Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Paris Olympics 2024

ভারতীয় শুটিংয়ের ধোনি! মাহি-মন্ত্রেই অলিম্পিক্সে পদক জিতলেন ‘টিকিট কালেক্টর’ স্বপ্নিল কুসালে

প্যারিস অলিম্পিক্সে ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজ়িশনসে ব্রোঞ্জ জিতলেন স্বপ্নিল কুসালে। ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে নিজের আদর্শ মনে করেন ভারতীয় শুটার।

sports

পদকের হাসি। শুটিংয়ে ব্রোঞ্জ জেতার পরে পদক হাতে স্বপ্নিল কুসালে। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৪ ১৪:২১
Share: Save:

শাতেরুর শুটিং রেঞ্জে যখন স্বপ্নিল কুসালে ভারতের তৃতীয় পদক নিশ্চিত করছেন, তখন কি তাঁর মনে পড়ে যাচ্ছিল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির কথা? কোনও দিন তাঁদের দেখা হয়নি। কিন্তু স্বপ্নিলের জীবনটা ধোনির থেকে বিশেষ আলাদা নয়। সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসে বিশ্ব মঞ্চে নিজের পরিচিতি তৈরি করা মুখের কথা নয়। ধোনির মতোই তা করেছেন স্বপ্নিল। শুধু তা-ই নয়, ধোনির মতোই টিকিট কালেক্টর তিনি। তফাত একটাই। ধোনি সেই চাকরি ছেড়ে ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলেন। স্বপ্নিল এখনও সেই চাকরি করেন।

১৯৯৫ সালের ৬ অগস্ট মহারাষ্ট্রের কোলাপুরের কাছে একটি গ্রাম কম্বলওয়াড়িতে জন্ম স্বপ্নিলের। বাবা শিক্ষক। মা গ্রামের প্রধান। ছোট থেকেই নিশানা ভাল ছিল স্বপ্নিলের। সেই কারণে বাবা তাঁকে ভর্তি করে দেন একটি শুটিং স্কুলে। সেই শুরু। ছোট থেকেই একের পর এক প্রতিযোগিতা জিতেছেন স্বপ্নিল। ২০১৫ সালে এশিয়ান শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে ৫০ মিটার রাইফেল প্রোন ৩ প্রতিযোগিতায় সোনা জেতেন তিনি। জাতীয় শুটিং প্রতিযোগিতার দু’বারের চ্যাম্পিয়ন স্বপ্নিলকে নিয়ে এ বার আশা ছিল। সেই আশা পূরণ করেছেন তিনি।

ছোট থেকেই ধোনির ভক্ত স্বপ্নিল। ধোনিকে আদর্শ মনে করে চলেন তিনি। একটি সাক্ষাৎকারে ভারতীয় শুটার বলেছিলেন, “আমি শুটিং জগতের কাউকে আদর্শ মনে করি না। আমার আদর্শ ধোনিস্যর। কোনও দিন ওঁর সঙ্গে দেখা হয়নি। কিন্তু ওঁকে দেখে অনেক কিছু শিখি। উনি যেমন মাঠে শান্ত থাকতেন, আমিও শুটিং রেঞ্জে নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করি। তাতে লক্ষ্যপূরণ করা সহজ হয়। উনিও টিকিট কালেক্টর ছিলেন। আমিও সেই চাকরি করি।”

২০১৫ সাল থেকে মধ্য রেলে টিকিট কালেক্টরের চাকরি করেন স্বপ্নিল। তার মধ্যেই নিজের শুটিং চালিয়ে গিয়েছেন। এই প্রথম ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজ়িশনসে ভারতের কোনও শুটার পদক জিতলেন। ফাইনালে শুরুটা খুব একটা ভালও হয়নি তাঁর। প্রথমে ছিল ‘নিলিং’, অর্থাৎ হাঁটু মুড়ে বসে শুটিং। সেখানে প্রথম সিরি‌জ়ে (পাঁচটি শট) ৫০.৮ স্কোর করেন তিনি। শুরুতেই নেমে যান সাতে। পরের সিরিজ়ে স্কোর হয় আর একটু ভাল, ৫০.৯। তৃতীয় সিরিজ়ে অনেকটা এগিয়ে ৫১.৬ স্কোর করেন।

এর পরে ‘প্রোন’, অর্থাৎ বুকে ভর দিয়ে শুটিং ছিল। সেখানে প্রতিটি সিরিজ়‌েই ভাল স্কোর করেন তিনি। ৫২.৭, ৫২.২ এবং ৫১.৯ স্কোর করে চারে উঠে আসেন। এর পর ‘স্ট্যান্ডিং’, অর্থাৎ দাঁড়িয়ে শুটিং বিভাগের দু’টি সিরিজ়‌ে ৫১.১ এবং ৫০.৪ স্কোর করেন। তখনই তিনি তিন নম্বরে উঠে এসে পদকের আশা দেখাতে শুরু করেন।

এর পরেও বাকি ছিল লড়াই। একটি শটের পরে ‘এলিমিনেশন’ ছিল। অর্থাৎ, এক জন করে বাদ পড়ছিলেন। তিন নম্বর স্থান ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ ছিল স্বপ্নিলের কাছে। তিনি প্রথম শটে ১০.৪ মারার পর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শটে ৯.৪ ও ৯.৯ স্কোর করেন। তবে চতুর্থ স্থানে যিনি ছিলেন, তাঁর সঙ্গে এতটাই পার্থক্য ছিল যে স্বপ্নিল তৃতীয় স্থানে থেকে যান এবং ব্রোঞ্জ নিশ্চিত করে ফেলেন।

২০০৭ সালে অধিনায়ক হিসাবে নিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে জিতিয়েছিলেন ধোনি। সেই শুরু। নিজের প্রথম অলিম্পিক্সেই পদক জিতলেন স্বপ্নিল। ধোনির মন্ত্রেই এগিয়ে যেতে চান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE