রিঙ্কু ছাড়া কেকেআরের আর কোনও ক্রিকেটার পাশ করতে পারলেন কি? গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
এ বারের মতো আইপিএল অভিযান শেষ হয়েছে কেকেআরের। চলতি মরসুমে দলে থাকা প্রায় সব ক্রিকেটারকেই খেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা মরসুমের বিচারে তাঁদের নম্বর দিল আনন্দবাজার অনলাইন। ১০-এ ৬ পেলে তবেই তিনি পাশ করবেন। রিঙ্কু বাদে সেই তালিকায় খুবই কম ক্রিকেটার রয়েছেন। আর্য দেশাই এবং জনসন চার্লস একটিও ম্যাচ না খেলায় তাঁরা এই পরীক্ষার বাইরে।
নীতীশ রানা (৫/১০): তড়িঘড়ি করে তাঁকে অধিনায়ক করার মাশুল গুণতে হল কেকেআরকে। গোটা দলের সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না তাঁর। প্রতিযোগিতা জুড়ে বুঝেই উঠতে পারলেন না কে কী করতে পারেন। ভুল সিদ্ধান্ত তো রয়েছেই। যা-ও বা নম্বর পেলেন, সেটা কয়েকটি ম্যাচে ভাল ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের জন্যে।
রিঙ্কু সিংহ (৮/১০): নিঃসন্দেহে এ বার কেকেআরের সেরা আবিষ্কার। প্লে-অফে উঠতে না পারলেও রিঙ্কু নজর কেড়ে নিয়েছেন। ঘরে ঘরে তাঁর নাম। স্টেডিয়ামে তিনি নামলেই চিৎকার। একটি ম্যাচে টানা পাঁচ ছক্কা মেরে জিতিয়েছেন। লখনউয়ের বিরুদ্ধে প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন। প্রতি ম্যাচেই বিপদের সময়ে উদ্ধার করেছেন দলকে।
রহমানুল্লা গুরবাজ (৪/১০): বিভিন্ন দেশের লিগে সাফল্যের সঙ্গে খেলে এলেও কেকেআরের হয়ে প্রায় ব্যর্থ। একটি-দু’টি ম্যাচে ভাল শুরু করা ছাড়া ওপেনিংয়ে আশা দেখাতে পারেননি। পাশাপাশি তাঁকে খেলিয়ে আবার বসিয়ে দেওয়ার জন্যে দলও দায়ী।
নারায়ণ জগদীশন (১/১০): উইকেটকিপারের জন্য তাঁকে বেশ কয়েকটি ম্যাচে খেলানো হয়েছিল। কিন্তু ব্যাট হাতে কিছুই করতে পারেননি। তাঁর জায়গায় অন্য কাউকে খেলালে লাভবান হতে পারত কেকেআর।
লিটন দাস (০/১০): মাত্র একটি ম্যাচেই সুযোগ পেয়েছিলেন। মোটে চার রান সংগ্রহে। তার উপর যে সহজ ক্যাচটি ছেড়েছিলেন তার মাশুল গুণতে হয়েছে দলকে। একটি ম্যাচে খেলে কোনও কাজেই লাগেননি।
মনদীপ সিংহ (০/১০): ৩টি ম্যাচ খেলে মোটে ১৪ রান করেছেন। আইপিএলে সবচেয়ে বেশি শূন্যের রেকর্ড যাঁর দখলে, তিনি তিনটি ম্যাচেই বা কী ভাবে সুযোগ পেলেন, সেটাই বড় প্রশ্ন।
জেসন রয় (৭/১০): শাকিব আল হাসানের বদলি হিসাবে নেওয়া হয়েছিল তাঁকে। দল নির্বাচনে এই একটাই ভাল সিদ্ধান্ত কেকেআরের। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই শুরুটা ভাল করে দিয়েছিলেন। ৮ ম্যাচে ২৮৫ রান রয়েছে। স্ট্রাইক রেট দেড়শোর উপরে।
ডেভিড উইজ়া (৩/১০): ব্যাট বা বল, কোনওটাই খারাপ করেন না। দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, তাঁকে সে ভাবে ব্যবহারই করল না কেকেআর। অজুহাত দেওয়া হয়েছে টিম কম্বিনেশনের। অলরাউন্ডার হলেও বল করানোই হয়নি সে ভাবে।
অনুকূল রায় (২/১০): ঘরোয়া ক্রিকেটেও ক’জন তাঁর নাম শুনেছেন সন্দেহ রয়েছে। শেষের দিকে প্রায় প্রতিটি ম্যাচে খেলেছেন। না ব্যাট, না বল, বলার মতো কোনও অবদান রাখেননি।
আন্দ্রে রাসেল (৫/১০): অতীতে বহু মরসুমে একার কাঁধে ম্যাচ বার করেছেন রাসেল। কিন্তু এখন আর তিনি আগের ছন্দে নেই। বয়স খেলায় প্রভাব ফেলেছে। বেশ কিছু ম্যাচে ব্যাট হাতে দলকে ভরসা দিয়েছেন। কিন্তু বল হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি।
বেঙ্কটেশ আয়ার (৫/১০): কেকেআরের দ্বিতীয় শতরানকারী। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে শতরান করেও হারতে হয়। বাকি কিছু ম্যাচেও রান পেয়েছেন। কিন্তু বড্ড বেশি বল খেলে ফেলেছেন এ বার। ধারাবাহিকতাও আগের মতো নেই।
সুযশ শর্মা (৬/১০): রিঙ্কুর পর কেকেআরের আর এক আবিষ্কার বলা যেতেই পারে। কিন্তু এখনও ঘষেমেজে নিজেকে তৈরি করা অনেকটাই বাকি। প্রথম দু’-একটি ম্যাচের পর রহস্য স্পিনারের খেতাব ধরে রাখতে পারেননি। মার খেয়েছেন বিপক্ষের হাতে। নিজের বোলিং নিয়ে আরও ভাবতে হবে।
কুলবন্ত খেজরোলিয়া (১/১০): তাঁকে দলে নেওয়া এবং প্রথম একাদশে খেলানো, দুটোই রহস্যে মোড়া। ঘরোয়া ক্রিকেটে সাফল্য থাকতে পারে। কিন্তু আইপিএল জগতে দূরদূরান্তে তাঁর কোনও সাফল্য নেই।
লকি ফার্গুসন (১/১০): নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধান পেসার। কেকেআর খেলাল মাত্র তিনটি ম্যাচে। উইকেট মোটে একটি। প্রতি ম্যাচেই প্রচুর রান গলিয়েছেন। ধারাবাহিকতার অভাবই প্রধান কারণ।
উমেশ যাদব (৩/১০): ভারতীয় টেস্ট দলে নিশ্চিত জায়গা তাঁর। কেন সে ভাবে ব্যবহার করা হল না সেটা দুর্বোধ্য। কেকেআরের ম্যানেজমেন্টের অদ্ভুতুড়ে চিন্তাভাবনার আর এক বলি। বোর্ডের কোনও নির্দেশ ছিল কিনা সেটাও স্পষ্ট নয়।
হর্ষিত রানা (৪/১০): বলে গতি রয়েছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ নেই। তাঁকেও ঘষেমেজে নিতে হবে। আগামী দিনে নিয়মিত তাঁর সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে সেই মতো তৈরি করতে পারলে আগামী দিনে তারকা হওয়ার মশলা রয়েছে।
টিম সাউদি (২/১০): লকির মতো একই কথা প্রযোজ্য তাঁর ক্ষেত্রেও। তাঁকেও সে ভাবে ব্যবহার করা হয়নি। দিনের পর দিন বসিয়ে রাখা হয়েছে রিজার্ভ বেঞ্চে।
শার্দূল ঠাকুর (৩/১০): একমাত্র আরসিবি ম্যাচে কোনও ম্যাচেই ব্যাট হাতে সাফল্য পাননি। বল তাঁকে দিয়ে করানো হয়নি। যাঁরা মার খেয়েছেন তাঁরা একের পর এক ওভার পেয়েছেন। বাদ থেকেছেন শার্দূল।
সুনীল নারাইন (৩/১০): এই নারাইন আগের ছায়ামাত্র। উইকেট পাওয়া ভুলেই গিয়েছিলেন। চেন্নাই ম্যাচ তাঁকে ছন্দে ফেরাল। লখনউ ম্যাচেও দু’টি উইকেট পেয়েছেন। তবে ওভার প্রতি রান দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর কৃপণ স্বভাব এখনও রয়েছে।
বৈভব অরোরা (৩/১০): তাঁকে হর্ষিতের মতো ঘষামাজা করতে হবে। বলের গতি রয়েছে। লাইন-লেংথে সমস্যা রয়েছে বিস্তর। কেকেআর তাঁকে রাখে কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন।
বরুণ চক্রবর্তী (৭/১০): বোলিং বিভাগে একমাত্র উজ্জ্বল মুখ। তাঁর বলের বৈচিত্র হারিয়ে গিয়েছে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠেছিল। ১৪ ম্যাচে ২০টি উইকেট নিয়ে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন। ওভারপ্রতি রানও বেশি দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy