অতিথি: গুয়াহাটিতে সংবর্ধিত হরভজন ও ইরফান। রবিবার। পিটিআই
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তাঁর হারিয়ে যাওয়ার পিছনে অনেকেই এখনও গ্রেগ চ্যাপেলের নামটা করেন। অভিযোগ হচ্ছে, চ্যাপেলের দোষেই নাকি শেষ হয়ে গিয়েছিলেন ইরফান পাঠান। কিন্তু স্বয়ং ইরফান সেই মতবাদের পক্ষে নন। ভারতের প্রাক্তন অলরাউন্ডার মনে করেন, চ্যাপেলকে সামনে রেখে আসল কারণটা আড়াল করা হয়েছে।
অবসর ঘোষণার পরের দিন সংবাদ সংস্থাকে ইরফান বলেছেন, ‘‘এই নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। গ্রেগ চ্যাপেলের নাম বলে আসল ব্যাপারটা আড়াল করা হয়েছে।’’ একটা সময় ক্রিকেট মহলে বলা হত, চ্যাপেলের পরামর্শ মেনে চলতে গিয়েই ইরফান তাঁর দুরন্ত সুইং হারিয়ে ফেলেন। যে প্রসঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী এই অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘এমন একটা ধারণা তৈরি করা হয়েছিল যে, ইরফান নাকি সুইংটা হারিয়ে ফেলেছে। সবাইকে বুঝতে হবে প্রথম ১০ ওভারে যে সুইংটা পাওয়া যায়, সেটা পরের দিকে পাওয়া যায় না। আমি কিন্তু সুইংটা ঠিকই পাচ্ছিলাম।’’
ইরফানের বিরুদ্ধে আরও একটা অভিযোগ উঠেছিল যে, ক্রমশ তাঁর পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছে। এই নিয়েও প্রাক্তন বাঁ-হাতি পেসারের ব্যাখ্যা, ‘‘জানি আমার পারফরম্যান্স নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। কিন্তু দলে আমার কাজটা অন্য ছিল। আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রান আটকানোর। কারণ আমি নতুন বলে নয়, ওয়ান চেঞ্জ হিসেবে বল করতে আসছিলাম। শুরুতে দু’জন ভারতের হয়ে বোলিং করার পরে। আমাকে বলেই দেওয়া হয়েছিল, এটাই তোমার কাজ।’’ এর পরেই ইরফান যোগ করেন, ‘‘মনে আছে, ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে একটা ম্যাচ জেতার পরে আমাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। বলতে পারেন ম্যাচ জেতার পরে কোন ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়া হয়েছে?’’ ইরফান যে সময়ের কথাটা বলছেন, ওই সময়ে ওয়ান ডে-তে ভারতের অধিনায়ক ছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।
ভারতের হয়ে ২৯টি টেস্ট, ১২০ ওয়ান ডে এবং ২৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ইরফান। এর মধ্যে ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে ম্যাচের সেরা ক্রিকেটারও হয়েছিলেন তিনি। ভারতের কোনও কোনও প্রাক্তন ক্রিকেটার মনে করেন, ইরফানের আরও বেশি দিন খেলা উচিত ছিল। কিন্তু ফর্ম এবং ফিটনেস সমস্যা ছিটকে দেয় তাঁকে। ২০০৮ সালের আইপিএলের পরে এ-ও বলা হয়েছিল, ইরফান আর তিন ধরনের ক্রিকেট খেলতে আগ্রহী নন। যে অভিযোগের জবাবে ইরফান এখন বলছেন, ‘‘আমি সব সময়ই তিন ধরনের ক্রিকেটে খেলতে চেয়েছি। ২০০৯-২০১০ সালে আমার পিঠে চোট লাগে। নানা ধরনের স্ক্যান করিয়েছিলাম আমি। কিন্তু তখন অত আধুনিক সরঞ্জাম ছিল না যাতে চট করে চোটের কারণ ধরা পড়ে। পরে বোঝা যায়, আমার পিঠের পাঁচ জায়গায় চিড় ধরেছে। দু’বছর ধরে পিঠের চোটে ভুগতে থাকি। কিন্তু কখনও রঞ্জি ট্রফি খেলা থেকে সরে আসিনি।’’
ইরফানের প্রশ্ন, ‘‘আমি ওই অবস্থাতেও রঞ্জি ট্রফিতে বরোদার নেতৃত্ব দিয়েছি। যে ছেলেটা আইপিএলে ভাল খেলছিল, ভারতের হয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভাল খেলছিল, সে কেন কষ্ট করে লাল বলের ক্রিকেট খেলে যাবে? কারণ, আমি টেস্ট ক্রিকেট ভালবাসতাম। এবং চেয়েছিলাম ভারতের টেস্ট দলে ফিরে আসতে।’’
ইরফানের মুখে শোনা গিয়েছে তাঁর তিন প্রাক্তন অধিনায়কের কথা। এঁরা হলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অনিল কুম্বলে এবং রাহুল দ্রাবিড়। ইরফানের কথায়, ‘‘আমি যখন প্রথম ভারতীয় দলে আসি, সৌরভ অধিনায়ক ছিল। ও জানত, অস্ট্রেলিয়ায় নতুন বলে আমি ভাল করব। সৌরভ আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছিল। ওটাই শুরু ছিল।’’
দ্রাবিড় নিয়ে ইরফান বলেছেন, ‘‘দ্রাবিড় অধিনায়ক হওয়ার পরে আমাকে আরও ভাল ভাবে কাজে লাগায়। নতুন বলে বল দেওয়া ছাড়াও ব্যাটিং অর্ডারে দ্রাবিড় আমাকে উপরের দিকে তুলে এনেছিল।’’ আর কুম্বলে নিয়ে প্রাক্তন পেসারের মন্তব্য, ‘‘সচিন পাজি ছাড়াও অনিল ভাইকে আমি পেয়েছিলাম। যে আমাকে ঠিক পরামর্শটা দিত। অনিল ভাইয়ের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতাটা অসাধারণ ছিল।’’ শুধু ধোনি নিয়ে ইরফানের মুখ থেকে কিছু শোনা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy