ইডেনে আউট হওয়ার পরে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি বিরাট কোহলি। ছবি: আইপিএল।
বিশেষজ্ঞেরাও একমত হতে পারছেন না। ইডেনে কেকেআরের বিরুদ্ধে বিরাট কোহলির আউট হওয়া নিয়ে বিতর্ক এখনও থামেনি। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কেউ বলছেন, বিরাট আউট ছিলেন। আম্পায়ার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আবার কেউ বলছেন, সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।
ঠিক কী হয়েছিল?
বেঙ্গালুরুর ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বল করছিলেন হর্ষিত রানা। তাঁর প্রথম বলটি খেলার সময় ক্রিজ়ের বাইরে ছিলেন বিরাট। বল সোজা ব্যাটে এসে লাগে। সেই বল সঙ্গে সঙ্গে লুফে নেন বোলার হর্ষিত। কিন্তু বিরাট ক্রিজ় ছাড়তে চাননি। তাঁর দাবি, বল কোমরের উপরে ছিল। তাই নো বলের দাবি করেন বিরাট। রিভিউ নেওয়ারও ইঙ্গিত করেন। যদিও মাঠের আম্পায়ারেরা রিভিউ নেন নিজে থেকেই। নো বল কি না নিশ্চিত হতে চান তাঁরা। তৃতীয় আম্পায়ার দেখেন বিরাটের কোমরের নিচেই রয়েছে বল। ফলে নো বল দেননি তিনি। মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। তাতেই রেগে যান বিরাট। তিনি মাঠেই আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ডাগ আউটে ফিরেও শান্ত হতে পারছিলেন না বিরাট। ম্যাচ শেষেও আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় বিরাটকে।
ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইরফান পাঠানের মতে, আম্পায়ার একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি একটি ভিডিয়োতে দেখান, কেন এটি নো বল ছিল না। পাঠান বলেন, “সাধারণত কোমরের উপর ফুলটস করলে নো বল হয়। কিন্তু এ বার প্রতিযোগিতার আগে সব প্লেয়ারের কোমরের উচ্চতার মাপ নিয়েছে বোর্ড। তাই আম্পায়ারের কাছে সেই সুবিধা আছে। ক্রিজ়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ক্রিকেটারদের কোমরের উচ্চতার মাপ নেওয়া হয়েছে। কোহলি ক্রিজ় থেকে বেরিয়ে খেলছিল। বলটা যদি জোরে হত তা হলে কোমরের উপর দিয়ে বেরিয়ে যেত। কিন্তু সেটা স্লো বল ছিল। ফলে বল নীচের দিকে যাচ্ছিল। সে ক্ষেত্রে কোহলি ক্রিজ়ে থাকলে বল ওর কোমরের নীচে পড়ত। তাই ওটা নো বল নয়। আম্পায়ার একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
পাঠানের বিরুদ্ধে মত আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর। তিনিও একটি ভিডিয়োয় নিজের মত জানান। সিধু বলেন, “আম্পায়ার ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ, কোমরের উপরে ফুলটস মানেই নো বল। আমাদের সময় ভুল করে কোনও বোলার কোমরের উপরে ফুলটস করলে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চাইত। এখন সেটা হচ্ছে না। তা হলে তো বোলারদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কোহলির কোমর থেকে দেড় ফুট উঁচুতে বল লেগেছিল। ও সেই সময় ক্রিজ় থেকে ৬ ইঞ্চি বাইরে ছিল। ৬ ইঞ্চি পিছনে থাকলে কি বলটা দু’ফুট নীচে নামত। প্রযুক্তি ১০০ শতাংশ না থাকলে ব্যাটারের পক্ষে সিদ্ধান্ত যাওয়া উচিত ছিল। আমার অনুরোধ, এই নিয়ম বদল করা হোক।”
পাঠান আবার পাশে পেয়েছেন আর এক ধারাভাষ্যকার হর্য ভোগলেকে। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, “প্রযুক্তিকে ধন্যবাদ। কোনও রকম পক্ষপাতিত্ব হয়নি। প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে প্রত্যেক ক্রিকেটারের কোমরের উচ্চতার মাপ নেওয়া হয়েছিল। সেটা কাজে লেগেছে। এ ক্ষেত্রে আম্পায়ারদের কিছুই বলার নেই। পুরোটাই প্রযুক্তির উপর নির্ভর করছে।”
ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার মহম্মদ কাইফ আবার মনে করেন, ব্যাটার যেখানেই দাঁড়িয়ে থাকুন না কেন, কোমরের উপর ফুলটস করলেই নো দেওয়া উচিত। তিনিও এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, “বিরাটের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ঠিক নয়। ব্যাটার যেখানেই দাঁড়াক না কেন বল কোমরের উপরে লাগার মানেই নো। বল ট্র্যাকারও সঠিক মনে হয়নি।”
এ বারের আইপিএলে কোমরের উপরে বল রয়েছে কি না সেটা বোঝার জন্য নতুন একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিটি ক্রিকেটারের কোমরের মাপ দেওয়া রয়েছে প্রযুক্তির কাছে। বল কোন উচ্চতায় রয়েছে সেটাও মেপে নেওয়া হবে ওই প্রযুক্তি দিয়েই। সঙ্গে সঙ্গে দেখা নেওয়া যাবে বল সেই ক্রিকেটারের কোমরের উপরে রয়েছে না নীচে। সম্প্রচারকারী চ্যানেলে ধারাভাষ্যকারেরা বলেন, বিরাটের কোমরের উচ্চতা মাটি থেকে ১.০৪ মিটার। বল ছিল ১.০২ মিটারের উচ্চতায়। অর্থাৎ কোমরের নীচেই ছিল বল। সেই সঙ্গে বিরাট ক্রিজ়ের বাইরে ছিলেন। ফলে তৃতীয় আম্পায়ার জানিয়ে দেন বিরাটের আউট ন্যায্য। তার পরেও বিতর্ক থামছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy