বিরাট কোহলি। ছবি: পিটিআই।
অনেক দিন বাদে পুরনো বিরাট কোহলিকে দেখতে পেলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। ছন্দে ফিরে এলেন ‘চেজ় মাস্টার’। সোমবার পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ১৬তম ওভারে তিনি আউট হওয়ার পর মনে হয়েছিল হারবে বেঙ্গালুরু। তা হল না দীনেশ কার্তিকের সৌজন্যে। অভিজ্ঞ ব্যাটার শেষ দিকে একার হাতে জিতিয়ে দিলেন বেঙ্গালুরুকে। কোহলির দাপটের দিনে নজর ঘুরিয়ে দিলেন নিজের দিকে। যোগ্য সঙ্গত দিলেন মহীপাল লোমরোরও। আইপিএলে প্রথম জয় পেল বেঙ্গালুরু। সোমবার ঘরের মাঠে তারা চার উইকেটে হারাল পঞ্জাবকে।
১৭৭ রান তাড়া করতে নেমে বেঙ্গালুরুর হয়ে ভাল শুরু করেন কোহলি। দ্বিতীয় বলে তাঁর ক্যাচ পড়ে। স্যাম কারেনের বল অফস্টাম্পের বাইরে ছিল। কোহলির ব্যাটে লেগে উড়ে যায় জনি বেয়ারস্টোর দিকে। ইংরেজ ক্রিকেটার নড়তে দেরি করায় বল তাঁর হাতে লেগে চার হয়ে যায়। আর সুযোগ দেননি কোহলি। সেই ওভারে আরও তিনটি চার মারেন। তবে তৃতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু। কাগিসো রাবাডার বল লেগ সাইড দিয়ে মারতে গিয়েছিলেন ফাফ ডুপ্লেসি। বল জমা পড়ে মিড অনে থাকা কারেনের হাতে।
তিনে ক্যামেরন গ্রিনকে নামানো হয়। সেই ফাটকাও কাজে লাগেনি। গ্রিনও মাত্র তিন রানে ফিরে যান। তৃতীয় উইকেটে রজত পাটীদারকে নিয়ে ধস সামাল দেন কোহলি। দু’জনের জুটিতে ওঠে ৪৩ রান। তবে পাটীদার ভাল শুরু করেও ধরে রাখতে পারেননি। সাফল্য পাননি ম্যাক্সওয়েলও। হরপ্রীতের একটি সোজা বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান।
উল্টো দিকে থাকা কোহলি বুঝতে পারছিলেন সঙ্গীর অভাব হতে পারে। বাড়ছিল আস্কিং রেটও। তাই রান তাড়া করার দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নেন। ১৬তম ওভারে হর্ষল পটেলকে দু’টি চার মারেন। কিন্তু প্রাক্তন সতীর্থের দুর্বলতা জানতেন হর্ষল। অফস্টাম্পের বাইরে স্লোয়ার দিয়েছিলেন। কোহলি তুলে মারতে যান। ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ যায় হরপ্রীতের হাতে। পুরনো দলের বিরুদ্ধে উচ্ছ্বাস করেননি হর্ষল। কিন্তু পঞ্জাবের বাকি ক্রিকেটারেরা যে ভাবে আনন্দ করছিলেন তাতে বোঝা যায় আসল উইকেটটা পেয়ে গিয়েছেন। কোহলিও বিশ্বাস করতে পারেননি। বিমর্ষ মুখে কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সাজঘরের দিকে হাঁটা লাগান।
পরের ওভারে অনুজ রাওয়াত আউট হতে দর্শকদের অনেকে বাড়ির পথে হাঁটা লাগিয়েছিলেন। কিন্তু নাটকের তখনও বাকি ছিল। মহীপাল এবং কার্তিক মিলে কোহলির অসমাপ্ত কাজ শেষ করে আসবেন তা অনেকেই ভাবতে পারেননি। কিন্তু কার্তিক বোঝালেন, পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। ধারাভাষ্যে ক্রমশ অভ্যস্ত হয়ে ওঠা কার্তিক যে এখনও ব্যাট হাতে দলকে জেতাতে পারেন, তার প্রমাণ পাওয়া গেল সোমবার।
আরশদীপ সিংহের ১৮তম এবং হর্ষলের ১৯তম ওভারে ১৩ রান করে ওঠে। ওই দুটো ওভারই ম্যাচ বার করে দিল পঞ্জাবের হাত থেকে। দাম পেল না হরপ্রীত ব্রারের বোলিং। তিনি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দু’টি উইকেটই শুধু নেননি, ঝাঁপিয়ে পড়ে কোহলির ক্যাচ ধরে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। ছোট মাঠেও হরপ্রীতকে খেলতে গিয়ে বার বার সমস্যায় পড়তে হয় বেঙ্গালুরুর ব্যাটারদের। চার ওভারে মাত্র ১৩ রানে ২ উইকেট নেন তিনি। তবে দিনের শেষে তাঁর বোলিং কাজে লাগল না।
বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাউন্ডারি ছোট হওয়ায় প্রচুর রান ওঠে। স্বাভাবিক ভাবেই টসে জিতে পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক ফাফ ডুপ্লেসি। বেঙ্গালুরুর বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সৌজন্যে ১৭৬/৬ রানেই আটকে যায় পঞ্জাব।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে পঞ্জাবের শুরুটা ভাল হয়নি। ৬ বলে ৮ রান করে ফিরে যান জনি বেয়ারস্টো। তবে দ্বিতীয় উইকেটে লম্বা জুটি হয়। প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিয়ে পঞ্জাবের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন শিখর ধাওয়ান এবং প্রভসিমরন সিংহ। দু’জনে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৫ রানের জুটি গড়েন।
চারে নেমে শুরুটা ভাল করেছিলেন লিয়াম লিভিংস্টোন। ইংরেজ ব্যাটারের বড় শট খেলার দক্ষতা রয়েছে। তবে আলজারি জোসেফের বলে উইকেটকিপার অনুজ রাওয়াতের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন ১৩ বলে ১৭ রান করে। পরের বলেই ধাওয়ানকে হারায় পঞ্জাব। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে তুলে মারতে গিয়ে কোহলির হাতে ক্যাচ দেন পঞ্জাবের অধিনায়ক। ৩৭ বলে ৪৫ রান করেন তিনি।
আর এক মারকুটে ইংরেজ ব্যাটার স্যাম কারেনও প্রত্যাশার দাম দিতে পারেননি। তিনি তিনটি চারের সাহায্যে ১৭ বলে ২৩ রান করেন। মায়াঙ্ক ডাগারকে পর পর দু’টি ছয় মেরে জিতেশ শর্মা শুরুটা ভাল করেছিলেন। তবে সেই ছন্দ পরের দিকে ধরে রাখতে না পেরে আউট হন। শেষ দিকে একটি চার এবং দু’টি ছয়ের সাহায্যে শশাঙ্ক সিংহ ৮ বলে ২১ রান না করলে এত দূর আসতেই পারত না পঞ্জাব। বেঙ্গালুরুর হয়ে দু’টি করে উইকেট নেন মহম্মদ সিরাজ এবং ম্যাক্সওয়েল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy