আন্তোনিও লোপেজ হাবাসকে কলকাতার জার্সিতে আইএসএল-থ্রি তে নাও দেখা যেতে পারে। মঙ্গলবার পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে স্প্যানিশ কোচের এটিকেতে ফেরার সম্ভাবনা প্রতিদিনই কমছে।
কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্ট চেয়েছিলেন হাবাসকে জানুয়ারির শুরুতে চুক্তিবদ্ধ করে ফুটবলারদের ব্যাপারে তাঁর পরামর্শ নিয়ে এগোতে। কিন্তু পরিবর্তিত অবস্থায় তা হচ্ছে না। হিউম-দ্যুতি-অমরিন্দরদের নেওয়ার ব্যাপারটিও তাই ঝুলে রয়েছে। নতুন কোচ যদি আসেন তা হলে তাঁর পছন্দ মতোই টিম হবে ভেবে, সব কিছু স্থগিত রেখে দেওয়া হয়েছে।
প্রথম বছর চ্যাম্পিয়ন করার পর দ্বিতীয় বছরে আটলেটিকো দে কলকাতাকে শেষ চারে তুলেছিলেন হাবাস। এবং তাঁর পর তিনি যে টাকা কলকাতার তিন নম্বর মরসুমে কোচিং করানোর জন্য দাবি করেছেন, তা প্রায় দ্বিগুণ। জানা গিয়েছে, জিকোর সমপরিমাণ টাকা দাবি করেছেন হিউম-দ্যুতিদের কোচ। যা দিতে কোনওমতেই রাজি নন এটিকের টিম ম্যানেজমেন্ট। তাঁরা একান্ত আলোচনায় ঠিক করেছেন কিছুতেই কোচের বাজেট আকাশছোঁয়া করবেন না। সে ক্ষেত্রে টিমের অন্যতম মালিক আটলেটিকো দে মাদ্রিদের কর্তাদের বলা হবে, হাবাসের জায়গায় নতুন কোচ পাঠাতে।
এফসি গোয়ার কোচ জিকো চার মাসের জন্য পান প্রায় ছয় কোটি টাকা। আইএসএলের সফল কোচ হলেও ধারে এবং ভারে জিকোর পর্যায়ে পড়েন না হাবাস। তবুও তিনি এত টাকা দাবি করায় চমকে গিয়েছেন কলকাতার কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘ছয় কোটি দিতে হলে হাবাসকে কেন নেব? বিপণনের ক্ষেত্রে জিকো তুলনায় অনেক বেশি বিপণনযোগ্য। তা হলে জিকোর মতো কাউকে নেব।’’ হাবাসের এই দাবির কারণ, তাঁকে জিকোর সমপরিমাণ টাকা দিতে চাইছে আইএসএলের অন্য ক্লাব এফ সি পুণে সিটি। মুম্বইও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তাদের প্রস্তাবও বেশ ভাল। সেটাই মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে ষাটোর্ধ্ব কলকাতা কোচকে। হাবাসের ব্যাপারে এখনই সরকারি ভাবে অবশ্য মুখ খুলতে নারাজ কলকাতার কর্তারা। বরং বিষয়টা ‘অনেক সময় আছে’ বলে চেপে যেতে চাইছেন তাঁরা। ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত বলে এড়িয়ে যেতে চাইছেন প্রসঙ্গ। কিন্তু ঘটনা হলে, ক্রিসমাসের ছুটি কাটাতে যে দিন মাদ্রিদ রওনা হয়ে যান হাবাস, সে দিন কলকাতার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল জানুয়ারির শেষে অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে শহরে আসবেন হাবাস। এটিকে সচিব সুব্রত তালুকদার এ দিন বললেন, ‘‘মরসুম তো অনেক দূরে। এখন এসে কী করবেন উনি? কিছু দরকার হলে ওঁর সঙ্গে আলোচনা করে নেব।’’ তাঁর দাবি গত দু’বছরের কোচের সঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে সে ভাবে কোনও আলোচনা হয়নি। সুব্রতবাবু বললেন, ‘‘এক বার চ্যাম্পিয়ন, পরের বার সেমিফাইনাল। ওর মাইনে তো পনেরো-কুড়ি শতাংশ বাড়বেই। সেটা বাড়াতে তো আমরা তৈরি।’’ সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, ‘‘গতবারও হাবাসের সঙ্গে সমস্যা হয়েছিল। পরে মিটেও গিয়েছিল। এ বারও সমস্যা মিটে যাবে।’’
জানা গিয়েছে, আপাতত পুণের দিকেই ঝুঁকে রয়েছেন অর্ণব-নাতোদের কোচ। ডেভিড প্ল্যাটের ছেড়ে যাওয়া চেয়ারে বসতে হলে হাবাসকে অবশ্য ছাড়তে হবে আটলেটিকো দে মাদ্রিদের চাকরিও। কারণ এটিকের অন্যতম অংশীদার মাদ্রিদের আটলেটিকো। কলকাতাকে চার মাস কোচিং করানোর পর বছরের বাকি সময়টা মাদ্রিদের টিমের জুনিয়র দলকে কোচিং করান হাবাস। এখন যেটা করছেন। পুণে বা মুম্বইয়ের কোচ হলে সেটা সম্ভব নয়। কলকাতার কর্তারা সে জন্যই আশায় আছেন, এই বয়সে এসে হাবাস বড় কোনও ঝুঁকি নেবেন না। তা ছাড়া চার মাস আইএসএল কোচিং করে বাকি সময় তিনি কী করবেন? তাঁদের ধারণা শেষ পর্যন্ত কুড়ি-পঁচিশ শতাংশ মাইনে বাড়িয়ে থেকে যাবেন হাবাস। এ ছাড়া কলকাতার মানুষের আবেগের কথাও তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে বারবার। পুণেতে গিয়ে যা তিনি পাবেন না। হাবাস এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। ই-মেলে পাঠানো প্রশ্নেরও কোনও জবাব দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy