Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
IPL 2023

১৪৩৯ দিন পর বৃহস্পতিবার ইডেনে কেকেআর! কলকাতা কোথায় এগিয়ে? কোথায় পিছিয়ে?

কিছু বিষয় বৃহস্পতিবারের ম্যাচে কলকাতার পক্ষে যেতে পারে। কিছু বিষয় যেতে পারে বিপক্ষে। বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে কলকাতার সব থেকে বড় সুবিধা ঘরের মাঠে খেলা। কিন্তু ইডেনই হয়ে উঠতে পারে বড় সমস্যা!

picture of KKR

চার বছর পর বৃহস্পতিবার আবার ইডেনে খেলবে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ছবি: আইপিএল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:০০
Share: Save:

এ বারের আইপিএলে প্রথম ম্যাচে পঞ্জাব কিংসের কাছে হার দিয়ে অভিযান শুরু করেছেন নীতীশ রানারা। অন্য দিকে কোহলিরা মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসী। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কলকাতার জয়ের সম্ভাবনা কতটা? কোথায় এগিয়ে নাইটরা? পাঁচটি ক্ষেত্রে সুবিধাজনক জায়গায় থাকবে কেকেআর।

১) লকি ফার্গুসন: চোট সারিয়ে সুস্থ নিউ জ়িল্যান্ডের জোরে বোলার লকি ফার্গুসন। মঙ্গলবার থেকে দলের সঙ্গে অনুশীলন শুরু করেছেন তিনি। মাত্র একটি টেস্ট খেললেও সাদা বলের ক্রিকেটে ফার্গুসনকে বিশেষজ্ঞ বলা হয়। কিউয়ি ক্রিকেটার চোট মুক্ত হওয়ায় তাঁকে খেলাতে পারে কেকেআর। সে ক্ষেত্রে দলে বোলিং শক্তি বাড়বে।

২) চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত: কলকাতার অন্যতম সুবিধা কোচ পণ্ডিত। অনামী ক্রিকেটারদের নিয়ে সাফল্য পাওয়ার রসায়ন তাঁর জানা। দলকে শৃঙ্খলায় বেঁধে রাখতে পারেন তিনি। ক্রিকেটারদের ভূমিকা নির্দিষ্ট করে দিয়ে তাঁদের থেকে সেরাটা বার করে আনতে জানেন কেকেআর কোচ। প্রতিপক্ষের শক্তি বুঝে রণকৌশল তৈরি করতেও সিদ্ধহস্ত পণ্ডিত। ডাগআউটে তাঁর উপস্থিতি কেকেআরের অন্যতম শক্তি। দলের তারকা নির্ভরতা না থাকাও তাঁর সুবিধা।

৩) সুনীল নারাইন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের স্পিনার অলরাউন্ডার কেকেআরের প্রথম একাদশের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ২০১২ সাল থেকে তিনি কলকাতার হয়ে খেলছেন। দলের সব থেকে পুরনো মুখ ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। ইডেনের উইকেট তাঁর চেনা। বয়স বাড়লেও প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের কব্জির মোচড়ে বিভ্রান্ত করতে পারেন অনায়াসে। দলের প্রয়োজনে ব্যাটিং অর্ডারের যে কোনও জায়গায় ব্যাটও করতে পারেন। গত এক দশকের মতো বৃহস্পতিবারের ম্যাচেও কলকাতার অন্যতম প্রধান অস্ত্র নারাইন।

৪) আন্দ্রে রাসেল: কেকেআরের আর এক বিদেশি অলরাউন্ডার। দলে প্রকৃত বিগ হিটার বলতে একমাত্র তিনিই রয়েছেন। মিডল অর্ডার বা লোয়ার মিডল অর্ডারের অন্যতম ভরসা। ব্যাট হাতে একাই বদলে দিতে পারেন ম্যাচের রং। বহু ম্যাচে প্রতিপক্ষ শিবিরে পাল্টা চ্যালেঞ্জ পৌঁছে দিয়েছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিশেষজ্ঞ রাসেল। বয়সের জন্য এখন নিয়মিত বল না করলেও, দলের প্রয়োজনে ২-৩ ওভার বলও করতে পারেন। ২০১৪ সাল থেকে বেগনি জার্সি পরে খেলছেন।

৫) ইডেন গার্ডেন: ১৪৩৯ দিন পর বৃহস্পতিবার ইডেনে খেলবে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল শেষ বার ইডেনে রোহিত শর্মার মুম্বইয়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন নাইটরা। স্বভাবতই শহরের ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রিয় দলকে সমর্থন করতে গ্যালারি ভরাবেন। ৬৮ হাজার ক্রিকেটপ্রেমীর সমর্থন নিশ্চিত ভাবে নীতীশদের মনোবল বাড়াবে।

শুধুই কি সুবিধা? ২২ গজের লড়াইয়ের অঙ্ক সহজ নয়। ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা পেলেও কিছু বিষয় নাইটদের বিরুদ্ধে যেতে পারে।

১) বিরাট কোহলি: মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই কোহলি বুঝিয়ে দিয়েছেন, এ বারের প্রতিযোগিতায় কথা বলবে তাঁর ব্যাট। ক্রিকেটার কোহলি ইডেনের ২২ গজেও যথেষ্ট সফল। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক একাই ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে চলে যেতে পারেন প্রতিপক্ষের কাছ থেকে। তাঁর ছন্দ অবশ্যই কলকাতার বিপক্ষে যেতে পারে।

২) ফ্যাফ ডুপ্লেসি: একা কোহলিতে রক্ষে নেই, ডুপ্লেসি দোসর। রোহিতরা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন গত রবিবার। কোহলির মতোই ছন্দে রয়েছেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক। প্রথম ম্যাচের মতো তাঁর সঙ্গে কোহলির জুটি জমে গেলে নীতীশদের কাজ যথেষ্ট কঠিন হবে। তাঁদের ওপেনিং জুটির আগ্রাসী মেজাজ ইডেনেও বজায় থাকলে কলকাতার কপালের ভাঁজ চওড়া হতে পারে।

৩) বাংলার দুই ক্রিকেটার: বেঙ্গালুরু দলে আছেন বাংলার দুই ক্রিকেটার। শাহবাজ় আহমেদ এবং আকাশ দীপ। বাংলার এই দুই ক্রিকেটার ইডেনকে চেনেন হাতের তালুর মতো। কলকাতার অন্যতম চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারেন তাঁরা। এই মরসুমে দু’জনেই ভাল ছন্দে রয়েছেন। কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকদের সমর্থন শাহবাজ়, আকাশ দীপও পাবেন।

৪) নেতৃত্ব: দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকবে কলকাতা। নীতীশকে অধিনায়ক করা হলেও, তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার তেমন অভিজ্ঞতা নেই। অধিনায়ক হিসাবে অভিজ্ঞ এমন ক্রিকেটারও নেই কলকাতার দলে। অন্য দিকে বেঙ্গালুরু শিবিরে অধিনায়ক ডুপ্লেসি ছাড়াও কোহলি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা রয়েছেন। আছেন নাইটদের প্রাক্তন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকও।

৫) ইডেন গার্ডেন: ইডেন কলকাতার ঘরের মাঠ হলেও, দলের চার-পাঁচ জন ক্রিকেটার বাদে এই মাঠে খেলার তেমন অভিজ্ঞতা কারও নেই। অন্য দিকে, বেঙ্গালুরু শিবিরে বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার রয়েছেন, যাঁদের ইডেনে খেলার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই ঘরের মাঠের সুবিধা তেমন ভাবে না-ও পেতে পারে নাইটরা। তা ছাড়া ইডেনের গ্যালারি কোহলির জন্য চিৎকার করবে না, এমন ভাবা বড় ভুল হয়ে যেতে পারে।

কিছু সুবিধা এবং কিছু অসুবিধা নিয়েই বেঙ্গালুরুকে সামলাতে হবে নাইটদের। শ্রেয়স আয়ার যেমন চোটের জন্য এ বারের আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়েছেন, তেমন প্রতিপক্ষ শিবিরের ছন্দে থাকা ব্যাটার রজত পটীদারও প্রতিযোগিতার বাইরে। সব মিলিয়ে ঘরের ম্যাচ হলেও বৃহস্পতিবারের ম্যাচে তেমন সুবিধাজনক জায়গায় থাকছে না কেকেআর।

অন্য বিষয়গুলি:

IPL 2023 KKR RCB
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE