অ্যারন ফিঞ্চ। ছবি: আইপিএল
কলকাতা নাইট রাইডার্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার অ্যারন ফিঞ্চ। অথচ অস্ট্রেলিয়ার সীমিত ওভারের ক্রিকেটের অধিনায়ককে নিলামে নেয়নি কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি। পরে অ্যালেক্স হেলস নিজেকে আইপিএল থেকে সরিয়ে নিলে কলকাতা ফিঞ্চকে দলে নেয়।
প্রথম ম্যাচে সাফল্য না পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ২৮ বলে ৫৮ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেছেন ফিঞ্চ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্বের প্রথম সারির ব্যাটারদের মধ্যে অন্যতম ফিঞ্চ। অথচ তাঁকে নিতে নিলামে আগ্রহ দেখায়নি কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি।
কেকেআর-এর ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফিঞ্চ জানিয়েছেন, দল না পাওয়ায় হতাশ হয়েছিলেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘এটা নির্ভর করে। সে দিন আমাদের শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেলা ছিল। তাই আইপিএল নিলাম নিয়ে আমরা খুব বেশি ভাবার মতো জায়গায় ছিলাম না। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত নিলামে দল পাওয়া নিয়ে একটা চিন্তা হত। এটা একটা দুর্দান্ত প্রতিযোগিতা। অংশ হতে না পারলে উত্তেজনাটা পাওয়া যায় না। বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে কিছু দিন অনুশীলন এবং ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া যায়। তাতে আমাদের উপকার হয়। এই সুযোগটাই আমরা পেতে চাই। দল না পেলে সেটা হয় না।’’ ফিঞ্চ আরও বলেছেন, ‘‘দল না পেয়ে খানিকটা হতাশ তো হয়েছিলামই। কিন্তু ব্রেন্ডন ম্যাকালাম ফোন করে কেকেআর-এ যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া মাত্রই লুফে নিয়েছিলাম। দারুণ উত্তেজনা অনুভব করেছিলাম।’’
আপনার ক্রিকেটের সঙ্গে কেকেআর-এর ক্রিকেটের ধরন কি মেলে? ফিঞ্চ বলেছেন, ‘‘এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সকলকেই দলে নেওয়া হয় নির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে। কেউ মানিয়ে নিতে না পারলে পরিকল্পনা ধাক্কা খায়। দলে যাদের নেওয়া হয়েছে সকলেই দারুণ ক্রিকেটার। সে জন্য আমাদের দলে যথেষ্ট বিকল্প রয়েছে। কিন্তু দল যেটা চাইছে সেটা দিতে পারাই আসল। আমার ক্রিকেটের এই ধরনটা ভালই লাগছে। কারণ কেউ প্রতিদিন দারুণ পারফরম্যান্স করে না। আবার এক জনের একটা দুরন্ত পারফরম্যান্স ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে। আমাদের প্রথম একাদশে একাধিক ক্রিকেটার আছে, যারা ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে।’’ ফিঞ্চ বলেছেন, ‘‘মাঠে প্রতিপক্ষকে যতটা সম্ভব চাপে রাখাই আসল। আলগা দিলেই সমস্যা। প্রতিপক্ষ আপনাকে চাপে রাখলে ম্যাচে ফেরার রাস্তা খোঁজা কঠিন হয়ে যায়। কয়েকটা ম্যাচে আমাদের কিছু ভুল হয়েছে। কিন্তু মোট ১৪টা ম্যাচ রয়েছে। তাই এখনই চিন্তার কিছু নেই।’’
জাতীয় দলের সতীর্থ প্যাট কামিন্সের ব্যাটিং নিয়ে উচ্ছ্বসিত ফিঞ্চ। কেকেআর ব্যাটার বলেছেন, ‘‘আমি ওর ইনিংস থেকে সাহস পেয়েছি। ওকে আমরা প্যাট আইপিএল বলে ডাকি। আইপিএলের মতো ব্যাটিং ও অস্ট্রেলিয়ার হয়েও করে না। কেকেআরের হয়ে অনবদ্য ইনিংস খেলেছে। নিজের ব্যাটিং নিয়ে প্রচুর পরিশ্রম করেছে। সাত নম্বরে ওর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দেখতে আমার তো দারুণ লাগছে। ওর বোলিং ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে।’’
কামিন্সের মতো আন্দ্রে রাসেলকে নিয়েও উচ্ছ্বসিত ফিঞ্চ। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারকে নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘রাসেল দুর্দান্ত ক্রিকেটার। ওর সঙ্গে বিগ ব্যাশেও খেলেছি। রাসেল যেন উত্তেজনার যন্ত্র। জোরে বল করে। জোরে শট মারতে পারে। ও সেই ধরনের খেলোয়াড় যাদের দেখতে মানুষ মাঠে আসেন। রাসেল আমাদের দলে থাকাটা বড় স্বস্তি। কারণ যে কোনও সময় ব্যাট বা বল হাতে ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে রাসেল। অসম্ভব শক্তিশালী ক্রিকেটার।’’
ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে বেঙ্কটেশ আয়ারকে দারুণ পছন্দ অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কের। ফিঞ্চ বলেছেন, ‘‘বেঙ্কটেশ দুর্দান্ত ক্রিকেটার। উচ্চতা ভাল। তাই ওর সামনে অনেক বিকল্প থাকে। সঙ্গত ভাবেই ওকে ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে তুলে আনা হয়েছে। ফলে ওর খেলার সুযোগও বেড়েছে। উইকেটে দু’দিকেই সমান দক্ষতায় শট মারতে পারে। খুব বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ব্যাটিং করে। দীর্ঘ সময় ব্যাট করার মানসিকতা রয়েছে। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার মতোই ক্রিকেটার বেঙ্কটেশ। ওর বয়স কম। সামনে লম্বা সুযোগ পাবে। কামিন্স যে দিন দুর্দান্ত ব্যাট করল, সে দিনই তো শেষ পর্যন্ত উইকেটে ছিল। রান তাড়া করায় ওর অবদানও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ও দলের খেলার ছন্দটা ধরে রাখতে পারে। মাথাও ঠান্ডা।’’
কেকেআর দলের কয়েকজন ক্রিকেটারকে বেশ কয়েক বছর ধরে রেখেছে। বিষয়টা ভাল লেগেছে ফিঞ্চের। দলের পরিবেশ নিয়েও খুশি তিনি। বলেছেন, ‘‘একটা দল ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এটা খুব বেশি দেখা যায় না। এখানে সবাই বাড়ির মতোই অনুভব করে। আমি দারুণ খুশি এখানে অনেক বন্ধু পেয়েছি। বেঙ্কি মাইসোর দীর্ঘদিন সিইও রয়েছেন। এটাও বড় সুবিধা। সকলেই খুব শান্তিতে এবং আরামে থাকে এখানে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy