জুটি: স্ত্রী অ্যালিসার সঙ্গে স্টার্ক।
নবাবের শহরে কলকাতা নাইট রাইডার্স। রবিবার প্রতিপক্ষ লখনউ সুপার জায়ান্টস। তাদের হারালেই প্লে-অফ প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবেশ্রেয়স আয়ারদের।
এখনও পর্যন্ত ১০ ম্যাচে সাতটি জিতেছে কেকেআর। লখনউ জিতেছে ছ’টি। নাইটরা ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে ১৪ পয়েন্টে। লখনউকে হারালেই ১৬ পয়েন্ট নিশ্চিত হয়ে যাবে কেকেআরের। সেই সঙ্গে প্লে-অফের স্থানও প্রায় পাকা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লখনউয়ে নাইটরা বাড়তি সুবিধে পেতেই পারে। উইকেট মন্থর। স্পিনাররা সাহায্য পান। নাইটদের শক্তি তাদের স্পিন বিভাগ। সুনীল নারাইন, সি ভি বরুণের ঘূর্ণির বিরুদ্ধে আক্রমণ করা সহজ নয়। বিপক্ষ ওপেনার কুইন্টন ডি’ককও ছন্দে নেই। তাঁর পরিবর্তে শেষ ম্যাচে খেলানো হয়েছে আর্শিন কুলকার্নিকে। রবিবার লখনউও মরিয়া থাকবে প্লে-অফের রাস্তায় আরও এক ধাপ এগোতে। ভাল একটি ম্যাচের আশাতেই রয়েছে দুই শিবির।
নাইটদের প্রথম একাদশে ফিরতে পারেন তরুণ পেসার হর্ষিত রানা। এক ম্যাচের নির্বাসন থেকে তিনি মুক্ত। কিন্তু লখনউ দলের উদীয়মান প্রতিভা মায়াঙ্ক যাদব আইপিএলের বাকি মরসুম থেকেই ছিটকে গেলেন। লখনউয়ের কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার বলেছেন, ‘‘মায়াঙ্ক যেখানে আগে চোট পেয়েছিল। সেখানের পেশিই ছিঁড়ে গিয়েছে। আমাদের জন্য যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আইপিএলের বাকি ম্যাচে হয়তো ওকে আর পাব না আমরা।’’ যোগ করেন, ‘‘ও খুবই প্রতিভাবান পেসার। যত দিন যাবে আরও ভাল হয়ে উঠবে। কিন্তু এই আইপিএলে ওকে আর দেখা যাবে বলে মনে হচ্ছে না।’’
শুক্রবার ১২ বছর পরে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ানসকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় রয়েছে কেকেআর। ছন্দে ফিরে এসেছেন মিচেল স্টার্কও। মাত্র ৩৩ রানে চার উইকেট তুলে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন। কেন তাঁকে ২৪.৭৫ কোটি টাকায় কেকেআর নিয়েছে তার জবাব কিছুটা দিয়েছেন স্টার্ক। ওয়াংখেড়েতে নাইটদের জিতিয়ে ১২ বছরের অভিশাপ থেকে মুক্ত করেছেন দলকে। সাংবাদিক বৈঠকে এসে স্টার্ক বলেছেন, ‘‘আমি তো আর বেশি অর্থ চাইনি। আমাকে যোগ্য মনে করা হয়েছে বলেই দেওয়া হয়েছে।’’ স্টার্কের এই জবাবও যেন আরও একটি ইয়র্কারের সমান।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে এখন থেকেই ভাবছেন না স্টার্ক। আপাতত আইপিএলে কেকেআর শিবিরে ট্রফি তুলে যোগ দিতে চান বিশ্বকাপ দলে। স্টার্ক বলেছেন, ‘‘আমি জানি আমার কাজটা কী। কেকেআরের বোলিং বিভাগকে নেতৃত্ব দেওয়াই আমার দায়িত্ব। ওয়াংখেড়েতেই আমি সেই কাজটা সব চেয়ে ভাল ভাবে করতে পেরেছি। অবশ্যই চাইব প্রতিযোগিতার শেষ দিন পর্যন্ত ভাল খেলার। কেকেআরকে ট্রফি দেওয়াই আমার লক্ষ্য।’’ যোগ করেন, ‘‘এই দলটায় এক ঝাঁক নতুন বোলার আছে। ওরা বেশি টি-টোয়েন্টিও খেলেনি। আসলে এখানে আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের কাছ থেকে শিখছি। আমিও শিখছি নতুনদের কাছ থেকে।’’ তিনি জানান, ম্যাচের পরে শ্রেয়সও তাঁকে বিশেষ ভাবে অভিনন্দন জানিয়ে যান।
লখনউ সুপারজায়ান্টস যে শক্তিশালী দল, তা মানছেন স্টার্ক। কিন্তু তাঁদের দায়িত্ব লখনউয়ের ঘরের মাঠেই কে এল রাহুলদের হারানো। স্টার্কের কথায়, ‘‘ঘরের মাঠে লখনউ খুব একটা হারে না। ওখানের পিচ কিছুটা অন্য রকম। স্পিনাররা সাহায্য পায়। আমাদের দলেও সানি (নারাইন), বরুণ আছে। আশা করি, সমস্যাহবে না।’’
নাইটদের মেন্টর গৌতম গম্ভীর এখনও পর্যন্ত শেষ ম্যাচের জয়ের ঘোরে রয়েছেন। শুক্রবার অসাধ্য সাধন করেছে কেকেআর। যা নিয়ে মেন্টর সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘’১২ বছর পরে আমার দল সব হিসাব উল্টে দিয়েছে ওয়াংখেড়েতে। ছেলেরা নিজেদের কাজটা দারুণ করেছে।’’
লখনউয়ের কোচ ল্যাঙ্গার সতর্ক। তিনি বলেছেন, ‘‘কেকেআর অসাধারণ খেলছে। কোনও ম্যাচই সহজ ভাবে নিচ্ছে না। আইপিএলে যখন ২০০ রানও নিরাপদ নয়, সেখানে একটা দল ১৭০ রানের লক্ষ্য দিয়েও জিতছে। বুঝিয়ে দিচ্ছে, তাদের বোলিং বিভাগ কতটা শক্তিশালী।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে আমরাও তৈরি। নারাইন ও বরুণকে সামলানোর ছক আমাদেরও কষা আছে। তবে আমরা কোনও ব্যক্তিকে নিয়ে ভাবছি না। দল হিসেবে হারানোর চেষ্টা করব বিপক্ষকে। ইডেনে আমরা প্রথম সাক্ষাতে জিততে পারিনি। ঘরের মাঠে হিসেব বুঝে নিতে হবে।’’
দু’দলের এই মরিয়া মনোভাব কি জমিয়ে তুলতে পারে এই ম্যাচ?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy