মরিয়া: শ্রীনি হাজির মুম্বইয়েও। ফাইল চিত্র
ভারতীয় বোর্ড রাজনীতিতে আবারও শিরোনামে এন শ্রীনিবাসন। আজ, রবিবার মুম্বইয়ে শুরু হচ্ছে বোর্ডের দু’দিনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। প্রথম দিন সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (সিওএ) বসছে বিভিন্ন রাজ্য সংস্থার সঙ্গে। সোমবার বোর্ডের বিশেষ সাধারণ সভা হবে।
সেই সভার জন্য তামিলনাড়ু ক্রিকেট সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে আসছেন শ্রীনিবাসন। প্রশ্ন হচ্ছে, শ্রীনি কি আদৌ সভায় থাকতে পারেন? লোঢা কমিটির সুপারিশ মানলে ৭০ বছর পেরিয়ে যাওয়া তিনি থাকতে পারেন না। সুপ্রিম কোর্ট তাঁর আইসিসি সভায় যাওয়ার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল। আবার বোর্ডের মধ্যে শ্রীনি অনুগামীরা কট্টর বলে চলেছেন, এখনও লোঢা কমিটির সুপারিশ কোনও রাজ্য সংস্থাই কার্যকর করেনি। তা হলে শুধু শ্রীনি এবং তামিলনাড়ুর ক্ষেত্রে কেন সেগুলো মানা হবে? সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও শ্রীনি বোর্ডের সাধারণ সভায় টেলিকনফারেন্সে যোগ দিয়েছেন। পাল্টা সওয়াল করছেন তাঁর অনুগামীরা যে, তা হলে এই সভায় কেন থাকতে পারবেন না?
শ্রীনি অবশ্য মনে হয় না কারও অনুমতির তোয়াক্কা করছেন বলে। শনিবারই বিশ্বস্ত কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি মুম্বই পৌঁছে গিয়েছেন। রবিবার সরকারি ভাবে বোর্ডের বৈঠক হলেও শ্রীনি তাঁর অনুগামীদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন শনিবার রাতেই। বৈঠকে থাকার জন্য অনেক রাজ্য সংস্থার পদাধিকারীদের কাছে ফোন যায় শ্রীনি শিবিরের পক্ষ থেকে।
বোর্ডের সভায় তাঁর উপস্থিতি নিয়ে বিরোধীরা আপত্তি তোলার মতো জায়গায় নেই। কারণ, সকলেরই কোনও না কোনও গলদ রয়েছে। লোঢা সুপারিশে শ্রীনি যদি ‘আউট’ হন, তা হলে আরও অনেক কর্তাও আঠকে যাবেন। সেই সুযোগ নিয়ে শ্রীনি বৈঠকে ঢুকে পড়লে অবাক হওয়ার নেই। একমাত্র সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত পর্যবেক্ষকরা যদি তাঁকে আটকে দেন, তা হলে অন্য কথা।
বোর্ডের মধ্যে শ্রীনির সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে কি না, তা নিয়ে তর্ক থাকতে পারে। কিন্তু তিনি যে একেবারে সমর্থনহীন হননি, সেটা পরিষ্কার। বোর্ডের বর্তমান দুই পদাধিকারী সচিব অমিতাভ চৌধুরি এবং কোষাধ্যক্ষ অনিরূদ্ধ চৌধুরী— দু’জনেই শ্রীনির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। শনিবার মুম্বইয়ে ঘরোয়া বৈঠকে এঁরা দু’জনেই ছিলেন বলে খবর।
তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে, লোঢা কমিটির সুপারিশ নিয়ে সিওএ কর্তারা নরম হওয়ার লক্ষণ দেখিয়েছেন। যা নিয়ে বিরাচরপতি লোঢা স্বয়ং বেশ মনঃক্ষুণ্ণ। রবিবারের বৈঠকে রাজ্য সংস্থাদের কাছে সিওএ কর্তারা চূড়ান্ত ভাবে জেনে নিতে চান, সংস্কারের কী কী রাজ্যগুলো মানতে চাইছে আর কী কী মানতে চাইছে না। এমনও শোনা যাচ্ছে যে, সিওএ কর্তারা বেসরকারি ভাবে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন, যতটা পারবেন সুপ্রিম কোর্টকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন, সমস্ত সুপারিশ প্রয়োগ করায় অনেক সমস্যা আছে। বেশির ভাগ সংস্থার আপত্তি ৯ বছরের মেয়াদকাল, কুলিং অফ পিরিয়ড, এক রাজ্য থেকে এক ভোটের নিয়ম এবং ৭০ বছরের বয়সসীমা নিয়ে।
৭০ বছরের সময়সীমা প্রয়োগ করা হলে শ্রীনি আর থাকতে পারবেন না। এক রাজ্য এক ভোটের নিয়ম নিয়ে পরিষ্কার দ্বিমত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, একটি রাজ্য থেকে একটিই দল এবং একটি ভোটই থাকা উচিত। যদি এক রাজ্য, এক ভোটের নিয়ম বলবৎ হয় তা হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মহারাষ্ট্র। সেখান থেকে তিনটি রাজ্যের ঘরোয়া ক্রিকেটে আলাদা টিম রয়েছে এবং তিনটি রাজ্যই বোর্ড নির্বাচনে ভোট দেয়। নতুন নিয়ম এলে মুম্বই, মহারাষ্ট্র এবং বিদর্ভকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে পূর্ণ সদস্য হতে হবে। তেমনই কুলিং অফ উঠে গেলে সুবিধে হবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো প্রশাসকের। সিএবি পদাধিকারী হিসেবে জুলাইয়ে তিন বছর পূর্ণ হয়ে যাবে সৌরভের। যদি কুলিং অফ পিরিয়ড থাকে তা হলে এর পর তাঁকে সিএবি-র পদ ছাড়তে হবে।
মুম্বইয়ের সভায় থাকবেন সৌরভ। তিনি এবং এনসিসি-র প্রতিনিধি অভিষেক ডালমিয়া শনিবার শ্রীনির বৈঠকে ছিলেন না। তাঁরা মুম্বই রওনা হচ্ছেন আজ, রবিবার সকালে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy