অপ্রতিরোধ্য: লাইপজ়িসের বিরুদ্ধে ম্যান ইউয়ের দ্বিতীয় গোল করার পথে র্যাশফোর্ড। বুধবার রাতে। এএফপি
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ৫ • লাইপজ়িস ০
বিধ্বংসী র্যাশফোর্ড। মানবিক র্যাশফোর্ড!
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লাইপজ়িসের বিরুদ্ধে বুধবার ৬৩ মিনিটে তিনি যখন প্রথম গোলদাতা মেসন গ্রিনউডের পরিবর্তে নামলেন, ১-০ এগিয়ে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। মিনিট দশেকের মধ্যেই শুরু হল মার্কাস র্যাশফোর্ড ঝড়। হ্যাটট্রিক করতে ম্যান ইউ তারকা সময় নিলেন মাত্র ১৬ মিনিট! র্যাশফোর্ড প্রথম গোল করেন ৭৪ মিনিটে। দ্বিতীয় গোল ৭৮ মিনিটে। গত মরসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে উঠে চমকে দেওয়া লাইপজ়িসের বিরুদ্ধে ৮৭ মিনিটে হ্যাটট্রিকের হাতছানি উপেক্ষা করে নিজে পেনাল্টি না মেরে এগিয়ে দিলেন সতীর্থ অ্যান্টনি মার্সিয়ালকে। দ্বিতীয়ার্ধের সংযুক্ত সময়ের হ্যাটট্রিক করেন র্যাশফোর্ড।
ম্যান ইউয়ের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিকের পরে তিনি বলেছেন, ‘‘ম্যানেজার আমাকে বলে দিয়েছিলেন, আক্রমণাত্মক খেলে ছন্দ বজায় রাখতে হবে।’’ পরে টুইটারে র্যাশফোর্ড লিখেছেন, ‘‘এই দিনটার জন্যই তো আমি অপেক্ষা করে ছিলাম।’’
শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও নায়ক ম্যান ইউ তারকা। করোনা অতিমারিতে বিপর্যস্ত ইংল্যান্ডে যখন লকডাউন চলছে, ক্ষুধার্ত শিশুদের মুখে খাদ্য তুলে দিয়েছিলেন তিনি। বাধ্য করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে সিদ্ধান্ত বদল করতে। কারণ, লকডাউনের জেরে ইংল্যান্ডের স্কুলগুলিতে বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। র্যাশফোর্ড প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ছোটবেলায় আমিও স্কুলের বিনামূল্যের খাদ্যের উপরেই নির্ভরশীল ছিলাম। আমার মা হাড়াভাঙা পরিশ্রম করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতেন। রাত আটটার আগে খাবার পেতাম না। স্কুলের দেওয়া খাবারই ছিল ভরসা। তাই আমি লক্ষ লক্ষ শিশুদের কষ্ট অনুভব করতে পারি।’’
ব্রিটিশ সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েই থেমে থাকেননি ২২ বছর বয়সি র্যাশফোর্ড। শিশুদের মুখে খাদ্য তুলে দেওয়ার জন্য তহবিল গড়ে তুলেছেন। এই উদ্যোগের জন্য সাম্মানিক মেম্বার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (এমবিই) পুরস্কারের জন্যও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। শিশুদের খাদ্যের অভাব পুরোপুরি দূর করার জন্য সরকারের কাছে যে দাবি জানিয়েছেন, তার সমর্থনে স্বাক্ষর সংগ্রহ করছিলেন। বুধবার রাতে লাইপজ়িসের বিরুদ্ধে ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ র্যাশফোর্ডের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অভিভূত ম্যান ইউ তারকা বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তটা স্থানীয় ব্যবসায়ী, খাদ্য ব্যাঙ্কের স্বেচ্ছাসেবক থেকে শিক্ষকদের। সমাজ তাদের প্রতি যে দায়বদ্ধতা দেখিয়েছেন তাতে আমাদের শিশুরা আপ্লুত। খুব সামান্য জিনিসও আমরা দিতে পেরেছি। এখনও আর কিছু দিতে পারব।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে এই উদ্যোগের সাক্ষী থাকতে পেরে আমি মুগ্ধ। ব্রিটেনবাসী হিসেবে আমি গর্বিত। আর ফুটবল আমার আবেগ। সারা দিনের পরিশ্রমের পরে সকলে যে ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তার জন্য কুর্নিশ জানাই। আপনারাই আসল মহাতারকা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy