উইকেট নেওয়ার পর সুযশ শর্মা এবং রিঙ্কু সিংহ। ছবি: পিটিআই
খোঁজ, খোঁজ রব। কে এই সুযশ শর্মা। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত একটি জায়গায় তাঁর সম্পর্কে রয়েছে মাত্র সাতটি তথ্য। রয়েছে তাঁর নাম, বয়স, জন্মতারিখ, ডান হাতে ব্যাট করেন, লেগব্রেক বল করেন, আদতে বোলার এবং তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলেন। হ্যাঁ, একটিই দলের হয়ে খেলেছেন তিনি। সেটি নাইট রাইডার্স। আর কোনও দল নেই তাঁর। সেই কারণে যত বার উইকেট নিয়েছেন, তত বার জার্সিতে নাইটদের লোগোটিকে দেখিয়েছেন এবং দু’হাত দিয়ে বুঝিয়েছেন তিনি আছেন।
সুযশ দিল্লির ছেলে। সেই রাজ্যের অনূর্ধ্ব-২৫ দলে খেলেছেন। রাজ্যস্তরের কোনও দলে খেলেননি। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে আইপিএলে হারিয়ে চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত বলেন, “সুযশ ট্রায়ালে এসেছিল। সেখানেই দেখি যে ও দু’দিকেই বল ঘোরাতে পারে। সেই দেখেই ওকে নেওয়া। অভিজ্ঞতা কম, কিন্তু প্রতিভা রয়েছে সুযশের মধ্যে।” ১৯ বছরের সুযশের কাঁধ পর্যন্ত চুল। তবে সেটা ২০০৭ সালের মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো নয়। ব্যাকব্রাশ করা চুল এবং মুখে মিষ্টি হাসি নিয়ে বল করেন তিনি। বলটা ছাড়ার সময় সুযশের মুখ আকাশের দিকে উঠে যায়। যা দেখে অনেকে বলছিলেন যে, ও তো দেখছেই না বলটা কোথায় পড়ছে। তবে সুযশ জানেন।
কলকাতা ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নেমেছিলেন। নাইট নীতীশ রানা যদিও টসের সময়ই বলে দিয়েছিলেন যে, সুযশ প্রথম একাদশে রয়েছেন। যদিও পরে দেখা যায় প্রথম একাদশে রাখা হয়নি তাঁকে। কলকাতা বল করার সময় নামানো হয় তাঁকে। তিনি কোথা থেকে এসেছেন তা জানেন না দলের অধিনায়কও। ম্যাচ শেষে নীতীশ বলেন, “আমি নিজেও জানি না ও কোথা থেকে এসেছে। দিল্লির ছেলে ও, কিন্তু আমি কখনও ওকে দেখিনি। তবে খুব মজার ছেলে। সব সময় মাতিয়ে রাখে।”
নিলামে ২০ লক্ষ টাকায় সুযশকে কিনেছিল কলকাতা। নাইটরা এমন অনামি অনেক ক্রিকেটারকেই কিনে থাকে। বড় উদাহরণ বরুণ চক্রবর্তী। তাঁর নামও আগে সে ভাবে শোনা যায়নি। তেমন ভাবেই এলেন সুযশ। প্রথম বার খেলতে নামলেন এবং মাতিয়ে দিলেন। ইডেনের মাটিতে অভিষেক হল তাঁর। সে যতই ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নামুন না কেন। আইপিএলে একটি ম্যাচ তো খেলা হয়ে গেল তাঁর। দীনেশ কার্তিকের মতো ক্রিকেটারের উইকেট নিলেন। ফেরালেন অনুজ রাওয়াত এবং করণ শর্মাকেও। সুযশের উপর ভরসা করে রিভিউও নিলেন নীতীশ। সেখানেও অধিনায়ককে হতাশ করেননি তরুণ স্পিনার।
ঘরোয়া ক্রিকেটকে চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের মতো কেউ চেনেন না বলে দাবি করেন অনেকে। তাঁর মন জয় করে নিয়েছেন সুযশ। তাঁর ক্রিকেট খেলতে আসা দাদার জন্য। ব্যাটার হিসাবে কেরিয়ার শুরু করলেও এখন তিনি লেগস্পিনার। কলকাতা তৃতীয় স্পিনার হিসাবে ভাবছে তাঁকে। অর্থাৎ, সুনীল নারাইন এবং বরুণ চক্রবর্তীর পর কোনও স্পিনার নেওয়ার প্রয়োজন হলে সুযশকে নেবে কলকাতা।
লম্বা চুল, মিষ্টি হাসি নিয়ে সুযশ মাঠে নামবেন। উইকেট নেবেন আর কলকাতার লোগো দেখিয়ে ডাগআউটের দিকে সংকেত দেবেন তিনি আছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy