দিল্লির ডাগআউটে বসে আরও এক হারের সাক্ষী থাকতে হল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। ছবি: আইপিএল
আইপিএল হৃদ্স্পন্দন বাড়িয়েই চলেছে দর্শকদের। একের পর এক ম্যাচে গড়াচ্ছে শেষ ওভারে। পেন্ডুলামের মতো দুলছে খেলা। শেষ বল হওয়ার আগে বোঝা যাচ্ছে না কে জিতবে। আরও এক বার শেষ বলে হল খেলার ফয়সালা। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে টান টান ম্যাচ হল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। প্রতি মুহূর্তে বদলাল খেলার রং। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতল মুম্বই।
প্রতিপক্ষ বদলালেও খেলার ফল বদলাচ্ছে না। একের পর এক ম্যাচে হেরে চলেছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দিল্লি। এ বার ঘরের মাঠে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছেও হারতে হল ডেভিড ওয়ার্নারদের। ব্যাটে-বলে দিল্লিকে টেক্কা দিল মুম্বই। সেই সঙ্গে এ বারের আইপিএলে নিজেদের প্রথম জয় পেল ৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
আগের ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হারের পরে রোহিত বলেছিলেন, দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের এগিয়ে আসতে হবে। নিজেকেও সেই তালিকায় রেখেছিলেন মুম্বই অধিনায়ক। দিল্লির বিরুদ্ধে পুরনো ছন্দে দেখা গেল রোহিতকে। অর্ধশতরান করলেন তিনি।
অর্ধশতরান অবশ্য করেছেন দিল্লির অধিনায়কও। কিন্তু ওয়ার্নারের সেই রান দলের কাজে এল না। কারণ, গোটা ইনিংস জুড়ে খেললেও আগের বিধ্বংসী রূপ দেখা গেল না ওয়ার্নারের। এখন তো মাঝ পিচে পড়া বলও ব্যাটে ঠিকঠাক লাগাতে সমস্যায় পড়ছেন তিনি। অক্ষর পটেল না থাকলে লজ্জা আরও বাড়ত দিল্লির।
ঘরের মাঠে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে দিল্লি। আরও এক বার ব্যর্থ পৃথ্বী শ। মাত্র ১৫ রান করে আউট হলেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে মণীশ পাণ্ডের সঙ্গে ওয়ার্নার জুটি গড়েছিলেন। কিন্তু রানের গতি খুব একটা বেশি ছিল না। বাধ্য হয়ে মারতে গিয়ে পীযূষ চাওলার বলে ২৮ রান করে আউট হন মণীশ।
এই ম্যাচেই অভিষেক হয়েছে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক যশ ঢুলের। কিন্তু শুরুটা ভাল হল না তাঁর। মাত্র ২ রান করে সাজঘরে ফিরলেন তিনি। দিল্লির মিডল অর্ডারকে ধরাশায়ী করলেন পীযূষ। ৩ উইকেট নিলেন তিনি।
অন্য দিকে একের পর এক উইকেট পড়লেও টিকে ছিলেন ওয়ার্নার। ৪২ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি। সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে দিল্লিকে আবার উদ্ধার করলেন অক্ষর। শুরু থেকেই বড় শট মারতে শুরু করেন তিনি। দেখে মনে হচ্ছিল বাকি ক্রিকেটাররা অন্য পিচে খেলছেন আর তিনি অন্য পিচে।
মাত্র ২২ বলে নিজের অর্ধশতরান করেন অক্ষর। চলতি মরসুমে এটি তাঁর দ্বিতীয় অর্ধশতরান। একটা সময় মনে হচ্ছিল দলের রান ১৮০ পার করিয়ে দেবেন তিনি। কিন্তু ২৫ বলে ৫৪ রান করে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হলেন অক্ষর। সেই ওভারেই ৪৭ বলে ৫১ রান করে আউট হলেন ওয়ার্নার। শেষ পর্যন্ত ১৭২ রানে অলআউট হয়ে যায় দিল্লি।
রান তাড়া করতে নেমে ঝোড়ো ব্যাটিং শুরু করেন মুম্বইয়ের দুই ওপেনার। রোহিতের পাশাপাশি ভাল খেলছিলেন ঈশান কিশনও। পেসারদের সামনে হাত খোলেন তাঁরা। প্রথম ৩ ওভারেই ৪২ রান ওঠে। যে ভাবে দুই ব্যাটার খেলছিলেন তাতে দেখে মনে হচ্ছিল, ১৫ ওভারের মধ্যে খেলা জিতে যাবেন তাঁরা।
কিন্তু রোহিতের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ৩১ রান করে ঈশান আউট হলে রানের গতি একটু কমে যায়। দিল্লির মাঠে স্পিনাররা সুবিধা পাচ্ছিলেন। বল ঘুরছিল। তাই বড় শট মারতে একটু সমস্যা হচ্ছিল।
রোহিতের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তিন নম্বরে নামা তিলক বর্মা। চলতি মরসুমে ছন্দে রয়েছেন তিনি। সেটা তাঁর ব্যাটিং দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। ৩০ বলে নিজের অর্ধশতরান করেন রোহিত। আইপিএলে ২৪ ইনিংস পরে ৫০ রান এল তাঁর ব্যাট থেকে।
শেষ ৫ ওভারে জিততে ৫০ রান দরকার ছিল মুম্বইয়ের। বাংলার মুকেশ কুমারকে টার্গেট করলেন তিলক। মুকেশের এক ওভারে ১৬ রান মারেন তিনি। কিন্তু সেই ওভারে ৪১ রানের মাথায় তিলককে আউটও করেন মুকেশ। আরও এক বার ব্যর্থ সূর্যকুমার যাদব। মুকেশের বলে শূন্য রানে ফেরেন তিনি। ৪৫ বলে ৬৫ রান করে অভিষেক পোড়েলের উড়ন্ত ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন রোহিত।
শেষ ১২ বলে মুম্বইয়ের দরকার ছিল ২০ রান। মুস্তাফিজুরের এক ওভারে ১৫ রান নিলেন টিম ডেভিড ও ক্যামেরন গ্রিন। শেষ ৬ বলে ৫ রান দরকার ছিল। দ্বিতীয় বলে ডেভিডের ক্যাচ ফস্কান মুকেশ। পরের বল ডেভিডের প্যাডে লাগায় ওয়াইড হয়নি। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। দৌড়ে সেই রান তুলে নেন মুম্বইয়ের দুই ব্যাটার। ৬ উইকেটে ম্যাচ জেতে মুম্বই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy