আইপিএল জিতে হাসিমুখে শ্রেয়স আয়ার। ছবি: পিটিআই।
২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ মে। ৮৮ দিনে পুরো বদলে গেল শ্রেয়স আয়ারের জীবন। ২৮ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের শাস্তির মুখে পড়েছিলেন শ্রেয়স। বার্ষিক চুক্তি থেকে নাম বাদ গিয়েছিল তাঁর। ৮৮ দিন পরে ২৬ মে অধিনায়ক হিসাবে আইপিএল জিতলেন তিনি। বোর্ডের শাস্তির পর আইপিএল জয়ের লড়াইটা সহজ ছিল না কেকেআর অধিনায়কের কাছে। সেটাই করে দেখিয়েছেন তিনি। এই লড়াইয়ে কি নিজেকেও ফিরে পেয়েছেন শ্রেয়স?
বোর্ডের শাস্তি— গত বছর দেশের মাটিতে এক দিনের বিশ্বকাপে বেশ ভাল খেলেছিলেন শ্রেয়স। জোড়া শতরান করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরেই টেস্টে খারাপ খেলেন। পিঠের চোট ভোগায় তাঁকে। তার ফলে বোর্ডের বার্ষিক চুক্তি থেকে বাদ পড়েন শ্রেয়স। পরের কয়েকটি সিরিজ়ে ভারতীয় দলে আর জায়গা হয়নি তাঁর। এমনকি জুন মাসে শুরু হতে চলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলেও জায়গা পাননি তিনি।
বার বার চোট— পিঠের চোট বার বার ভুগিয়েছে শ্রেয়সকে। গত বছর এক দিনের বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপে খেলতে পারেননি তিনি। কারণ সেই পিঠের চোট। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে বিশ্বকাপ খেলার পরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ় চলাকালীন আবার পিঠে চোট পান তিনি। শ্রেয়সকে বোর্ড জানায়, জাতীয় দলে সুযোগ পেতে হলে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হবে তাঁকে। মুম্বইয়ের রঞ্জি দলে ফিরলেও আবার চোটের কারণে খেলতে পারেননি তিনি। তার খেসারতও দিতে হয়েছে শ্রেয়সকে। বোর্ড সচিব জয় শাহ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ঘরোয়া ক্রিকেট না খেললে ভারতীয় দলে জায়গা পাওয়া যাবে না। কিন্তু তার পরেও রঞ্জি খেলেননি শ্রেয়স।
আইপিএল নিয়ে বিতর্ক— রঞ্জি না খেললেও কেকেআের প্রাক্-মরসুম শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন শ্রেয়স। তা নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। অনেকে বলেন, ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি ক্রিকেট বলেই খেলছেন শ্রেয়স। তিনি কিছু বলেননি। শ্রেয়সকে চিকিৎসক আইপিএলে খেলার অনুমতি দিলেও কয়েকটি শট খেলা থেকে বিরত থাকতে বলেন। ধীরে ধীরে নিজের ফিটনেস ফিরে পেয়েছেন শ্রেয়স। তাঁর ব্যাটিংয়েও সেটা বোঝা গিয়েছে।
আইপিএল চ্যাম্পিয়ন— বোর্ডের শাস্তির পরেও কিছু বলেননি শ্রেয়স। শুধু নিজের কাজটা করেছেন। চলতি আইপিএলের শুরুর দিকে কয়েকটি ম্যাচে তাঁর ব্যাটে রান ছিল না। প্রতিযোগিতা যত গড়িয়েছে, ভাল খেলেছেন তিনি। তাঁর অধিনায়কত্ব মুগ্ধ করেছে বিশেষজ্ঞদের। শ্রেয়সই একমাত্র অধিনায়ক, যিনি দু’টি আলাদা দলকে ফাইনালে তুলেছেন। দিল্লি ক্যাপিটালসকে জেতাতে না পারলেও কেকেআরকে জিতিয়েছেন। যে জয় শাহের বোর্ড তাঁকে শাস্তি দিয়েছিল, সেই জয় ও সভাপতি রজার বিন্নী তাঁর হাতে আইপিএল ট্রফি তুলে দিয়েছেন।
এই ৮৮ দিনে বদলে গিয়েছেন শ্রেয়সও। ফাইনালের আগে সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘ ফরম্যাটে খেলতে পারছিলেন না। কিন্তু ছোট ফরম্যাট খেলতে কোনও সমস্যা হচ্ছিল না। সেটা তিনি সবাইকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেউ তাঁর কথা বোঝেনি। কিছুটা হলেও আক্ষেপ ও অভিমান ঝরে পড়েছে শ্রেয়সের গলা থেকে। কিন্তু তাতে থেমে থাকেননি তিনি। পরিশ্রম করেছেন। একটা লক্ষ্যে লড়াই করেছেন। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। এই ৮৮ দিনে নিজেকেও হয়তো ফিরে পেয়েছেন শ্রেয়স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy