আকর্ষণ: নয়াদিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। পিটিআই
ক্রিকেট মাঠে তাঁর মতো আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে আর কাউকে দেখা যায় না। যে কারণে তাঁর নামের পাশে জুড়ে গিয়েছে ‘ক্যাপ্টেন কুল’-এর তকমা। সেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনি জানাচ্ছেন, তিনিও আর পাঁচটা মানুষের মতো। তফাত হল, বাকিদের থেকে তিনি আবেগটা বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
নিউজ়িল্যান্ডের কাছে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে হারার পরে ধোনি মোটামুটি সবার চোখের আড়ালে চলে গিয়েছিলেন। তাঁকে নিয়ে নানা জল্পনা ছড়ালেও মুখ খোলেননি ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। বুধবার নয়াদিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে এসে এই প্রথম মুখ খুললেন ধোনি। নিজের ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও কথা না বললেও ধোনির মুখ থেকে শোনা গিয়েছে অন্য এক কাহিনি। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ফাঁস করেছেন, কী ভাবে তিনি এত দিন মাঠের মধ্যে আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে এসেছেন।
ধোনি বলেছেন, ‘‘আমিও আর পাঁচটা মানুষের মতো। কিন্তু আমি বাকিদের চেয়ে আবেগটা ভাল নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমিও বাকিদের মতো যন্ত্রণা পাই, হতাশ হই, রেগে যাই। কিন্তু কোনও ভাবেই প্রভাবিত হই না।’’
চাপের মুখেও কী ভাবে মাথা ঠান্ডা রাখেন? ধোনির টোটকা হল, সমস্যার কথা না ভেবে দ্রুত সমাধান খুঁজে বার করা। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি, রাগ বা হতাশার মতো অনুভূতিগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে ওই সময় কী করা উচিত, তা দ্রুত ভেবে ঠিক করা। তাই কঠিন কোনও পরিস্থিতিতে পড়লে আমি প্রথমেই ভাবতে থাকি, এখন কী করা উচিত? কার উপরে ভরসা রাখা যায়? এক বার এ সব ভাবনা মাথায় চলে এলে আবেগটা ভাল ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।’’
ধোনি আগেও যে কথা অনেক বার বলেছেন, তা আবার শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। ভারতকে দুটি বিশ্বকাপ (৫০ ওভার এবং ২০ ওভার) দেওয়া অধিনায়ক মনে করেন, ফলের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল প্রক্রিয়া। যে দর্শন তাঁর অধিনায়ক জীবনে বারবার ফুটে উঠেছে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে ধোনি বলেছেন, ‘‘টেস্ট ম্যাচে হলে আপনি পরের পরিকল্পনা করার জন্য একটু বেশি সময় পাবেন। আর টি-টোয়েন্টিতে সব কিছু দ্রুত ঘটে যায়। তাই সেখানের চাহিদাটা একটু অন্য রকম। সমস্যাটা কোনও এক জনকে নিয়ে হতে পারে, যে হয়তো ভুল করে বসেছে। আবার পুরো দলের ক্ষেত্রেও হতে পারে। এমনও হতে পারে, আমরা কৌশলটা ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারিনি। প্রয়োজন হল, ভুলটা দ্রুত শুধরে নেওয়া।’’
কী ভাবে বড় প্রতিযোগিতা জিততে হয়, তা ধোনির থেকে আর বেশি কে জানবে। দেশকে দুটো বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দেওয়া প্রাক্তন অধিনায়কের কথায়, ‘‘দল হিসেবে সবারই লক্ষ্য থাকে কোনও প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কিন্তু সেটা দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য। তার আগে ছোট, ছোট লক্ষ্যপূরণের জন্য নিজেদের তৈরি করা উচিত।’’
ধোনির মুখে শোনা গিয়েছে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় কী ভাবে ‘বোল-আউট’-এর জন্য তৈরি হয়েছিল তাঁর দল। ওই সময় ম্যাচ টাই হলে সুপার ওভারের বদলে বোল-আউটের নিয়ম চালু ছিল। দু’দলের ছ’জন করে বোলার একটি করে বল করতে পারবেন। উল্টো দিকে শুধু স্টাম্প থাকবে, কোনও ব্যাটসম্যান নয়। যে দল বেশি বার উইকেটে বল লাগাতে পারবে, তারা জিতবে। ‘‘আমার এখনও মনে আছে প্র্যাক্টিস সেশন শুরুর আগে আমরা নিজেদের মধ্যে ‘বোল-আউট’ অনুশীলন করতাম। আমরা ব্যাপারটাকে মজা হিসেবেই নিয়েছিলাম। কিন্তু পাশাপাশি এটাও ঠিক করে নিয়েছিলাম, যারা বেশি উইকেটে বল লাগাতে পারবে, প্রয়োজন হলে ম্যাচে তাদেরই কাজে লাগানো হবে,’’ বলেছেন তিনি।
ধোনির অঙ্কে কোনও ভুল হয়নি। প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বোল-আউটে জিতেছিল ভারত। ধোনির দলের সব বোলারই উইকেটে বল লাগিয়েছিলেন।
আরও একটা ব্যাপারের উপরে জোর দিতে চান ধোনি। সেটা হল, দলগত প্রচেষ্টা। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক বলে দিচ্ছেন, ‘‘কয়েক জন খুব ভাল খেলল বাকিদের চেয়ে, এটা কিন্তু কাম্য নয়। সাফল্য পেতে গেলে সবাইকেই কোনও না কোনও ভাবে অবদান রাখতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে একটা উইকেট বা একটা দুরন্ত রান আউট কিন্তু ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy