ত্রিপাঠীকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটমহলে। তিনি নিজেও কি একই লক্ষ্যে এগোচ্ছেন? তা সময়ই বলবে।
আত্মবিশ্বাসী: ৭ ম্যাচে ২১২ রান করে ফেলেছেন রাহুল। ছবি পিটিআই।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে টানা দু’বছর খেলেছেন রাহুল ত্রিপাঠী। একাধিক ম্যাচও জিতিয়েছেন। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ছয় মেরে দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে আসার সময় নাইটদের অন্যতম কর্ণধার শাহরুখ খান তাঁর উদ্দেশে বলে উঠেছিলেন, ‘‘রাহুল, নাম তো সুনা হি হোগা!’’ নাইটদের সঙ্গে সেই দু’টি মরসুম খুবই উপভোগ করেছেন সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের নির্ভরযোগ্য ব্যাটার। কিন্তু রাহুলের একটাই ক্ষোভ, অইন মর্গ্যানের নেতৃত্বে কখনও স্থায়ী ব্যাটিং অর্ডার পাননি।
কখনও তাঁকে ব্যবহার করা হয়েছে ওপেনার হিসেবে। কখনও ব্যাট করেছেন তিনে। কখনও আবার ফিনিশারের ভূমিকায়। হায়দরাবাদ তাঁকে প্রত্যেক ম্যাচে তিন নম্বরে নামার সুযোগ দিচ্ছেন। তাই ধারাবাহিক ভাবে রান পেতে সমস্যা হচ্ছে না ত্রিপাঠীর। আগে থেকেই পরিকল্পনা তৈরি করে রাখার সময় পাচ্ছেন। সাত ম্যাচে ২১২ রান করে ফেলেছেন তিনি। আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলছিলেন, ‘‘সানরাইজ়ার্স আমার উপরে অনেকটা নির্ভর করে। তিন নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ দেওয়ায় খুবই খুশি। দল ভরসা না করলে এই দায়িত্ব দিতে পারে না। তবে কেকেআরে যে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছি, সেটাও খারাপ নয়।’’ যোগ করেন, ‘‘সেটাকে অন্য রকম অভিজ্ঞতা বলা যেতে পারে। অন্য ধরনের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। তবে আমি বরাবরই উপরের দিকে ব্যাট করে এসেছি। শেষ কয়েক বছরে উপলব্ধি করেছি, ব্যাটিং অর্ডারের গুরুত্ব খুব বেশি নয়। দল আমার থেকে কী চাইছে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’
আইপিএলে আনক্যাপড ব্যাটার হিসেবে সর্বোচ্চ রান তাঁর ঝুলিতে। সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেই দলে সুযোগ পাওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন ত্রিপাঠী। বলছিলেন, ‘‘দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাওয়ার মতো বড় আর কোনও প্রাপ্তি হতে পারে না। প্রত্যেক ক্রিকেটারই দেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখেন। হায়দরাবাদের হয়ে আরও ভাল ইনিংস খেলাই লক্ষ্য। যদি ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলি, জাতীয় দলের দরজা অবশ্যই খুলে যাবে। নির্বাচকেরা যদি মনে করেন, দেশকে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা আমার আছে, তা হলে অবশ্যই বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়ে যেতে পারি।’’
কেকেআরের বিরুদ্ধে ৩৭ বলে ৭১ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস এসেছিল তাঁর ব্যাটে। নাইট শিবিরে টানা দু’বছর থাকার ফলে প্যাট কামিন্স, সিভি বরুণ, সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেলদের নেটে খেলে তৈরি হতে পেরেছেন। পুরনো দলের বিরুদ্ধে ব্যাট করার সময় সেই অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগিয়েছেন তিনি। ত্রিপাঠীর কথায়, ‘‘ওদের সঙ্গে দু’বছর খেলার বাড়তি সুবিধা তো পেয়েইছি। ওদের সঙ্গে এত অনুশীলন করেছি, এত দিন একসঙ্গে ছিলাম। তাই ওরা কী করতে পারে, সে সম্পর্কে একটা প্রাথমিক আন্দাজ ছিল। কোন জায়গায় বল ফেলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে, বুঝতে পেরেছিলাম। কিছুটা সুবিধা তো হয়েইছে।’’ নাইটদের বিরুদ্ধে এই ইনিংসকে বিশেষ জায়গায় রাখছেন তিনি। বলেন, ‘‘আমার জীবনের অন্যতম সেরা ইনিংস। ওই পিচে বড় রান তাড়া করাটা আমার বিশেষ বলেই মনে হয়েছে।’’
ত্রিপাঠীর ধারাবাহিকতা মুগ্ধ করেছে সুনীল গাওস্কর থেকে রবি শাস্ত্রীকে। প্রাক্তন ভারতীয় হেড কোচ বলেই দিয়েছেন, ভবিষ্যতে ভারতীয় দলের তারকা হয়ে উঠতে পারেন ত্রিপাঠী। সেই মন্তব্যে রাহুল অনুপ্রাণিত। বলছিলেন, ‘‘শাস্ত্রী, গাওস্কর স্যরের প্রশংসা আমাকে আরও উদ্বুদ্ধ করেছে। ওঁরা কিংবদন্তি। তাঁদের প্রশংসা পাওয়ার অর্থ ভাল কিছু নিশ্চয়ই করতে পেরেছি। ক্রিকেটার হিসেবে আরও পরিশ্রম করার উদ্যম পেয়েছি।’’
ত্রিপাঠীকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটমহলে। তিনি নিজেও কি একই লক্ষ্যে এগোচ্ছেন? তা সময়ই বলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy