ধোনির সঙ্গে স্বস্তিক। ছবি স্বস্তিক দত্তচৌধুরীর সৌজন্যে।
সদ্য শেষ হয়েছে বিজয় হাজারে ট্রফির ঝাড়খণ্ড বনাম জম্মু এবং কাশ্মীরের খেলা। কল্যাণীর বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে খেলা শেষের পর আম্পারদের নির্দিষ্ট ঘরে তখন নিজের কিট গোছাচ্ছেন সেই ম্যাচের রিজার্ভ আম্পায়ার স্বস্তিক দত্তচৌধুরী। ঝাড়খণ্ডের টিম ম্যানেজার এসে কড়া নাড়লেন। ডাকছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ম্যানেজারের সঙ্গে গিয়ে দেখেন ধোনিও সদ্য জার্সি ছেড়ে গোছাচ্ছেন নিজের ব্যাগ। স্বস্তিককে ঢুকতে দেখেই উঠে দাঁড়ালেন বিশ্বকাপ জেতা ভারত অধিনায়ক। খোঁজ নিলেন শরীরের। জানতে চাইলেন বাড়ির কথা। ভারত অধিনায়কের ইমেজ ছেড়ে তখন তিনি পাশের বাড়ির ছেলে। সেটা ২০১৭ সাল। তবে এখনও সেই আন্তরিকতা চোখে ভাসে শান্তিপুরের হাটখোলা পাড়ার বাসিন্দা স্বস্তিক দত্তচৌধুরীর।
খেলার মাঠের দিকে ঝোকটা ছিল ছোটবেলা থেকেই। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই শান্তিপুরে খেলার মাঠে স্কোরার দায়িত্ব পালন করেছেন। বয়স ১৮ পার করে জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিযোগিতাতে আম্পায়ার হয়েছেন। জাতীয় স্কুল ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। আবার সিএবি পরিচালিত সুপার লিগ, প্রিমিয়ার লিগ, এএন ঘোষ ট্রফির মতো প্রতিযোগিতাতেও আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন। নাইট রাইডার্সের অনুশীলন ম্যাচেও একই দায়িত্ব পালন করেছেন স্বস্তিক। ম্যাচ খেলানোর জন্য বেরোতে হয় সাত সকালে। ভোর বেলা উঠে শান্তিপুর থেকে ট্রেন ধরে পৌছানো কলকাতায়। তারপর নির্দিষ্ট মাঠে। পেশায় বেসরকারি বিমা সংস্থার এজেন্ট বছর আটচল্লিশের স্বস্তিক এখন সিএবির গ্রেড ওয়ান আম্পায়ার। সেই সুত্রেই খেলার মাঠে দেখেছেন একাধিক তারকাকে। কালিস, রাসেল, সুনীলদের পাশাপাশি লক্ষ্মী, ঋদ্ধিমান সাহাদের দেখেছেন কাছ থেকে। কিন্তু ধোনির সঙ্গে সাক্ষাৎ তার কাছে এখনও অন্য স্মৃতি। এখনও আম্পায়ারিং করেন সিএবির নানা খেলায়। তবে এখন বন্ধ খেলা।
কল্যাণীতে বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে বিজয় হাজারে ট্রফির গ্রুপ লিগে ২০১৭ সালে ঝাড়খণ্ডের দু’টি ম্যাচ ছিল। একটি সার্ভিসেস এবং অপরটি জম্মু এবং কাশ্মীরের সঙ্গে। দু’টি ম্যাচেই জয়ী হয় ঝাড়খণ্ড। খেলার আগে হালকা আলাপ করেছিলেন ধোনির সঙ্গে। জানিয়েছিলেন রাঁচির সাউথ অফিসপাড়ায় তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি আছে। ধোনিও জানান, সেখানেই ছোটবেলায় খেলাধূলা করে এসেছেন তিনি। এরপরে দু’টি খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে নিজের ঘরে ডাকেন স্বস্তিককে। শান্তিপুরের হাটখোলা পাড়ায় নিজের বাড়িতে বসেই বলছেন, “খুব বড় মনের মানুষ। আমি ঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে আমায় অভ্যর্থনা করলেন। এতদূর থেকে গিয়ে আম্পায়ারিং করি শুনে বললেন, চালিয়ে যান। একদিন বড় জায়গায় পৌছবেন।” সঙ্গে আরও একটি গল্পও শোনালেন। সেই বিজয় হাজারে ট্রফিতেই। এক বার সজোরে আবেদন করেন ধোনি। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে থাকা ঝাড়খণ্ডের এক ফিল্ডার তখন জানান, এটা আউটই হবে। ধোনি কখনও ফালতু আবেদন করেন না। পরে দেখা গেল, আম্পায়ার ব্যাটসম্যানকে আউট দিয়েছেন। রিজার্ভ আম্পায়ার হিসাবে দু’টি ম্যাচেই মাঠের বাইরে থেকেই স্বস্তিক দেখেছেন ধোনিকে। বলছেন, আউটের আবেদন করলেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের পর অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখিনি।
সম্প্রতিই গ্লাভস তুলে রাখার কথা ঘোষণা করেছেন ধোনি। তা সংবাদমাধ্যমে দেখেছেন স্বস্তিক। তিনি বলছেন, “এই সিদ্ধান্ত তাঁর ব্যক্তিগত। তিনি মনে করেছেন তাই নিয়েছেন। তবে এক জন বড়মাপের খেলোয়ারের পাশাপাশি ভাল মনের মানুষ হিসাবে তাঁকে মনে রাখব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy