তাঁকে নিয়ে ক্রিকেট দুনিয়ায় কম হইচই হচ্ছে না। সেই চায়নাম্যান বোলার কুলদীপ যাদবকে এ বার শেন ওয়ার্নের সঙ্গে তুলনা করে বসলেন এক প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার। তিনি ম্যাথু হেডেন। অস্ট্রেলিয়ার এই প্রাক্তন ওপেনার পরিষ্কার বলে দিলেন, ওয়ার্নের মতো ‘ড্রিফ্ট’ হাতে আছে বলেই কুলদীপ এতটা ভয়ঙ্কর।
কুলদীপকে খেলা কেন কঠিন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন হেডেন। বলেছেন, ‘‘কুলদীপের হাতে ওয়ার্নের মতো একটা ড্রিফ্ট আছে। অর্থাৎ ওয়ার্নের বল যেমন হাওয়ায় কিছুটা বাঁক খেয়ে ব্যাটসম্যানের কাছে পৌঁছত, কুলদীপের ক্ষেত্রেও তাই হয়। যে কারণে ওকে খেলা কঠিন।’’ নিজের ক্রিকেট জীবনে ভারতীয় স্পিনারদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছেন হেডেন। তা সে ফর্মের শিখরে থাকা হরভজন সিংহ হোক কী অনিল কুম্বলে। ভারতীয় দলের বর্তমান লেগস্পিনার চহালকে নিয়ে হেডেন বলেছেন, ‘‘চহাল একটু অন্য রকমের বোলার। ও স্টাম্প টু স্টাম্প বল করে। ফ্লাইট কম করায় আর বল সোজা রাখে। কুলদীপের মতো ড্রিফ্টটা নেই ওর হাতে। আমাকে যদি বলা হয়, দু’জনের মধ্যে কাকে খেলতে পছন্দ করব, আমি চহালের কথাই বলব। কারণ, ওর বলটা হাওয়ায় সে ভাবে বাঁক খায় না।’’
রিস্ট স্পিনার বনাম ফিঙ্গার স্পিনারের লড়াই নিয়েও মুখ খুললেন হেডেন। তিনি পরিষ্কার বলে দিলেন, ফিঙ্গার স্পিনারদের (যাঁরা আঙুলের সাহায্যে বল ঘোরান) সাহস কম হওয়ায় তাঁরা রিস্ট স্পিনারদের (যাঁরা কব্জির সাহায্যে বল ঘোরান) সঙ্গে লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ছেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ফিঙ্গার স্পিনারদের গুরুত্ব কমে যাওয়া নিয়ে হেডেনের মন্তব্য, ‘‘অফস্পিনাররা একটা সময় ব্যাটসম্যানদের আটকে রাখার কাজটা খুব ভাল পারত। যে কারণে ওদের গুরুত্ব ছিল সীমিত ওভারের ক্রিকেটে। কিন্তু এখন ব্যাটসম্যানরা বুঝে গিয়েছে কী ভাবে অফস্পিনারদের বিরুদ্ধে রান করতে হবে। বেশির ভাগ অফস্পিনারই বলের গতি হেরফের করতেও ভুলে গিয়েছে।’’
তবে নেথান লায়নের প্রশংসাও শোনা গিয়েছে হেডেনের মুখে। নাগপুরের দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে অস্ট্রেলীয় অফস্পিনার লায়নের দুটো স্পেলের কথা বলেছেন হেডেন। ‘‘নেথান প্রথম স্পেলে ঘণ্টায় ৯০-৯২ কিলোমিটার গতিতে বল করেছে। আর দ্বিতীয় স্পেলে বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ৮০-৮২ কিলোমিটার। এই ভাবে বলের গতি বদল করায় নেথানকে খেলা কিন্তু খুব কঠিন হয়ে গিয়েছিল,’’ বলেছেন হেডেন।
ক্রিকেট জীবনে যিনি ভয়ডরহীন ব্যাটিং করার জন্য বিখ্যাত ছিলেন, সেই হেডেন ফিঙ্গার স্পিনারদের কাছ থেকে ঠিক এই সাহসটাই চান। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বল করার সময় সাহসের একটা প্রশ্ন এসে যায়। বোলাররা রান দেওয়ার ঝুঁকি নিতে চায় না। টেস্টে আবার এই ফিঙ্গার স্পিনাররাই উইকেট নেওয়ার জন্য ঝাঁপায়। তখন কিন্তু ওরা
বদলে যায়।’’ হেডেন শুধু যে এই সিরিজে ধারাভাষ্যকার হিসেবেই কাজ করছেন, তা নয়। অস্ট্রেলিয়া দলের জুনিয়র ক্রিকেটারদেরও সমানে পরামর্শ দিয়ে চলেছেন। এই জুনিয়রদের মধ্যে আছেন রবিবারের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক অ্যাশটন টার্নারও। তবে হেডেন বলছেন, ‘‘টার্নারের সাফল্যে আমার বিশেষ কোনও অবদান নেই। ছেলেরা সবাই খুব পরিশ্রম করছে। এই পরিশ্রমটাই ওদের খেলা বদলে দিচ্ছে।’’
টার্নারের ব্যাটিং ছাড়া আরও একটা ব্যাপারে খুশি হেডেন। কেদার যাদবকে এখন যে ভাবে খেলছেন অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানরা। সিরিজের প্রথম দুটি ওয়ান ডে-তে কেদার সফল হওয়ার পরে শেষ দুটো ম্যাচে এই ব্যতিক্রমী অ্যাকশনের অফস্পিনারের বিরুদ্ধে রান করেছেন অ্যারন ফিঞ্চ, উসমান খোয়াজা, পিটার হ্যান্ডসকম্বরা। হেডেনের মন্তব্য, ‘‘কেদারের মতো বোলার তখনই সাফল্য পাবে, যখন ও স্টাম্প টু স্টাম্প বল করবে। কিন্তু ফিঞ্চ ওকে অন্য লাইনে বল করতে
বাধ্য করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy