শনিবার খেলার পর তিক্ততা ভুলে সৌরভ করমর্দন করছেন কোহলির সঙ্গে। ছবি: পিটিআই
গৌতম গম্ভীর হলেন না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। গম্ভীর যেমন বিরাট কোহলিকে দেখলেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠছেন, সৌরভ হাঁটলেন সম্পূর্ণ উল্টো পথে। শনিবার দিল্লি ক্যাপিটালস এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ম্যাচের পর যাবতীয় বিভেদ, বিতর্ক ভুলে কোহলিকে কাছে টেনে নিলেন সৌরভ। দু’জনে করমর্দন করলেন।
ম্যাচের পর এই দৃশ্য ছুঁয়ে গিয়েছে দর্শকদের মন। সমাজমাধ্যমে তা সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল হয়েছে। বিশেষত প্রথম পর্বের ম্যাচের পরে যে ভাবে সৌরভ এবং কোহলি একে অপরের সঙ্গে করমর্দন করেননি, তা নজর এড়ায়নি কারওরই। কিন্তু শনিবার সে রকম কিছু দেখা গেল না। ঘরের মাঠ কোটলায় ফিরে হার দেখতে হয়েছে কোহলিকে। নিজে অর্ধশতরান করলেও বোলারদের ব্যর্থতায় দলকে জেতাতে পারেননি।
ম্যাচের পর যে ভাবে দুই দলের ক্রিকেটার এবং সাপোর্ট স্টাফরা একে অপরের সঙ্গে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে হাত মেলাতে থাকেন, তেমনই হতে থাকে। কোহলি এবং সৌরভ সামনাসামনি চলে আসেন। কিন্তু এ বার আর একে অপরকে এড়িয়ে যাননি। সৌরভ কাছে টেনে নেন কোহলিকে। হাত তো মেলালেনই। সেই সঙ্গে কোহলির কাঁধে হাত রেখে কিছু বললেনও। কী কথা হয়েছিল তা জানা যায়নি। কিন্তু গম্ভীর-পর্বের পর এই ছবি মনে জয় করেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের।
গত ১৬ এপ্রিল প্রথম পর্বের ম্যাচে বেঙ্গালুরুতে মুখোমুখি হয়েছিল আরসিবি এবং দিল্লি। সেই ম্যাচে প্রথম ঘটনা ঘটেছিল দিল্লির ইনিংসের ১৮তম ওভারে। আরসিবির বিরুদ্ধে ১৭৫ রান তাড়া করতে নেমে তখন চাপে ছিল দিল্লি। আমন খানের ক্যাচ ধরেছিলেন বিরাট। তার পর দিল্লির ডাগআউটের দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তখন বসে ছিলেন দলের ‘ডিরেক্টর অব ক্রিকেট’ সৌরভ।
সেই সময় সৌরভ পাল্টা কোনও অভিব্যক্তি না দিলেও, ম্যাচ শেষে বোঝা যায় যে তিনিও বিরাটের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। ম্যাচ শেষে দু’দলের ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা একে অপরের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছিলেন। সৌরভের ঠিক সামনেই ছিলেন দিল্লির কোচ রিকি পন্টিং। তিনি যখন বিরাটের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন, তখন পন্টিংকে টপকে বিরাটের পরে দাঁড়িয়ে থাকা ক্রিকেটারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন সৌরভ। ফলে দু’জনের সাক্ষাৎ হয়নি। ম্যাচ জিতেছিলেন বিরাটরা। দিল্লিকে ২৩ রানে হারিয়েছিল আরসিবি। অর্ধশতরান করে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন বিরাটই।
তার পরেই ঘটে গম্ভীরের সঙ্গে কোহলির বিবাদ। গত ১ মে লখনউয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল বেঙ্গালুরু। ম্যাচ চলাকালীন লখনউয়ের একটা করে উইকেট পড়ার পরে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উল্লাস করছিলেন কোহলি। লখনউয়ের ডাগআউটের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করে থাকার ভঙ্গি দেখান। স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার দিকে চুমুও ছুড়তে দেখা যায় তাঁকে। আফগানিস্তানের ক্রিকেটার নবীন উল হক আউট হওয়ার সময়ও উত্তেজিত হয়ে উল্লাস করেছিলেন কোহলি। টুপি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা হয়তো ভাল ভাবে নেননি নবীন। তাই হাত মেলানোর সময় কোহলিকে কিছু একটা বলেছিলেন লখনউয়ের বিদেশি ক্রিকেটার। পাল্টা কিছু বলেছিলেন কোহলিও। তার পরেই সেখানে এসেছিলেন গম্ভীর। তিনি কোহলিকে কিছু একটা বলেছিলেন। তার পরেই বিবাদ বেড়ে গিয়েছিল।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে সেখানে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন দু’দলের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা। কোহলি ও গম্ভীর দু’জনেই দিল্লির। লখনউয়ের স্পিনার অমিত মিশ্র ও সহকারী কোচ বিজয় দাহিয়াও দিল্লির হয়ে খেলেছেন। সেই কারণে তাঁরা কোহলি, গম্ভীরকে ভাল ভাবে চেনেন। তাঁরাই বেশি উদ্যোগী হয়ে দু’জনকে আলাদা করেছিলেন। লখনউয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও ছিলেন সেখানে। কোহলিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন আরসিবির অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি।
এর পরে ম্যাচ ফি-র পুরোটাই জরিমানা করা হয় বিরাটের। একই শাস্তি পেতে হয় গম্ভীরকেও। তুলনায় শাস্তি কম হয় নবীনের। তাঁর ম্যাচ ফি-র ৫০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy