Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
James Anderson

সর্বকালের সেরা ওভারের দৌড়ে অ্যান্ডারসন

মঙ্গলবার চেন্নাইয়ে অ্যান্ডারসনের শিকার ছিলেন শুভমন গিল এবং অজিঙ্ক রাহানে।

তুলনা: মাইকেল হোল্ডিং, অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের পাশে বসানো হচ্ছে জিমি অ্যান্ডারসনের ওভারকে। ফাইল চিত্র

তুলনা: মাইকেল হোল্ডিং, অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের পাশে বসানো হচ্ছে জিমি অ্যান্ডারসনের ওভারকে। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:২৭
Share: Save:

জেমস অ্যান্ডারসনের করা একটা ওভার ঝড় তুলেছে ক্রিকেট দুনিয়ায়। কেউ, কেউ বলছেন, অ্যান্ডারসনের করা ওই ওভারটি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ওভার। তুলনায় উঠে আসছে দুটি ওভার। ১৯৮১ সালে ব্রিজটাউনে করা মাইকেল হোল্ডিংয়ের ছ’টা বল। যেখানে ব্যাটসম্যান ছিলেন জেফ বয়কট। অন্যটি, ২০০৫ সালে অ্যাশেজে অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের করা ওভার। যেখানে ফ্লিনটফ তুলে নেন জাস্টিন ল্যাঙ্গার এবং রিকি পন্টিংকে।


মঙ্গলবার চেন্নাইয়ে অ্যান্ডারসনের শিকার ছিলেন শুভমন গিল এবং অজিঙ্ক রাহানে। রিভার্স সুইংয়ে দু’জনেরই স্টাম্প ছিটকে দেন ইংল্যান্ডের এই ৩৮ বছর বয়সি পেসার। টেস্ট ম্যাচের ছবিটাও বদলে যায় ওই একটা ওভারে। ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট এসে বলে যান, তিনি যে সব ম্যাচে খেলেছেন, সেখানে কখনও এ রকম একটা ওভার দেখেননি। রুটের কথায়, ‘‘২০০৫ সালে ফ্লিনটফের ওই ওভারটার কথা মনে করিয়ে দিল জিমি।’’


ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যমে অ্যান্ডারসনের এই ওভারটার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে হোল্ডিং এবং ফ্লিনটফের ওভার দুটোর। ব্রিজটাউনে বয়কটকে ছ’টা বল করেছিলেন হোল্ডিং। প্রতিটা বলই আগেরটার চেয়ে বিষাক্ত ছিল। শেষ বলে ইংল্যান্ড ওপেনারের অফস্টাম্প ছিটকে দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার। পরে হোল্ডিং বলেছিলেন, ওই ওভারটা সে দিনের খেলারই দ্রুততম ওভার ছিল না! শুনে এখন অনেক ক্রিকেটারই অবিশ্বাসের হাসি হাসেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ, কেউ বলেছিলেন, ‘‘সে দিন এত জোরে বল করেছিল হোল্ডিং, যে দেখাই যায়নি। প্রতিটা ডেলিভারিতে সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল বয়কট। শেষ বলে অফস্টাম্পটা ছিটকে উইকেটকিপারের পিছনে চলে যায়। দর্শকরা পাগল হয়ে গিয়েছিল।’’


এজবাস্টন টেস্টে ফ্লিনটফ দ্বিতীয় বলে বোল্ড করে দিয়েছিলেন ল্যাঙ্গারকে। আর ষষ্ঠ বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান পন্টিং। আউট হওয়ার পরে প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের মন্তব্য ছিল, এত ভাল ফাস্ট বোলিং স্পেল তিনি আগে কখনও খেলেননি। অথচ একটা নো বল-সহ মাত্র পাঁচটি ডেলিভারি খেলতে হয়েছিল পন্টিংকে!


এই তিনটে ওভারের তুলনা উঠলেও একটা ব্যাপারে অ্যান্ডারসনকে এগিয়ে রাখছেন অনেকেই। সেটা হল, প্রথম দুটোর ক্ষেত্রে নিজের ঘরের মাঠে বল করেছিলেন বোলাররা। বার্বেডোজে হোল্ডিং আর বার্মিংহামে ফ্লিনটফ পেয়েছিলেন বিপুল দর্শক-সমর্থন। ইউটিউবে হোল্ডিংয়ের ওই ওভারের ভিডিয়োয় দেখা যায়, কী ভাবে ফেন্সিং টপকে গ্যালারিতে ঢুকে পড়ছেন দর্শকরা। আর এজবাস্টনের হোলিস স্ট্যান্ড থেকে সে দিন মাঠ কাঁপানো গর্জন উঠেছিল ফ্লিনটফের জন্য।


অ্যান্ডারসনকে কিন্তু বল করতে হয়েছে শূন্য গ্যালারিতে। আর এমন একটি মাঠে যাকে স্পিনের দুর্গ বলেই মনে করা হয়। কিন্তু সেখানেও রিভার্স সুইংয়ের জাদুতে চমকে দিয়েছেন তিনি। লাঞ্চের আগে অ্যান্ডারসনের বোলিং স্পেল ছিল: ৫-৩-৬-৩। ওই একটা স্পেলই ভারতকে টেস্ট থেকে ছিটকে দেয়।
শুধু চেন্নাইয়ে হারানোই নয়, ভারতের বিরুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রেই ঘাতকের ভূমিকা নিয়েছেন অ্যান্ডারসন। ইংল্যান্ডের মাটিতে তো বটেই, ভারতের মাটিতেও।

২০০৬ সালের মুম্বইয়ে বা ২০১২ সালে কলকাতায় অ্যান্ডারসনই দু’দলের মধ্যে তফাত করে দিয়েছিলেন। মহেন্দ্র সিংহ ধোনিও তখন সে কথা স্বীকার করে নেন।
ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্ট এখন উপমহাদেশের মাটিতে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে অ্যান্ডারসন এবং স্টুয়ার্ট ব্রডকে খেলাচ্ছে। যে কারণে চেন্নাইয়ের দ্বিতীয় টেস্টে অ্যান্ডারসন খেলবেনই, এ কথা বলা যাচ্ছে না। ইংল্যান্ডের সর্বকালের সফলতম বোলারও সে কথা জানেন। আগের দিন সাংবাদিকদের অ্যান্ডারসন বলেছিলেন, ‘‘আমি পরের টেস্ট খেলতে তৈরি। কিন্তু জানি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পেসারদের খেলানো হচ্ছে। তাই টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’’ বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে ইংল্যান্ড কোচ ক্রিস সিলভারউড ইঙ্গিত দিয়েছেন, অ্যান্ডারসনের খেলা নিশ্চিত নয়। প্রশ্নের জবাবে কোচ বলেন, ‘‘এই নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা সব রকম বিকল্পই হাতে রাখতে চাই। দেখা যাক কী হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

cricket James Anderson India vs England 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy