উৎসাহ: খেলা দেখতে আসা দর্শকদের ভিড়। মঙ্গলবার, ইডেন গার্ডেন্সে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
ইডেন গার্ডেন্সের সামনে কয়েক মিনিট দাঁড়াতেই কানে এল কথাটা। এক প্রৌঢ় কাছে এসে বলছেন, ‘‘লাগবে নাকি, আমার কাছে শেষ একটাই টিকিট আছে। বেশি না, পনেরোশো দেবেন।’’ দেখা গেল, তিনি যেটা হাতে গুঁজে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, সেটা আইপিএল কোয়ালিফায়ার ১-এর মঙ্গলবারের খেলার টিকিট। দাম আটশো টাকা। তা হলে এত বেশি দেব কেন? ‘‘নিতে হলে নিন, নয়তো ছাড়ুন। এই টিকিটই অনেকে আরও বেশি দামে বিক্রি করছে।’’ কথাটা শেষ করেই নতুন ক্রেতা ধরতে ছুটলেন ওই ব্যক্তি।
গত রবিবারই টিকিটের কালোবাজারির অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। উদ্ধার হয়েছিল চড়া দামে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসা প্রায় ৫০টি টিকিট। তার পরেও টিকিটের কালোবাজারি যে বন্ধ হয়নি, তা এ দিন কিছু ক্ষণ ইডেনের সামনে দাঁড়াতেই মালুম হল। সেই সঙ্গেই দেখা গেল, খেলা দেখতে আসা লোকজনের মধ্যে মাস্ক পরার সচেতনতার কতটা অভাব। ভিড়ের মধ্যে বেশির ভাগেরই মুখ ছিল ফাঁকা। হাতে গোনা কয়েক জন, যাঁরা প্রথমে বিধি মানছিলেন, তাঁদেরও মাস্ক নামিয়ে রাখতে দেখা গেল নিজের গালে প্রিয় দলের প্রতীক আঁকানোর জন্য। খেলা শুরুর আগের মুহূর্তে তাঁরা আরও বেপরোয়া। ভিড়ের মধ্যেই কেউ কেউ বললেন, ‘‘এত দিন বাদে ইডেন ভরবে। অত ভয় পেলে সেই ইতিহাসের সাক্ষী হওয়া যাবে না।’’
এ দিন সকাল থেকে সব চেয়ে বেশি ভিড় দেখা গিয়েছে রেড রোড, মেয়ো রোড এবং রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। কলকাতা না খেললেও, এ দিন মুখোমুখি যে দু’টি দল, তাদের জার্সি পরেই এসেছিলেন অনেকে। ভারতীয় দলের এক খেলোয়াড়ের নাম লেখা জার্সি পরে তেমনই এক তরুণী বললেন, ‘‘কলকাতার দলে বাঙালি খেলেন ক’জন! তাই কলকাতা না খেললে যে ইডেন ভরবে না, এমন কোনও কথা নেই। খেলা হলে ইডেন কোনও দিন ফেরায় না।’’ বন্ধুদের সঙ্গে নিজস্বী তুলতে ব্যস্ত আর এক তরুণ পরনের কলকাতার জার্সি দেখিয়ে বললেন, ‘‘কলকাতা আজ খেলুক চাই না খেলুক, আমরা কলকাতারই ভক্ত।’’ দেখা গেল, ঘরের দলের জার্সিও এ দিন বিক্রি হচ্ছে দেদার।
রেড রোডের পাশে একটি ফুটবল ক্লাবের ক্যাম্পের ধারে টিকিট কাটার লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো লম্বা। সেখানে পুলিশের নজরদারিও ছিল আঁটোসাঁটো। গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া জায়গায় পুলিশ-পিকেট তো ছিলই, সেই সঙ্গেই ছিল ময়দান চত্বর জুড়ে ঘোড়সওয়ার পুলিশের নজরদারি। ভিড় দেখলেই লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যেতে দেখা গেল পুলিশকে। তারই মধ্যে পুলিশের নজর এড়িয়ে চলল টিকিটের কালোবাজারির চেষ্টা। কোথাও আটশো টাকার টিকিটের দাম উঠল বারোশো-পনেরোশো, কোথাও দাম হাঁকা হল আড়াই হাজার। এর মধ্যেই কানে এল, এক ব্যক্তি এক জন খেলোয়াড়ের নাম করে ফোনে বলছেন, ‘‘আমার হয়ে চার হাজার লাগিয়ে দে। আজ দশের বেশি রান করবে না।’’ এর পরে তাঁর সংযোজন, ‘‘টসের ফলাফল কী হবে, সেটা আর একটু পরে বলছি। তখন ওটায় লাগাস।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy