইতিহাস গড়ার দারুণ সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করলেন লক্ষ্য সেন। ডেনমার্কের ভিক্টর অ্যাক্সেলসেনের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও ‘চোক’ করে গেলেন তিনি। প্রথম গেমে ২০-১৭ এগিয়ে যান লক্ষ্য। তিনটি গেম পয়েন্ট পেয়েও হারান তিনি।
বলা হয়, বড় খেলোয়াড়েরা একই ভুল বারবার করেন না। বার বার সুযোগ দেন না। ভিক্টর অ্যাক্সেলসেন সে রকমই এক জন শাসক ব্যাডমিন্টনে। গত বারের অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী। এই মুহূর্তে সেরাদের এক জন। মনে হয়েছিল, পিছিয়ে পড়ে প্রথম গেম জেতার পরে লক্ষ্যকে উড়িয়ে দেবেন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় গেমে আরও ভাল সুযোগ তৈরি করে ফেলেছিলেন লক্ষ্য। ৭-০ এগিয়ে যান। সেখান থেকে অবিশ্বাস্য ভাবে ম্যাচ হারলেন ২০-২২, ১৪-২১ ফলে। এর পর ব্রোঞ্জের ম্যাচে তিনি নামছেন সোমবারেই। মালয়েশিয়ার লি জি জিয়া তাঁর প্রতিপক্ষ। বিশ্ব ক্রমতালিকায় লি রয়েছেন সাত নম্বরে। লি-র বিরুদ্ধে শেষ পাঁচ চার সাক্ষাতে লক্ষ্য জিতেছেন চার বার। তার মধ্যে ২০২২ সালের অল ইংল্যান্ড ব্যাডমিন্টনের ফাইনালে ওঠার পথে লি-কে হারিয়েছিলেন লক্ষ্য।
ম্যাচের পরে লক্ষ্য বলেন, “আমার আরও সতর্ক থাকার প্রয়োজন ছিল। দুটো গেমেই কিন্তু এগিয়েছিলাম কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারলাম না। তবে এই ম্যাচ থেকে ভাল একটা শিক্ষা পেলাম।” যোগ করেন, “এই ম্যাচ নিয়ে আর ভাবতে চাই না। সোমবারই নেমে পড়তে হবে ব্রোঞ্জ পদক জয়ের ম্যাচে।” রবিবার ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে ছিলেন লক্ষ্যের বাবা-মা এবং ভাই চিরাগ সেন।
অন্য দিকে, হেরে গেলেও লক্ষ্যকে নিয়ে আশাপ্রকাশ করে গেলেন অ্যাক্সেলসেন। তিনি বলেন, ‘‘ম্যাচটা নিয়ে লক্ষ্য বোধহয় বেশি ভাবছিল, তার প্রভাব ওর খেলার উপরে পড়েছিল। তবে ওর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা একেবারেই সহজ নয়। আমি নিশ্চিত চার বছর পরে ও আরও পরিণত হয়ে সোনা জয়ের অন্যতম দাবিদার হিসেবেই নামবে।” আরও বলেন, “ওকে আগামী প্রতিযোগিতার জন্য শুভেচ্ছা জানাই। আমি চাপমুক্ত থেকে ম্যাচটা খেলেছি। ম্যাচের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময়ই ও আমাকে বেশ চাপের মুখে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু অভিজ্ঞতাই আমার জয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছিল।”
এ দিকে, শনিবার ছেলেদের ৭১ কেজি বক্সিংয়ের কোয়ার্টার ফাইনালে বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বিদায়ের পরে নিশান্ত দেব মুখ খুলেছেন। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘একটা স্বপ্ন নিয়ে প্যারিসে এসেছিলাম। কিন্তু একটা নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত সেই স্বপ্ন এক লহমায় শেষ করে দিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy