মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ছবি: আইপিএল।
২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সেই ছক্কা ভারতীয় ক্রিকেটে লোকগাথা হয়ে গিয়েছে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে আছড়ে পড়া তাঁর ছয় ভারতকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছিল। সেই মাহির এক ছক্কাই আইপিএলের লড়াই থেকে ছিটকে দিল চেন্নাই সুপার কিংসকে।
শনিবার বেঙ্গালুরুতে সকাল থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছিল। বেঙ্গালুরুর ইনিংসের মাঝেও ভিজেছিল মাঠ। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল শিশির। বল ভিজে যাওয়ায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বোলারদের সমস্যা হচ্ছিল। আরসিবি অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি, বিরাট কোহলিরা বার বার আম্পায়ারদের কাছে বল পরিবর্তন করার আবেদন করছিলেন। কিন্তু বলের অকৃতি নষ্ট না হওয়ায় বদলাতে রাজি হননি তাঁরা। ভেজা বলেই খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
বেঙ্গালুরুর সহায় হয়েছিলেন ধোনি। আইপিএলের প্লে-অফে ওঠার জন্য ইনিংসের শেষ ওভারে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। ডুপ্লেসি বল দিয়েছিলেন যশ দয়ালকে। ব্যাটার ছিলেন ধোনি। গত বছর রিঙ্কু সিংহের হাতে পাঁচ ছক্কা খাওয়া বোলারের প্রথম বল উড়িয়ে দেন ধোনি। বল চলে যায় স্টেডিয়ামের বাইরে। ১১০ মিটারের সেই ছক্কার পর নতুন শুকনো বল নিতে বাধ্য হন আম্পায়ারেরা। তাতেই লাভ হয় বেঙ্গালুরুর। ক্ষতি হয়ে যায় চেন্নাইয়ের।
কেমন সেই সুবিধা? বাংলার বোলিং কোচ শিবশঙ্কর পাল বললেন, ‘‘ভিজে গেলে বল একটু পিচ্ছিল হয়ে যায়। অনেকটা সাবানের মতো। বোলারেরা বল ঠিক ভাবে ধরতে পারে না। নিয়ন্ত্রণ রাখতে সমস্যা হয়। যে কারণে লকি ফার্গুসন নাকল বল করার চেষ্টা করে দু’বার ব্যর্থ হয়েছে। বল ব্যাটারের মাথার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে। আসলে বল ছাড়ার সময় ফার্গুসনের হাত থেকে পিছলে গিয়েছে। শুকনো বল আসায় সুবিধা হয়েছে বেঙ্গালুরুর। গুরুত্বপূর্ণ শেষ ওভারে বলের উপর নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে বোলারেরা।’’
শিবশঙ্করের এই পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম বলে বিশাল ছক্কা খেয়েও আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়নি যশের। বরং শুকনো বল তাঁকে উৎসাহিত করেছিল। ২২ গজে ধোনি, রবীন্দ্র জাডেজার মতো ব্যাটার থাকলেও সমস্যা হয়নি। দ্বিতীয় বলটি করার সময় শেষ মুহূর্তে গতি কমিয়ে দিয়েছিলেন। ধোনি ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে বসেন। পরে সমস্যায় পড়েছিলেন শার্দূল ঠাকুর, জাডেজারা। বলের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ায় পর পর স্লোয়ার দিতে সমস্যা হয়নি যশের। শেষ চার বলে আর প্রয়োজনীয় ১১ রান তুলতে পারেনি চেন্নাই। ওঠে মাত্র ১ রান। তিনটি বল ব্যাটে লাগাতেই পারেননি শার্দূল, জাডেজারা।
১৩ বছর আগে এক রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে ধোনির মরিয়া ছক্কা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়েছিল ভারতকে। ওয়াংখেড়ের গ্যালারির যে দুটো আসনে বল গিয়ে পড়েছিল, সে দু’টি সংরক্ষিত করে রেখেছেন মুম্বইয়ের ক্রিকেট কর্তারা। শনিবার ধোনির তেমনই আর এক মরিয়া ছক্কাই আইপিএল থেকে ছিটকে দিল পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইকে। স্টেডিয়ামের বাইরে চলে যাওয়া বল খুঁজে এনে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন আরসিবি কর্তৃপক্ষ।
সেই বলেই হয়তো ধোনি লিখে দিয়েছিলেন নিজেদের বিদায়বার্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy