ড্রেসিংরুমে মহম্মদ সালাহদের উল্লাস। ছবি: টুইটার
রোমা ৪ : লিভারপুল ২
(দুই পর্ব মিলিয়ে ৭-৬ জয়ী লিভারপুল)
রুদ্ধশ্বাস দ্বৈরথে নাটকীয় জয়। অথচ স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়েই মাঠ ছাড়লেন এডেন জেকোরা!
সপ্তাহখানেক আগে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বার্সেলোনাকে ছিটকে দিয়েছিল এ এস রোমা। সেই জয় আত্মবিশ্বাস কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল রোমার ফুটবলার ও সমর্থকদের। তাই সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে লিভারপুলের বিরুদ্ধে ২-৫ হারের পরেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন তাঁরা। আশা ছিল, বুধবার রাতেও ঘরের মাঠে ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে ফাইনালে উঠবেন জেকোরা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ওঠার জন্য লিভারপুলের বিরুদ্ধে ৩-০ জিততে হত রোমাকে। কারণ, অ্যাওয়ে ম্যাচে হারলেও দু’টো গোল করেছিলেন স্তেফান আল সারাউইরা। কিন্তু ম্যাচের নয় মিনিটেই সাদিও মানে গোল করে এগিয়ে দেন লিভারপুলকে। যদিও ছয় মিনিটের মধ্যেই রোমা ম্যাচে ফিরে এসেছিল লিভারপুল ডিফেন্ডার জেমস মিলনারের আত্মঘাতী গোলে। পেনাল্টি বক্সের মধ্যে থেকে দেয়ান লভরেনের নেওয়া শট মিলনারের গায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যায়। যদিও মিনিট দশেকের মধ্যেই গোল করে রোমা সমর্থকদের উল্লাস থামিয়ে দেন জর্জেনিও ওয়েনল।
প্রথমার্ধে ১-২ পিছিয়ে যাওয়ার পরে অনেকেই ভেবেছিলেন, কিয়েভে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হতে চলেছে লিভারপুল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার পরেই নাটকীয় ভাবে বদলে যায় ছবিটা। বার্সেলোনার বিরুদ্ধে যেখানে শেষ করেছিলেন জেকোরা, বুধবার রাতে ঘরের মাঠে যেন সেখান থেকেই শুরু করেছিলেন। ৫২ মিনিটে গোল করে সমতা ফেরান জেকো। কিন্তু ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখার জন্য অন্তত আরও তিনটে গোল করতেই হত রোমাকে। ৮৬ মিনিটে গোল করেন রাজা নাইনগুলান। সংযুক্ত সময়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন রোমা ডিফেন্ডার। কিন্তু দুই পর্ব মিলিয়ে ৭-৬ জিতে ১১ বছর পরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে লিভারপুল। ২০০৭ সালে এসি মিলানের বিরুদ্ধে হেরে খেতাব হাতছাড়া করেছিলেন স্টিভন জেরার-রা। এ বার কি লিভারপুল পারবে রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে ১৩ বছর পরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে?
বুধবার রাত থেকেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বনাম মহম্মদ সালাহ দ্বৈরথ নিয়ে উত্তাপ বাড়তে শুরু করে দিয়েছে বিশ্বফুটবলে। ফুটবল পণ্ডিতরা অবশ্য উদ্বিগ্ন রোমার বিরুদ্ধে লিভারপুল ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতায়। য়ুর্গেন ক্লপের ব্যাখ্যা, ‘‘অনেক ফুটবলারই প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল খেলছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ওরা কিছু স্নায়ুচাপে ভুগছিল। তবে আমরা যোগ্য দল হিসেবেই ফাইনালে উঠেছি। ভাগ্য আমাদের সঙ্গে ছিল।’’ সালাহ দাবি করলেন, রোনাল্ডোর সঙ্গে তাঁর কোনও প্রতিযোগিতা নেই। পুরনো দলের স্বপ্নভঙ্গ করে লিভারপুল তারকা বলেছেন, ‘‘ফাইনালটা হবে লিভারপুল ও রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে। রোনাল্ডো বনাম সালাহ নয়। ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব দলের সবার।’’রোমা শিবির ক্ষুব্ধ রেফারিং নিয়ে। যদিও রোমা কোচ ইউসেবিও দি ফ্রান্সিসকো বলেছেন, ‘‘আমরাই ওদের দু’টি গোল উপহার দিয়েছি। নিজেদের ভুল থেকেও অনেক কিছু শিখতে হবে।’’
ফাইনালে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর রিয়াল মাদ্রিদকেই খেতাব জেতার লড়াইয়ে অনেকে এগিয়ে রাখছেন। তবে লিভারপুল সমর্থকদের একটা তথ্য ভরসা দিচ্ছে। রিয়াল শেষ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে হেরেছিল ১৯৮১ সালে লিভারপুলের বিরুদ্ধেই।
রোমা: অ্যালিসন বেকার, আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি, কোস্তাস মানোলাস, ফেদ্রিকো ফাজিয়ো, আলেকজান্ডার কোলারভ, লোরেঞ্জো পেলেগ্রিনি (জেঙ্গিস উন্দার), দানিয়েল দে রোসি (ম্যাক্সিম গোনালোনস), রাজা নাইনগুলান, পাত্রিক সিক, স্তেফান আল সারাউই (মির্কো আন্তোনুচ্চি) ও এডেন জেকো।
লিভারপুল: লরিস কারিউস, আলেকজান্ডার আর্নল্ড (নাথাইনেল ক্লাইন), ভিরজিল ফান দিক, দেয়ান লভরেন, অ্যান্ডি রবার্টসন, জর্জেনিও ওয়েনল, জর্ডান হেন্ডারসন, জেমস মিলনার, মহম্মদ সালাহ, রবের্তো ফির্মিনহো (ডমিনিক সোলানকি) ও সাদিও মানে (রাগনার ক্লাভান)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy