Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
IPL 2022

IPL 2022: নারাইন ১৫০: সেরা বীরু, বিদায় চান নাইট জার্সিতে

রহস্য স্পিনারের প্রস্তুতি: নতুন নতুন অস্ত্র বার করার জন্য নিয়মিত অনুশীলন আর ভাবনার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

ত্রাতা: রাজস্থানের বিরুদ্ধেও দু’উইকেট নারাইনের। আইপিএল

ত্রাতা: রাজস্থানের বিরুদ্ধেও দু’উইকেট নারাইনের। আইপিএল

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ০৮:০৬
Share: Save:

সোমবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে নিজের ১৫০তম ম্যাচ খেলে ফেললেন সুনীল নারাইন। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে নামার আগে কেকেআরের ওয়েবসাইটে নিজের ক্রিকেট জীবন নিয়ে কথা বললেন আইপিএলের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই রহস্য স্পিনার।

১০ বছরের অভিজ্ঞতা: বেঙ্কিকে (বেঙ্কি মাইসোর, কেকেআর সিইও) বলছিলাম, আশা করব, আর যেন অন্য কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির হয়ে আইপিএল খেলতে না হয়। কেকেআরের হয়ে খেলতে দারুণ ভালবাসি। তাই আশা করব, শেষটা যেন এখানেই হয়। আমার কাছে এটা একটা কৃতিত্বের ব্যাপার। খুব কম বিদেশি ক্রিকেটারকে দেখা যাবে, যারা একটা ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির হয়ে দীর্ঘ সময় খেলে গিয়েছে। সৌভাগ্যবশত, আমি তাদেরই এক জন।

রহস্য স্পিনারের প্রস্তুতি: নতুন নতুন অস্ত্র বার করার জন্য নিয়মিত অনুশীলন আর ভাবনার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এখন চার দিকে এত ক্যামেরা এসে গিয়েছে যে, ব্যাটারদের ফাঁদে ফেলা খুব কঠিন। যত বেশি অনুশীলন করা যাবে, তত সেটা মাঠে কাজে লাগানো যাবে।

বিভিন্ন নেতার সঙ্গে খেলা: সাধারণত সবাই আমাকে আমার পছন্দ মতোই ফিল্ডিং সাজাতে দিত। কারণ আমি এক জন আক্রমণাত্মক বোলার। আমার অভিজ্ঞতা বলছে, যাদের নেতৃত্বে খেলেছি, তারা সব মোটামুটি একই ধরনের। একই রকম ভাবে আমাকে কাজে লাগাতে চাইত। আমি মাঠে নামার সময় জানতে চাইতাম, ওরা কী প্রত্যাশা করে আমার থেকে। তার পরে নিজের সাধ্যমতো সেটা করার চেষ্টা করতাম।

কঠিন সময়ে লড়াই: আমার ধারণা, গত দু’বছর আমি সবচেয়ে বেশি অনুশীলন করেছি। যত বেশি অনুশীলন করা যাবে, তত বেশি ধারাবাহিক হওয়াও যাবে। নিজের ছন্দে আমি খুশি। যদি দেখি, দলের বাকিরা রান দিয়ে ফেলছে, তখন আঁটসাঁট বোলিং করার উপরে জোর দিই। আর ভাল অবস্থায় থাকলে উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করি। আমি পরিস্থিতি অনুযায়ী বল করি। আগে থেকে বিশেষ পরিকল্পনা করে
রাখি না।

নতুন অ্যাকশনে বোলিং: আমার নিজেরই পরিকল্পনা ছিল, বোলিং হাতটা পিছনে রেখে বল করতে আসব। তবে কার্ল ক্রোয়ের (বোলিং কোচ) সঙ্গে এই ডেলিভারিটা নিয়ে কাজ করেছি। ও দেখে বলেছিল, এটা কাজে লাগাতে হবে। এই ধরনের ডেলিভারি আমাকে একটু বাড়তি সুবিধে দেয়। কারণ ব্যাটাররা একেবারে শেষ মুহূর্তে বলটা দেখতে পায়। কার্ল চেয়েছিল, আমি আরও আগে খেলায় এই অস্ত্রটা প্রয়োগ করি। কিন্তু ঠিক সময়ই সব হয়েছে।

কোন আউট বেশি পছন্দ: আমি ব্যাটারকে এলবিডব্লিউ আর বোল্ড করা বেশি পছন্দ করি। সবচেয়ে ভাল লাগে যখন ব্যাটার ভাবে বলটা একদিকে ঘুরবে আর সেটা অন্য দিকে ঘুরে বোল্ড করে দেয় কাউকে।

ছয় খেলে প্রতিক্রিয়া: যদি একটা খারাপ বল করি আর সেটায় ব্যাটার ছয় মেরে দেয়, তা হলে পরের বলটা আমাকে ভাল করতে হবে। আর যদি ভাল বলে ছয় মেরে দেয়, তা হলে বিশেষ কিছু ভাবি না। পরের বলটাও একই ভাবে করার চেষ্টা করি। কারণ ব্যাটাররা একই শট ধারাবাহিক ভাবে মারে না। ওরা অন্য কিছু চেষ্টা করে। ব্যাপারটা খুব সহজ রাখতে ভালবাসি আমি।

প্রতিপক্ষ সচিন: (এক বার বিশ্লেষণ করার জন্য সম্প্রচারকারী চ্যানেলের থেকে নারাইনের বোলিং ফুটেজ চেয়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর)। এটা ভেবে ভাল লাগছে যে, ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এক ব্যাটার আমার উপরে আলাদা করে নজর দিতে চেয়েছিল। এটা বুঝিয়ে দেয়, সচিন কতটা মহান খেলোয়াড়। ও সব সময় নিজের সেরাটা দিতে চায় এবং কোনও অবস্থাতেই মাঠে নেমে অপ্রস্তুত হতে চায় না। আমার মনে হয়, প্রত্যেক তরুণের লক্ষ্য থাকা উচিত সেরা হওয়া এবং খেলাটার খুটিনাটির উপরে জোর দেওয়া।

সেরা প্রতিপক্ষ: আইপিএলে আমাকে সবচেয়ে ভাল খেলেছে বীরেন্দ্র সহবাগ। ওর বিরুদ্ধে বল করা সত্যিই কঠিন ছিল। খেলার পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, ও নিজের ব্যাটিংটা করে যেত।

পছন্দের শিকার: আমার বিশেষ কোনও পছন্দের শিকার ছিল না। তবে হ্যাঁ, কারও কারও বিরুদ্ধে বল করার সময় আত্মবিশ্বাসী লাগে নিজেকে। তবে সে সব ব্যাটার কে, তা আমি বলব না। এটা গোপন রাখতে চাই। আর উইকেট নিতে চাই।

সেরা ব্যাটিং মুহূর্ত: যখন আমি ওই সময়ের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি করেছিলাম (২০১৭ সালে, আরসিবির বিরুদ্ধে ১৫ বলে)। তখন আমি নতুন ওপেন করছি। বোলাররা আমাকে অতটা গুরুত্ব দিত না, এখন যেমন দেয়। ওই সময় হাফসেঞ্চুরিটা করে দারুণ লেগেছিল। বিশেষ করে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন টি-টোয়েন্টি লিগে।

ব্যাটিংয়ে শান দেওয়া: বোলিংয়ের মতো অস্ত্র ব্যাটিংয়ে সে ভাবে যোগ করিনি। নিজেকে উন্নত করার চেষ্টা করছি। বোলাররা কোথায় বল করবে, এটা বুঝতে চেষ্টা করছি।

গাওস্করের নামে নামকরণ: খুব অল্প বয়সে আমার বাবা বলেছিল, কেন আমার নাম সুনীল রাখা হয়েছে। বাবা বিশ্বাস করত, আমি বড় ব্যাটসম্যান হব। বাবার মৃত্যুর পরে আমি ব্যাটিং আরও ভাল করার ব্যাপারে মনঃস‌ংযোগ করি।

সামনে কী লক্ষ্য: কেকেআরের হয়ে দেড়শো ম্যাচ খেলতে নামছি। দীর্ঘ একটা যাত্রাপথ। কেকেআর জার্সিতেই নিজের ক্রিকেট জীবন শেষ করতে চাই। তার পরে সুযোগ পেলে এই দলে বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করব। এত দিনের অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।

বাবা হওয়ার অনুভূতি: পিতৃত্বের অভিজ্ঞতা অন্য ভাবে ভাবতে সাহায্য করে। বাচ্চাদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রাখতে হয়। এটা একটা ভাল ব্যাপার। মানসিকতাটাই যেন বদলে দিয়ে যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

IPL 2022 KKR Sunil Narine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy