বিষণ্ণ: মুম্বইয়ের কাছে হার মেনে নিতে পারছেন না তিরি। ফেসবুক
ইন্ডিয়ান সুপার লিগে এ বারের সেরা ফুটবলার ও গোলকিপার তাঁরা। কিন্তু ফতোরদা স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে সেই পুরস্কার নিয়েও যন্ত্রণাবিদ্ধ মুখে মাঠ ছেড়েছেন এটিকে-মোহনবাগানের দুই ফুটবলার রয় কৃষ্ণ ও অরিন্দম ভট্টাচার্য।
কৃষ্ণের আক্ষেপ, প্রথমে গোল করে আইএসএল ট্রফি হাতে চলে আসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েও তা হাতছাড়া হওয়া। আর অরিন্দমের দুঃখ, মুম্বই সিটি এফসি-র দু’টি গোলের ক্ষেত্রেই তাঁর দিকে আঙুল উঠছে। শনিবার খেলা শেষ হতে মাঠেই উৎসবে মেতে ওঠেন মুম্বই সিটি এফসি-র অ্যাডম লি ফন্দ্রে, বিপিন সিংহেরা। তাই মাঠে বেশিক্ষণ থাকেননি প্রীতম কোটাল, ডেভিড উইলিয়ামসেরা। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের পরেই ড্রেসিংরুমে ঢুকে পড়েন তাঁরা। সেখান থেকে চুঁইয়ে বেরিয়ে আসা খবর অনুযায়ী, ড্রেসিংরুমে কান্নায় ভেঙে পড়েন অরিন্দম। কৃষ্ণ-সহ সতীর্থেরা তাঁকে শান্ত করেন। শোনা যাচ্ছে, ড্রেসিংরুমে হাবাস কী ভাবে ট্রফি জয়ের কাছে এসেও নিজেদের ভুলে খোয়াতে হল, তা ব্যাখ্যা করেন। সবুজ-মেরুন শিবিরের ভারতীয় ও বিদেশি ফুটবলারেরা মাথা নিচু করে বসেছিলেন। হোটেলে ফিরেই রয় কৃষ্ণ থেকে শেখ সাহিল যে যার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। কেউ
নৈশাহারে আসেননি।
কোচ হাবাস থেকে সব ফুটবলারই ক্ষুব্ধ রেফারি তেজস নাগভেঙ্কর দ্বিতীয়ার্ধে মুম্বইয়ের পরিবর্ত হিসেবে নামা ডিফেন্ডার মহম্মদ রাকিপের আত্মঘাতী গোল বাতিল করায়। তাঁদের যুক্তি, জাভি হার্নান্দেসের ফ্রি-কিক সন্দেশ জিঙ্ঘন গোড়ালি দিয়ে পাস দিয়েছিলেন। সেই বল বিপন্মুক্ত করতে গিয়েই আত্মঘাতী গোল করেন রাকিপ। এটিকে-মোহনবাগান শিবিরের দাবি, আত্মঘাতী গোলের ক্ষেত্রে কী ভাবে অফসাইড হতে পারে? সংশ্লিষ্ট গোলের সময় রয় কৃষ্ণ অফসাইডে ছিলেন বলে পতাকা তুলেছিলেন সহকারী রেফারি। এটিকে-মোহনবাগান শিবিরের দাবি, রয় কৃষ্ণ ওই বল তাড়া করেননি বা বল র্স্পশ করেননি। এ বারের প্রতিযোগিতায় বহু বার দেখা গিয়েছে অফসাইডে থাকলেও সংশ্লিষ্ট ফুটবলার বল স্পর্শ না করায় বা গোলের দিকে ধাবমান সেই বলকে তাড়া না করায় অফসাইড ডাকা হয়নি। তা হলে কী ভাবে মুম্বইয়ের ওই আত্মঘাতী গোল বাতিল হল? এটিকে-মোহনবাগান দল যদিও এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ জানায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ গোটা দলই। তবে বিপক্ষের ফুটবলার অমেয় রানাওয়াড়ে সুস্থ হয়ে হোটেলে ফেরায় সবুজ-মেরুন শিবিরের ফুটবলরারও খুশি। কারণ অনেকে তাঁর সঙ্গে অতীতে এক দলে খেলেছে।
গত পাঁচ মাস জৈব সুরক্ষা বলয়ে রয়েছেন। তাই এ দিন সকাল থেকেই গোয়া থেকে বাড়ির উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন ফুটবলারেরা। বিকেলেই কলকাতা ফেরেন প্রীতম কোটাল, প্রবীর দাস-সহ বাঙালি ফুটবলারেরা। তবে অরিন্দম ভট্টাচার্য দলের সঙ্গে আসেননি। তিনি গোয়া থেকে গিয়েছেন। বিকেলে উড়ানে স্পেনের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান কোচ হাবাস, জাভি হার্নান্দেস, তিরি-সহ স্পেনীয় ফুটবলার ও সহকারীরা। ডেভিড উইলিয়ামস সোমবার ভারত ছাড়বেন। রয় কৃষ্ণ গোয়া থেকে মুম্বই হয়ে ফিজি উড়ে যাবেন মঙ্গলবার।
বিদেশি ফুটবলারদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি যন্ত্রণাবিদ্ধ ছিলেন তিরি। ফাইনালে মুম্বই সমতা ফিরিয়েছিল তাঁর আত্মঘাতী গোল থেকেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় সমর্থকদের উদ্দেশে, তাঁর বার্তা, ‘‘বিশ্বাস হচ্ছে না। এটাই ফুটবলের মজা। জিতলে সেটা যেমন আমাদের সবার, ঠিক তেমনই এই হার আমাদের সবাইকেই সমান ভাবে ব্যথিত করছে। আমার ভুলের জন্য সবার সমালোচনা মাথা পেতে নিচ্ছি। এই সমালোচনা ফুটবলার হিসেবে আমাকে অনেক শক্ত করবে। তবে মাঠে সবাই ১০০ শতাংশ দিয়েছিলাম। যাঁরা খারাপ সময়ে আমাদের সমালোচনা করছেন, তাঁদের বলব দুঃখিত। তবে তিরিকে আগামী দিনে আরও ভাল ভাবে পাবেন। এই দুর্দিনেও যাঁরা পাশে থাকছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy