সেমিফাইনালে অ্যাক্সেলসেনের বিরুদ্ধে লক্ষ্যের ম্যাচের একটি দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স।
প্রথম গেমে এক সময় এগিয়ে ছিলেন ১৮-১২ পয়েন্টে। গেম পয়েন্টেও পৌঁছে গিয়েছিলেন। দেখে মনে হচ্ছিল, প্রথম গেম জিতবেন লক্ষ্য সেন। কিন্তু লড়াই যে অসম ছিল, সেটা প্রমাণ করে দিলেন ভিক্টর অ্যাক্সেলসেন। টানা পয়েন্ট পেয়ে প্রথম গেম জিতলেন। সেই ধাক্কাই হয়তো বাঙালি ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় লক্ষ্যের আত্মবিশ্বাস নাড়িয়ে দিল। ফাইনালে উঠতে পারলেন না তিনি। প্যারিস অলিম্পিক্সে ব্যাডমিন্টনে পুরুষদের সিঙ্গলসের সেমিফাইনালে ডেনমার্কের অ্যাক্সেলসেনের কাছে স্ট্রেট গেমে (২০-২২, ১৪-২১) হারলেন তিনি।
লক্ষ্যের সঙ্গে অ্যাক্সেলসেনের তফাৎ যে অনেকটাই, সেটা খেলা যত গড়িয়েছে, তত স্পষ্ট হয়েছে। বড় খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে হামেশাই এটা হয়। শুরুতে প্রতিপক্ষকে বুঝে নিতে কিছুটা সময় নেন। নিজেকে গুছিয়ে নিতেও একটু সময় লাগে। সেটা হয়ে গেলে বাকিটা সময়ের অপেক্ষা। টেনিসে রজার ফেডেরার, নোভাক জোকোভিচ, রাফায়েল নাদালের ম্যাচেও এরকম ঘটেছে বহু বার। দুর্বল প্রতিপক্ষের কাছেও শুরুতে পিছিয়ে থেকে ম্যাচ বার করতে তাঁদের কোনও সমস্যা হয়নি। লক্ষ্যের বিরুদ্ধে অ্যাক্সেলসেন ঠিক সেটাই করলেন।
তবে এখনও পদক জয়ের সুযোগ রয়েছে লক্ষ্যের। প্রথম ভারতীয় পুরুষ হিসাবে ব্যাডমিন্টনে ব্রোঞ্জ জিততে পারেন তিনি। মালয়েশিয়ার জ়ি জিয়া লির বিরুদ্ধে সেই ম্যাচ খেলবেন লক্ষ্য।
অভিজ্ঞ অ্যাক্সেলসেনের বিরুদ্ধে শুরুটা ভাল করেছিলেন লক্ষ্য। পয়েন্ট তুলছিলেন। প্রথম ১১ পয়েন্টের জন্য টান টান লড়াই হচ্ছিল। লক্ষ্য প্রথমে ১১ পয়েন্টে পৌঁছন। কোর্ট পরিবর্তনের পরে দুর্দান্ত খেলা শুরু করেন তিনি। গতি ব্যবহার করে অ্যাক্সেলসেনকে পরাস্ত করতে থাকেন। পর পর পয়েন্ট জিতে একটা সময় ১৮-১২ এগিয়ে যান। ঠিক তখনই অ্যাক্সেলসেন দেখালেন, কেন তাঁকে ব্যাডমিন্টনের অন্যতম সেরাদের মধ্যে ধরা হয়।
সার্ভিসে লক্ষ্যকে বিভ্রান্ত করতে শুরু করেন অ্যাক্সেলসেন। সার্ভিসের আগে সময় নিচ্ছিলেন তিনি। কোন দিকে মারবেন বুঝতে দিচ্ছিলেন না। কখনও শর্ট সার্ভিস করছিলেন, তো কখনও লম্বা। সার্ভিসেই কয়েকটি পয়েন্ট তোলেন তিনি। পাশাপাশি লক্ষ্যের ব্যাকব্যান্ডে খেলা শুরু করেন ডেনমার্কের খেলোয়াড়। ফলে শুরুতে লক্ষ্য যে ভাবে স্ম্যাশ মারছিলেন, পরে সেটা করতে পারেননি।
তার পরেও গেম পয়েন্ট পেয়েছিলেন লক্ষ্য। ১৭-২০ পিছিয়ে ছিলেন অ্যাক্সেলসেন। সেখান থেকে পর পর তিনটি গেম পয়েন্ট বাঁচান ডেনমার্কের খেলোয়াড়। সেখান থেকে এগিয়ে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত ২২-২০ পয়েন্টে প্রথম গেম জিতে যান তিনি।
দ্বিতীয় গেমে আবার শুরুতে দাপট দেখান লক্ষ্য। পর পর সাতটি পয়েন্ট জেতেন তিনি। অ্যাক্সেলসেনকে দেখে মনে হচ্ছিল, কী ভাবে ফিরবেন তার পথ খুঁজছেন। ঠিক তখনই প্রতিপক্ষকে সুযোগ করে দেন লক্ষ্য। একটি আনফোর্সড এরর করেন তিনি। এই ম্যাচে অ্যাক্সেলসেন দেখালেন, সার্ভিসের সুযোগ কী ভাবে কাজে লাগাতে হয়। ০-৭ পিছিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে একের পর এক পয়েন্ট জিতলেন। কোর্ট বদলের পরে আরও দ্রুত পয়েন্ট তুলতে শুরু করলেন দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
পিছিয়ে পড়ার পরে আর ফিরতে পারলেন না লক্ষ্য। এর আগে অ্যাক্সেলসেনের বিরুদ্ধে আট বারের সাক্ষাতে মাত্র এক বার জিতেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় বার জিততে পারলেন না। অ্যাক্সেলসেনের সঙ্গে দীর্ঘ দিন একসঙ্গে অনুশীলন করায় তাঁকে হয়তো লড়াই দিলেন তিনি। কিন্তু বাজিমাত করলেন ডেনমার্কের খেলোয়াড়। যদিও এখনও বিদায় হয়নি লক্ষ্যের। গত এক সপ্তাহে তিনি যা লড়াই করেছেন তার পরে পদক জেতার আরও একটি সুযোগ পাবেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy