খারাপ আলোর জন্য ম্যাচ বন্ধ হওয়ায় অন্ধ্রপ্রদেশের বিরুদ্ধে প্রচুর ওভার নষ্ট হয়েছে। ৩৬০ ওভারের ম্যাচে খেলা হয়েছে মাত্র ১৯৪ ওভার। তৃতীয় দিন সূর্যগ্রহণ ও মেঘলা আবহাওয়ার জন্য ২০ ওভারও ম্যাচ পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েক বার আকাশ পরিষ্কার হওয়া সত্ত্বেও ম্যাচ শুরু করার ঝুঁকি নেননি আম্পায়ারেরা।
শুক্রবার থেকে শুরু গুজরাত-বাংলা ম্যাচের প্রথম দু’দিনও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বাংলার কোচ অরুণ লালের আতঙ্ক বৃষ্টি নয়। অরুণের উদ্বেগ, ‘‘আলো সামান্য কমলেই আম্পায়ারেরা ম্যাচ বন্ধ করে দিচ্ছেন। ক্রিকেটারদের বল দেখতে অসুবিধা না-হলেও ম্যাচ পরিচালনা করছেন না আম্পায়ারেরা। কিসের ভিত্তিতে ম্যাচ বন্ধ করা হচ্ছে, তার যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না আম্পায়ারেরা।’’ অরুণ যোগ করেন, ‘‘লাইটোমিটারে নির্দিষ্ট কোনও মাপকাঠি অনুযায়ী ম্যাচ বন্ধ করার নিয়ম নেই। আম্পায়ার তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ম্যাচ বন্ধ করছেন। উপায় থাকলে বোর্ডের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করতাম।’’
কম আলোর জন্য ম্যাচ বন্ধ করার নিয়মটা ঠিক কী? ভারতীয় বোর্ড অনুমোদিত আম্পায়ার প্রেমদীপ চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘আগে দু’দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাচ বন্ধ করা হত। এখন পুরোটাই আম্পায়ারের ভাবনার উপরে নির্ভর করে। কোনও ম্যাচে কম আলোর জন্য ম্যাচ বন্ধ হলে আম্পায়ারেরা লাইটোমিটারে সেই সময়ের মাপকাঠি রেকর্ড করে রাখেন। ধরা যাক ৪.২ মাপকাঠির আলো থাকলে ম্যাচ পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। সেটাই হবে সেই ম্যাচের মাপকাঠি। পরের দিন থেকে লাইটোমিটারে ৪.২ রেটিং দেখলেই ম্যাচ বন্ধ করতে বাধ্য আম্পায়ারেরা।’’
আলো কমে যাওয়ার আশঙ্কার সঙ্গেই অরুণের উদ্বেগ বাড়াবে আরও একজন। পীযূষ চাওলা, পার্থিব পটেল, প্রিয়ঙ্ক পঞ্চাল অথবা অক্ষর পটেল নন। তিনি প্রাক্তন বাংলা কোচ সাইরাজ বাহুতুলে। গত বছরও সাইরাজের সঙ্গে কাজ করেছেন অরুণ। তখন মেন্টর হিসেবে বাংলার দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান কোচ। বাংলার ক্রিকেটারদের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে বাহুতুলের চেয়ে ভাল আর কে জানেন। তিনি কোচ থাকাকালীনই ওপেনার হিসেবে সফল হয়েছেন অভিমন্যু ঈশ্বরন, অভিষেক রামনরা। এমনকি তরুণ ক্রিকেটারদের প্রত্যেককেই চেনেন সাইরাজ। অরুণ যদিও এ বিষয়ে ভাবছেন না।
বাংলার কোচের কথায়, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে ও কী রকম অঙ্ক তৈরি করে দেখি। বিপক্ষের পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেওয়ার মতো ক্রিকেটার আমাদের দলেও রয়েছে। পরিকল্পনা তৈরি করেই যদি ম্যাচের ফল হত, তা হলে ঘরে বসেই ক্রিকেট খেলা যেত। কিন্তু এখানে জিততে গেলে বাইশ গজে পারফর্ম করতে হয়।’’ প্রাক্তন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি যদিও বলছেন, ‘‘কী করলে আমরা সমস্যায় পড়তে পারি, পুরোটাই জানে সাইরাজ। আমরা কী ভাবছি, সে বিষয়েও আন্দাজ রয়েছে ওর। কিছুটা
সুবিধা তো পাবেই গুজরাত।’’
সহ-অধিনায়ক সুদীপ চট্টোপাধ্যায়কে ছাড়া শুক্রবার গুজরাতের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নামছে বাংলা। পরিবর্ত হিসেবে কাজি জুনেইদ সৈফিকে ১৬ জনের দলে নেওয়া হলেও প্রথম একাদশে জায়গা হবে কি না বলা যাচ্ছে না। সুদীপের জায়গায় খেলানো হতে পারে ঋত্বিক রায়চৌধুরীকে। এ দিন দীর্ঘক্ষণ নেটে সময় দেওয়া হয়েছে তাঁকে। অরুণও বলছিলেন, ‘‘ঋত্বিকের খেলার সম্ভাবনা বেশি। খুব ভাল ছন্দে রয়েছে। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে মিডিয়াম পেসারের কাজও করে দেবে ও।’’