যশ দয়াল। ছবি: পিটিআই।
আমদাবাদের সেই রাতের পর কেটে গিয়েছে ১৩ মাস। মাঝের সময়টায় সবরমতী দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। কিন্তু সেই রাতের কথা ভুলতে পারেননি যশ দয়াল। কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিঙ্কু সিংহের হাতে পাঁচ ছক্কা খাওয়ার পর এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে পরের কয়েকটা ম্যাচে খেলতে পারেননি। শনিবারের রাতটা শান্তিতে ঘুমোতে পারেন দয়াল। শেষ ওভারে মাথা ঠান্ডা রেখে তাঁর বোলিংয়ের দাপটে চেন্নাইকে হারিয়ে আইপিএলের প্লে-অফে উঠে গেল বেঙ্গালুরু। যে দয়াল এক সময় খলনায়ক হয়ে গিয়েছিলেন, এ বারের আইপিএলে তিনিই নায়ক।
আমদাবাদের ওই ম্যাচের পর উত্তরপ্রদেশের বোলারের অবস্থা হয়েছিল মারাত্মক। গুজরাতের তৎকালীন কোচেরা এসে স্বীকার করেছিলেন, দয়াল ওই ঘটনার পর একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন। হোটেলের ঘরে শুয়ে কেঁদেছিলেন। পরের কয়েকটা ম্যাচে খেলতে পারেননি। শেষের দিকে এসে খেললেও আত্মবিশ্বাস ফেরেনি। নজর কাড়তে পারেননি কোনও ভাবেই।
গুজরাতও ঝুঁকি নেয়নি। দলে রাখেনি দয়ালকে। গত বছর মিনি নিলামের টেবিলে উঠেছিল দয়ালের নাম। তাঁর প্রতি ভরসা রেখে ৫ কোটি টাকায় কিনে নেয় বেঙ্গালুরু। দয়াল হতাশ করেননি। এ বারের আইপিএলে প্রথম ম্যাচে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধেই খেলতে নেমেছিল বেঙ্গালুরু। চলতি আইপিএলে ১৩ ম্যাচে ১৯টি উইকেট হয়ে গিয়েছে দয়ালের। কেউ তাঁর নাম তুলে সোচ্চার হয়নি। কিন্তু নিঃশব্দে বেগনি টুপির লড়াইয়ে নিজেকেও এনে ফেলেছেন দয়াল।
শনিবার তিনি যখন বল করতে এসেছিলেন, তখন চেন্নাইয়ের শেষ ওভারে ১৭ রান দরকার। এক্স হ্যান্ডলে তখনই বিতর্ক শুরু হয়ে গেল, কেন ক্যামেরন গ্রিনের মতো বোলার থাকতে দয়ালকে আনা হল? মহেন্দ্র সিংহ ধোনির কাছে প্রথম বলে ছয় খেয়ে সেই দাবিকেই আরও জোরালো করে দিলেন দয়াল।
কে জানত বাকি ওভারে তাঁর কোন জাদু অপেক্ষা করে রয়েছে! দ্বিতীয় বলেই স্লোয়ার দিলেন। ধোনি গতির হেরফের বুঝতে পারেননি। চালাতে গেলেন। ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন। তৃতীয় বলে শার্দূল ঠাকুর রান নিতে পারেননি। চতুর্থ বলে এক রান নিলেন। শেষ দু’বলে দরকার ছিল ১০ রান। ক্রিকেটীয় অঙ্কে জেতা সম্ভব ছিল। গত বারের আইপিএল ফাইনালে এই অবস্থা থেকেই চেন্নাইয়ে ট্রফি জিতিয়েছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা।
কিন্তু দয়ালের পরের দু’টি বল কোনও সুযোগই দিল না। অফ স্টাম্পের বেশ কিছুটা বাইরে দু’টিই স্লোয়ার বল করলেন। কোনও বলই ব্যাটে লাগাতে পারলেন না জাডেজা। দু’হাত তুলে দয়ালের দৌড়ে শুধু আত্মবিশ্বাসই নয়, নিজেকে প্রমাণ করার তৃপ্তিও ছিল। বিরাট কোহলিও তরুণ বোলারকে জড়িয়ে ধরলেন। এক বছর আগের সেই খলনায়ক হঠাৎ করেই বেঙ্গালুরুর সমর্থকদের নয়নের মণি হয়ে গেলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy