Advertisement
E-Paper

মণিপুরের হিংসা থামাতে মোদী, শাহের কাছে আবেদন অলিম্পিক্স পদকজয়ীর, কোহলিরা সেই চুপই

মণিপুরে গত কয়েক মাস ধরেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এখনও তা থামেনি। এ বার মণিপুরের হিংসা নিয়ে মুখ খুললেন অলিম্পিক্সে রুপোজয়ী ভারোত্তোলক মীরাবাই চানু। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করেছেন তিনি।

mirabai

মীরাবাই চানু। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩ ২৩:১০
Share
Save

মণিপুরে গত কয়েক মাস ধরেই কুকি ও মেইতেই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এখনও তা থামেনি। বরং দিনের পর দিন তা বেড়েই চলেছে। ভারতের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটিতে চলতে থাকা অশান্তি নিয়ে অনেকেই উদ্বিগ্ন। ক্রীড়াবিদরাও তাঁর ব্যতিক্রম নন। ভারতের মহিলা এবং পুরুষ দলের দুই ফুটবলারের পর এ বার মণিপুরের হিংসা নিয়ে মুখ খুললেন অলিম্পিক্সে রুপোজয়ী ভারোত্তোলক মীরাবাই সাইখোম চানু। টুইটারে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে হিংসা থামানোর আবেদন করেছেন তিনি। তবে এত কিছুর পরেও চুপ ভারতীয় দলের ক্রিকেটারেরা।

ভিডিয়োয় মীরাবাই বলেছেন, “মণিপুরে গত তিন মাস ধরে হিংসাত্মক কাজকর্ম চলছে। থামার কোনও নামই নেই। এই লড়াইয়ের ফলে অনেক খেলোয়াড় অনুশীলন করতে পারছেন না। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করতে অসুবিধা হচ্ছে। প্রচুর মানুষের জীবন গিয়েছে। অনেক বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি মণিপুরের মেয়ে। ওখানেই আমার বাড়ি। এখন আমি এশিয়ান গেমসের প্রস্তুতির কারণে আমেরিকায় রয়েছি। কিন্তু সব সময় ভাবি যে কখন এই লড়াই থামবে। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন, মণিপুরে যে লড়াই চলছে তা যত দ্রুত সম্ভব থামান এবং মণিপুরের মানুষকে বাঁচান। মণিপুরে আগে যে শান্তি ছিল সেটাই ফিরিয়ে দিন।”

প্রসঙ্গত, সাফ কাপ জেতার পরে মেইতেই সম্প্রদায়ের পতাকা কাঁধে পদক নিতে উঠেছিলেন ভারতীয় দলের ফুটবলার জিকসন সিংহ। সেই নিয়ে বিতর্কও হয়। খেলার সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিতর্কের মুখে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলা জিকসন জানান, শুধু নিজের কথা তুলে ধরতেই এই পতাকা নিয়েছিলেন। জিকসন বলেছিলেন, ‘‘আমি কারও ভাবাবেগে আঘাত করতে চাইনি। আমার রাজ্য মণিপুর এখন কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেটাই সবার সামনে তুলে ধরতে চেয়েছিলাম।’’

তার পরেই ভারতের মহিলা দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বাধিক গোল (৫২) করা বালা দেবীও মুখ খুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা শুধু শান্তি চাই। হিংসা নয়, আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা উচিত। আমি বহু বছর ধরে ভারতের হয়ে খেলছি। মেইতেই ও কুকিরা দেশের হয়ে একসঙ্গেই খেলেছে। তাতে তো আমাদের কোনও দিন সমস্যা হয়নি। মণিপুরে যা চলছে তা এ বার বন্ধ হওয়া উচিত।’’

বালা দেবী নিজের খেলার জন্য গোটা দেশে ঘোরেন। কিন্তু তাঁর পরিবার মণিপুরে থাকে। পরিবারের জন্য চিন্তা হয় তাঁর। বালা দেবী বলেছিলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত পরিবারের সবাই সুরক্ষিত আছে। কিন্তু তার জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়েছে ওদের। এই সমস্যা আর চাই না।’’ মণিপুরের এই অশান্তির জন্যই সিনিয়র জাতীয় মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতায় তাঁদের ফল খারাপ হয়েছে বলে মতপ্রকাশ করেছিলেন বালা দেবী। ২১ বারের চ্যাম্পিয়ন দল মণিপুর গত বার গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে। সেই প্রসঙ্গে ৩৩ বছর বয়সি এই স্ট্রাইকার বলেছিলেন, ‘‘প্রতিযোগিতার আগে অনুশীলন করার সুযোগই পাইনি আমরা। তা ছাড়া ফুটবলারদের মানসিকতাতেও প্রভাব পড়েছিল। সেই কারণে ভাল খেলতে পারিনি।’’

উল্লেখ্য, মণিপুরে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১০০ পার করেছে। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। শুরু হয় দীর্ঘ অশান্তি।

গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। তার পর থেকে তা ক্রমে বাড়তে থাকে। এই ঘটনায় গত দু’মাস দরে মণিপুরের এনএইচ-২ বা ইম্ফল-ডিমাপুর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল কুকিরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সর্বদল বৈঠক ডাকেন অমিত। তার পরেও শান্তি আসেনি।

Manipur Violence PM Modi Mirabai Chanu Amit Shah

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}